বৃহস্পতিবার, ৩১শে আশ্বিন, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ,১৬ই অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

পীরগঞ্জে ছাতুয়া মাদ্রাসা সুপারের বিরুদ্ধে অনিয়ম, দুর্নীতির অভিযোগ

মিফতাহুল ইসলাম, পীরগঞ্জ(রংপুর): রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার ছাতুয়া দ্বি-মুখী দাখিল মাদ্রাসার সুপারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। সেই সাথে মাদ্রাসাটির হতাশাজনক শিক্ষার্থীর সংখ্যায় এলাকাবাসীও ক্ষোভ প্রকাশ করছেন।

অভিযোগে জানা গেছে, মাদ্রাসাটির সুপার একেএম শহিদুল ইসলামের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে অনিয়ম, দুর্নীতি ও অর্থ তছরুপের অভিযোগ রয়েছে। এ ছাড়া সম্প্রতি কোনো টেন্ডার ছাড়াই মাদ্রাসাটির পুরাতন ভবন বিক্রি করে মোটা অংকের টাকা পকেটস্থ করেছেন। মাদ্রাসার জমিতে অবৈধভাবে ঘরবাড়ি নির্মাণের সুযোগ ও পুকুর লিজ প্রদান করার অর্থ মাদ্রাসায় না দিয়ে পকেটস্থ করেছেন। এছাড়া অন্যের জমি বলপূর্বক দখল, শিক্ষক নিয়োগে সীমাহীন দুর্নীতিরও অভিযোগ করা হয়েছে।

ছাতুয়া দ্বিমুখী দাখিল মাদ্রাসায় জমিদাতা ছহির উদ্দিন প্রধান আক্ষেপ করে বলেন, সুপার শহিদুল ইসলাম মাদ্রাসাটাকে শেষ করে দিয়েছে। নিয়োগ বাণিজ্যসহ নানা অনিয়ম, দুর্নীতি ও অর্থ আত্মসাতের সুনির্দিষ্ট অভিযোগ সম্পর্কে বিভিন্ন শিক্ষা দফতরে দিয়েও কোন কাজ হয়নি।

অভিভাবক আশরাফুল ইসলাম জানান, ছাতুয়া দ্বিমুখী দাখিল মাদ্রাসার শিক্ষা কার্যক্রম একেবারই নাজুক হওয়ায় ছাত্রছাত্রী নেই বললেই চলে। বিশেষ করে এবতেদায়ী শাখা প্রায় শিক্ষার্থী শূন্য। ফলে মাদ্রাসার মান বাঁচাতে আশপাশের স্কুল, মাদ্রাসা থেকে ভাড়াটিয়া ছাত্রছাত্রী দিয়ে ৫ম শ্রেণির সমাপনী ও দাখিল পরীক্ষা সম্পন্ন করা হয়। শুধু তাই নয়, এসএসসি পাস করা শিক্ষার্থী দিয়ে ৫ম শ্রেণির সমাপনী পরীক্ষা এবং এইচএসসি পাস করা শিক্ষার্থী দিয়ে দাখিল পরীক্ষা সম্পন্ন করার তথ্য (প্রমাণ সংরক্ষিত) অহরহ। এসব ডামি পরীক্ষার্থীর মধ্যে মাদ্রাসার শিক্ষক, কর্মচারীর ছেলে-মেয়ে ও আত্বীয়-স্বজনের সন্তান রয়েছে।

সোমবার সরেজমিনে ওই মাদ্রাসায় গিয়ে দেখা যায়, ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে উপস্থিত ৫ জন শিক্ষার্থী, ৭ম শ্রেণিতে ৭ জন, ৮ম শ্রেণিতে ৬ জন, ৯ম শ্রেণিতে ৭ জন ও ১০ম শ্রেণিতে ৪ জন শিক্ষার্থী উপস্থিত রয়েছেন। উক্ত মাদ্রাসায় ৬ষ্ঠ হতে ১০ম শ্রেণী পর্যন্ত শিক্ষার্থীর সংখ্যা ২২০ জন দাবি সুপার সহিদুল ইসলামের। এবতেদায়ী শাখায় ৫০ জন শিক্ষার্থী থাকার কথা জানালেও উপস্থিতি মাত্র ৪ জন। উক্ত মাদ্রাসায় মোট শিক্ষক সংখ্যা- ১৬ জন, কর্মচারি সংখ্যা ৫ জন।

ছাতুয়া দ্বি-মুখী দাখিল মাদ্রাসার সুপার একেএম শহিদুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, আমার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ করা হয়েছে তা সঠিক নয়।

এ ব্যাপারে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোহাম্মদ মাহমুদ হোসেন গণমাধ্যমকে বলেন, শিক্ষালয়ে শিক্ষার্থীই প্রাণ। এমনটা হয়ে থাকলে তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা নেয়া হবে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইকবাল হাসান বলেন, ছাতুয়া দ্বিমুখী দাখিল মাদ্রাসার সুপারের বিরুদ্ধে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়ে তদন্তের জন্য উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তাকে দায়িত্ব প্রদান করা হয়েছে।

অবশ্য মহিলা বিষযক কর্মকর্তা তদন্তের দায়িত্বে পাবার পরেও নাকে তেল দিয়ে ঘুমাচ্ছেন।

Facebook
Twitter
LinkedIn
WhatsApp
Tumblr
Telegram

, , বিভাগের জনপ্রিয় সংবাদ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *