রুহুল আমিন বাবু, বাগেরহাট : বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে পানি উন্নয়ন বোর্ডের একটি স্লুইজ গেট বন্ধ রাখায় হাজার হাজার বিঘা জমির আমন চাষ বিঘ্নত হচ্ছে।
বাগেরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের ৩৫/১ পেল্ডারের খাউলিয়া ইউনিয়ন অংশের পূর্ব-চিপাবারইখালীর স্লুইজ গেটটি বন্ধ রাখায় এ দুর্ভোগে পড়েছে কৃষকরা। পানি উত্তোলন ও বন্ধ করা নিয়ে যে কোন সময় রক্তক্ষয়ী সংর্ঘষে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
কৃষক দুলাল, মনির, শাজাহান, মোশারেফ, মহারাজ, ফারুক জানান, আমরা পানির অভাবে আমনের বিজতলা তৈরী করতে পারিনি। স্লুইজ গেটটি বন্ধ রাখলে পর্যাপ্ত পানির অভাবে আমন চাষ বিঘ্নিত হবে। আমরা স্লুইজ গেটটি খুলে দিলেই প্রতিপক্ষ বিলে মাছ ধরার জন্য গেট থেকে পানি ওঠা বন্ধ করে দেয়। এ নিয়ে যে কোনো সময় রক্তক্ষয়ী সংর্ঘষে আশঙ্কা করছি আমরা।
কৃষকরা আরো জানান, ইউনিয়নের ৩নং, ৪নং, ৬নং ও ৯নং ওয়ার্ডে হাজার হাজার বিঘা জমি চাষাবাদ এ স্লুইজ গেট দিয়ে ওঠা পানির উপরই নির্ভর করে। তাই আমন চাষ করতে হলে যে কোন মূল্যে গেট খুলে পানি ওঠার ব্যবস্থা করতে হবে।
ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মাসুম হাওলাদার জানান, পানির অভাবে বিজতলা পুড়ে যাচ্ছে। কৃষকরা এই ভরা মৌসুমে চাষাবাদ করতে পারছেনা। কৃষকরা বারবার স্লুইজ গেট খুলে দিচ্ছে। প্রতিপক্ষ আবার তা বন্ধ করে দিচ্ছে।
তিনি আরো জানান, স্লুইজ গেট খোলা বন্ধ নিয়ে যে কোন সময় রক্তক্ষয়ী সংর্ঘষে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডে মোরেলগঞ্জ-শরণখোলা অংশের ৩৫/১ পোল্ডার এ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মোঃ আবুল কাশেম বলেন, খালের দু’পারের বাসিন্দাদের সমন্বয় করে পানি ওঠা নামা করার ব্যবস্থা করতে বলা হয়েছে কিন্তু আমার কথা কেই শুনছেনা। পরিস্থিতি সংর্ঘষে রুপ নিতে পারে। ব্যাপারটি আমি পানি উন্নয়ন বোর্ডের উর্ধতন কর্মকর্তাদের জানিয়েছি।
খাউলিয়া ইউনিয়ন মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ডের সভাপতি মোঃ মাহফুজ হাওলাদার জানান, আমরা কৃষকদের দুরবস্থা দেখে রবিবার (২৮ জুলাই) সকালে গেট খুলে দিয়েছি। কিন্তু পরক্ষনেই স্থানীয় মজনু হাওলাদার এসে কৃষকদের সাথে দুঃব্যবহার করেছে এবং আবারও গেট বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি দিয়ে কৃষকদের তারিয়ে দিয়েছে। এ ব্যাপারে মজনু হাওলাদারের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি।
৬নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মোঃ নাছির হাওলাদার জানান, ৬নং ওয়ার্ডের বিস্তীর্ণ এলাকা নিচু তাই পানি পানি উঠলে বিজতলা ডুবে যায়। তাই স্থানীয়রা গেট বন্ধ করে দেয়। তবে এলাকাবাসিকে পকেট গেট বন্ধ করে মুল গেট খুলে দিতে বলা হয়েছে।
মোরেলগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ সাইফুল ইসলাম বলেন, এখন ভরা আমন মৌসুম তাই কৃষকদের বিজতলায় পানির প্রয়োজন। তবে স্লুইজ গেট তদারকির দ্বায়িত্ব পানি উন্নয়ন বোর্ডের স্থানীয় কমিটির। সেই কমিটিতেও আমাদের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা নেই। তবে কৃষক যাতে পর্যাপ্ত পানি পায় সে ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
মোরেলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম তারেক সুলতান বলেন, এ ব্যাপারে কোন লিখিত অভিযোগ পায়নি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।