সোমবার, ২৩শে আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ,৭ই জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

নির্মম হত্যাকাণ্ডে স্তব্ধ সরাইল

মসজিদ থেকে ৯ বছরের শিশুর লাশ উদ্ধার

পারভেজ আলম আদেল, স্টাফ রিপোর্টার: ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলায় নিখোঁজের একদিন পর উদ্ধার হলো ৯ বছর বয়সী এক শিশুকন্যার লাশ। নিহতের নাম মোসাম্মৎ ময়না আক্তার।

সে উপজেলার শাহবাজপুর ইউনিয়নের ছন্দুমিয়া পাড়া এলাকার প্রবাসী আব্দুর রাজ্জাক মিয়ার মেয়ে এবং হাবলিপাড়া মাদ্রাসার ছাত্রী ছিল।

রবিবার সকালে উপজেলার হাবলিপাড়া জামে মসজিদের দ্বিতীয় তলার একটি কক্ষ থেকে পুলিশ তার মরদেহ উদ্ধার করে। এলাকাবাসী ও পরিবার ধারণা করছেন, ময়নাকে কেউ বা কারা ধর্ষণের পর নির্মমভাবে হত্যা করে ফেলে রেখে গেছে।

নিহতের মা মোসাম্মৎ লিফা আক্তার জানান, শনিবার বিকেল ৩টার দিকে ময়না নিখোঁজ হয়। সন্ধ্যার পর থেকেই আত্মীয়-স্বজন ও এলাকাবাসী তাকে খুঁজতে থাকেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট ও মাইকিংয়ের মাধ্যমে তার সন্ধান চাওয়া হয়। অবশেষে রোববার সকালে মসজিদে আরবি পড়তে যাওয়া কয়েকজন শিশু দ্বিতীয় তলায় একটি কক্ষে ময়নার নিথর দেহ দেখতে পায়। মুহূর্তেই শোক আর ক্ষোভে স্তব্ধ হয়ে পড়ে পুরো এলাকা।

মসজিদের ইমাম হামিদুর রহমান বলেন, “চা খেয়ে এসে নিচতলায় শিক্ষার্থীদের জন্য অপেক্ষা করছিলাম। হঠাৎ এক শিশু এসে জানায়, উপরের কক্ষে একটি মেয়ে পড়ে আছে। খবর দিলে এলাকাবাসী এসে ঘটনাটি নিশ্চিত হয়। মসজিদের দ্বিতীয় তলায় সালাউদ্দিন নামে একজন শিক্ষক পড়ান।”

ঘটনার খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছায় সরাইল থানা পুলিশ। লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়।

সরাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোরশেদুল আলম চৌধুরী বলেন, “শিশুটির শরীরে একাধিক স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। প্রাথমিকভাবে এটি একটি নির্মম হত্যাকাণ্ড বলেই মনে হচ্ছে। ময়নাতদন্ত রিপোর্টের ভিত্তিতে বিস্তারিত জানা যাবে। আমরা আলামত সংগ্রহ করছি এবং তদন্ত শুরু করেছি।”

ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন সরাইল সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার তপন সরকারসহ পুলিশের একটি বিশেষ টিম। তিনি জানান, “শনিবার রাতে শিশুটির নিখোঁজ হওয়ার জিডি করা হয়। আমাদের একটি টিম রাতেই খোঁজ করে, কিন্তু পাওয়া যায়নি। সকালে মসজিদের দ্বিতীয় তলায় লাশ পড়ে থাকার খবর পেয়ে আমরা সেখানে যাই এবং আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করি।”

এ ঘটনায় প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য মসজিদের ইমাম ও মোয়াজ্জেমকে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।

শিশু ময়নার মৃত্যুতে পুরো সরাইলজুড়ে নেমে এসেছে গভীর শোক ও ক্ষোভ। এই নিষ্ঠুর হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

Facebook
Twitter
LinkedIn
WhatsApp
Tumblr
Telegram

, , বিভাগের জনপ্রিয় সংবাদ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *