
নুরুল আমিন, ভূরুঙ্গামারী (কুড়িগ্রাম): কুড়িগ্রাম জেলার ভূরুঙ্গামারী উপজেলায় কুড়িগ্রাম – সোনাহাট আঞ্চলিক মহাসড়ক সহ উপজেলার সব সড়কে বেপরোয়া গতিতে চলছে অবৈধ ট্রাক্টর, ট্রলি, নছিমন, করিমন সহ তিন চাকার ভটভটি। ভোর হতে শুরু করে মধ্যরাত পর্যন্ত অবাদে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে অবৈধ যান গুলো। চালকদের নেই কোনো প্রশিক্ষণ। লুকিং গ্লাস ছাড়াই চলছে এসব যানবাহন। অনেক ক্ষেত্রে মোবাইল ফোন কানে ধরে যানবাহন চালিয়ে যাচ্ছে।ফলে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সড়কে চলাচল করতে হচ্ছে সাধারণ পথচারীদের।
এ ছাড়া এসব অবৈধ ট্রাক্টর ও ভটভটির বিকট শব্দ ও খোলামেলাভাবে বালু পরিবহনের ফলে স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়ছে শিশু সহ বৃদ্ধরা। ট্রাক্টরসহ এসব অবৈধ যান চলাচল বন্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানান স্থানীয় জনসাধারণ সহ এলাকার বাসিন্দারা।
সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার গ্রামীণ সড়ক থেকে শুরু করে আঞ্চলিক মহাসড়কে দাপটের সঙ্গে চলছে বালুবাহী ও ইটভাটার মাটি বহনকারী ট্রাক্টর। এসব মাটি নিয়ে যাওয়া হচ্ছে ইটভাটা ও খাল-পুকুর ভরাটের জন্য। এতে সড়কগুলোতে চলাচল করা ছোট যানবাহন, পথচারী ও স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থীরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন প্রতিনিয়ত। খোলামেলাভাবে অবৈধ ট্রাক্টরগুলো বালু পরিবহনের ফলে অসংখ্য ধূলিকণা ভাসছে বাতাসে। যার কারণে বায়ু দূষণ সহ শ্বাসকষ্ট জনিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে মানুষ। এ ছাড়া রাতের বেলায় ট্রাক্টরের বিকট শব্দে ঠিকমতো লেখাপড়া ও ঘুমাতে পারছেন না শিক্ষার্থীসহ সড়কের দুই ধারে বসবাসকারীরা।
স্থানীয়দের অভিযোগ, ট্রাক্টরে করে বালু ও মাটি নিয়ে যাচ্ছেন ইটভাটার মালিক ও ব্যবসায়ীরা। এতে রাস্তাঘাট নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। সড়কে চলাচল করতে হচ্ছে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে। তাঁরা বলেন, এসব অবৈধ ট্রাক্টর রাস্তাঘাটসহ পরিবেশের মারাত্মক ক্ষতি করলেও তা বন্ধে কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না স্থানীয় প্রশাসন।
উপজেলা সদরের দেওয়ানের খামার গ্রামের মফিজুর ইসলাম, আফছার উদ্দিন ও নিজামুল হক জানান, অনেকেই কর্তৃপক্ষের অনুমতি না নিয়ে নিজেদের ইচ্ছেমাফিক ফসলি জমির মাটি বিক্রি করছেন। অপরিকল্পিতভাবে পুকুর খনন ও কৃষি কৃষিজমি ভরাট করায় পানি চলাচলের পথ নষ্ট হওয়ায় পাশের জমিগুলো চাষের যোগ্যতা হারিয়ে ফেলছে। দিন রাত ট্রাক্টর ও ট্রলি দিয়ে মাটি পরিবহনের কারণে নষ্ট হওয়া সড়ক দিয়ে আমাদেরকেই বছরের পর বছর চরম দুর্ভোগের মধ্যে চলাচল করতে হচ্ছে। এমন অবৈধ কর্মকাণ্ড বন্ধ করতে দ্রুতই প্রশাসনের সু-দৃষ্টি ও হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
সোনাহাট ডিগ্রি কলেজের জেষ্ঠ প্রভাষক মোখলেছুর রহমান জানান, ট্রাক্টরে খোলামেলা ভাবে বালু পরিবহনের ফলে বাতাসে সেই বালুর কণা উড়ে এসে আমার চোখে ঢুকে। চোখে অসহ্য যন্ত্রণা হলে চক্ষু বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হয়েছে।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার গোলাম ফেরদৌস বলেন, এসব অবৈধ যানবাহন বন্ধে খুব দ্রুত অভিযান পরিচালনা করা হবে।