পীরগঞ্জ (রংপুর) প্রতিনিধিঃ পীরগঞ্জ হানাদার মুক্ত দিবস পালিত হয়েছে। উপজেলা প্রশাসনের নীরব ভূমিকায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সূধীজনেরা। চোখে পড়েনি উপজেলা প্রশাসনের তৎপরতা। বিগত বছরগুলোতে সরকারি ও বেসরকারি ভাবে বিপুল উৎসাহ উদ্দিপনার মধ্যে দিয়ে দিবসটি পালিত হলেও এবারে ঘটেছে তার ব্যতিক্রম। হানাদার মুক্ত দিবস পালন করতে আসা
একাধিক ব্যক্তি প্রশাসনের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পীরগঞ্জ হানাদার মুক্ত দিবস পালন না করে তিনি স্বাধীনতা বিরোধীদের খুশি করেছেন। দিবসটি উপলক্ষে বিকেলে পীরগঞ্জ কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে পুষ্পমাল্য অর্পণ করেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) পীরগঞ্জ উপজেলা ও পৌর শাখার পক্ষে পৌর বিএনপির আহ্বায়ক সাইফুল আজাদ,বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি)’র উপজেলার সাধারন এ্যাড. আবু সুফিয়ান হিরু, সচেতন নাগরিক সমাজ পক্ষে প্রভাষক আশরাফুজ্জামান পলাশ, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা লেলিন তালুকদার, বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হালিম, সাংবাদিক আব্দুল্লাহীল বাকী বাবলু, জাগোবাহে ২৪ ডটকমের চেয়ারম্যান সাংবাদিক আকতারুজ্জামান রানা, সাংবাদিক করিম সরকার, মিফতাহুল ইসলাম প্রমূখ।
১৯৭১ সালের আজকের দিনই অর্থাৎ ৭ ডিসেম্বর,পীরগঞ্জ হানাদার মুক্ত হয়। এই দিনে পীরগঞ্জ উপজেলার ইতিহাসে উজ্জল হয়ে আছে এই দিনটি। মূলত পীরগঞ্জ থানা শত্রু মুক্ত হয় ৭১ এর ৬ ডিসেম্বর গভীর রাতে। শুক্লপক্ষের অন্ধকার যবনিকা কেটে গিয়ে সূর্যোদয়ের পর দ্রুতগতিতে এই সংবাদ ছড়িয়ে পড়ে চারিদিকে। পরদিন ৭ ডিসেম্বর হাজার হাজার স্বাধীনতাকামী নারী-পুরুষ দীর্ঘদিনের কষ্ট আর ক্লেদ ভূলে গিয়ে
বিজয় মিছিলে অংশ নেয়। তাই ৭ ডিসেম্বর পীরগঞ্জ থানা শত্রু মুক্ত হিসেবে পরিগনিত হয়। প্রত্যক্ষদর্শী প্রবীণদের মতে পূর্ব হতে পাক সেনাদের আস্তানা ছিল থানা সদরে। ৬ ডিসেম্বর বিকেলে মিত্র বাহিনীর জলপাই রংএর ট্যাং বহর ছুটে আসে দিনাজপুরের হিলি সীমান্ত পার হয়ে। পীরগঞ্জ থানার পশ্চিমাঞ্চল এর খালাশপীর,কাদিরাবাদ ও ত্রি-মোহনী ব্রীজের আশপাশে অবস্থান নিয়ে সূর্যাস্তের পূর্বেই এলো পাথাড়ী গোলা বর্ষণ শুরু করে পীরগঞ্জ থানা সদরে অবস্থানরত পাক সেনাদের আস্থানার উপর। রাত গভীর হলে এক সময় ছত্রভঙ্গ হয়ে পাক সেনারা পিছু হটতে শুরু করে। দ্বিধাবিভক্ত হয়ে পাক সেনাদের একটি অংশ রংপুর-ঢাকা মহা সড়কের বড়দগাহ্ধসঢ়; নামক স্থানে মিত্র বাহিনীর অপর অংশের কাছে বাধাপ্রাপ্ত হয়।
অপর অংশটি গাড়ি বহর নিয়ে মহাসড়ক ধরে বগুড়া সেনা নিবাসের উদ্দেশ্য পালিয়ে যায়। বিচ্ছিন্ন একটি অংশ জীবনের ভয়ে অস্ত্র ও পোষাক খুলে পায়ে হেঁটে গ্রামীন পথ ধরে পালিয়ে যায় মিঠিপুর এলাকায়। মাদারগঞ্জের কাছাকাছি গিয়ে এরা জনগনের হাতে ধরা পড়ে নাজেহাল হয়।
এদিকে ধীর গতিতে এগিয়ে আসে মিত্র বাহিনীর সাঁজোয়া বাহিনী। এক পর্যায়ে গোলার আওয়াজ থেমে যায়। গভীর রাতেই জলপাই রং এর ট্যাংক বহর নিয়ে মিত্র বাহিনী ও মুক্তিবাহিনীর সার্থক জোয়ানরা
পীরগঞ্জ থানা সদরে প্রবেশ করে বিজয়ের বেশে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা খাদিজা বেগম কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ বিষয়ে আমার কিছু জানা নেই।