
রাজশাহী ব্যুরো: আবাসন ব্যবসার নামে প্রতারণা করে কোটিপতি বনে যাওয়া গ্রীণ প্লাজা রিয়েল অ্যাস্টেট কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মোস্তাফিজুর রহমানের মাদক সেবনের একটি ভিডিও নিয়ে রাজশাহীতে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে। ভিডিওটি যায়যায়কালের হাতে এসে পৌঁছেছে।
অভিযোগ রয়েছে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন দমনে তৎকালীন ক্ষমতাসীন নেতাদের অর্থের যোগান দিয়েছেন এই মোস্তাফিজুর রহমান।
মাদক সেবনের ভিডিওতে দেখা যায়, মোস্তাফিজুর রহমানসহ আরো দুইজন ব্যক্তি একটি কক্ষে একসাথে মাদক আড্ডায় মেতে উঠেছেন। বেশ কিছুক্ষণ ধরে চলে তাদের এমন মাদক সেবনের কর্মকাণ্ড। ভিডিওটিতে মোস্তাফিজুর রহমান কক্ষে থাকা সিসি ক্যামেরা দেখিয়ে বাকি দুইজনকে সতর্ক করতে দেখা যায়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ব্যক্তি বলেন, মোস্তাফিজুর রহমান নিয়মিত মাদক সেবনের সাথে জড়িত। প্রায় সময়ই রাতে মাদকের আড্ডা বসান। এতে যোগ দেন বহিরাগতরাও। তাদের এমন কর্মকাণ্ড চললেও রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় ভয়ে এতদিন কেউ মুখ খুলতে পারে না বলে অভিযোগ তাদের।
প্রতিষ্ঠিত একজন ব্যবসায়ীর প্রকাশ্যে এমন মাদকসেবনের এমন চিত্র রাজশাহীতে ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দিয়েছে।
চলতি বছরের ২৬ শে মার্চ আবাসন ব্যবসার নামে প্রতারণার অভিযোগে প্রতারিত গ্রাহকদের দায়ের করা মামলায় নগরীর বোয়ালিয়া থানায় গ্রেপ্তার হয়েছিলেন মুস্তাফিজুর রহমান। এছাড়াও বিভিন্ন সময় নানা বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের কারণে একাধিকবার গণমাধ্যমের শিরোনাম হয়েছেন তিনি।
বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, একযুগ আগে রাজশাহীর একটি বেসরকারি কোম্পানির অফিস সহকারী(পিওন) পদে চাকরি করতেন এই মোস্তাফিজুর রহমান। পড়াশোনার খরচ জোগাতে হিমশিম খাওয়া মোস্তাফিজুর রহমান এক ব্যাংক কর্মকর্তার বাড়িতে আশ্রয় নেন। এরপর তাদের সাথে প্রতারণা করে ৯০ লাখ টাকা এবং ৩ কাঠার একটি প্লট আবাসন ব্যবসার নামে হাতিয়ে নেন। এরপর থেকে মোস্তাফিজুর রহমানের উত্থান শুরু। একের পর এক প্রতারণা করে মাত্র পাঁচ থেকে সাত বছরের মাথায় ফুটপাত থেকে উঠে আসা প্রতারক মোস্তাফিজ হয়ে যান কয়েক কোটি টাকার মালিক। চড়েন বিলাসবহুল গাড়িতে।
এছাড়াও রাজশাহী চেম্বার অব কমার্সের মতো প্রতিষ্ঠানে পরিচালকের পদও বাগিয়ে নিয়েছিলেন এই মোস্তাফিজুর রহমান। নানা অপকর্মের মূল হোতা মোস্তাফিজুর রহমানের বেপরোয়া জীবনযাপনে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন রাজশাহীর সুশীল সমাজ। দ্রুত মুস্তাফিজুর রহমানকে আইনের আওতায় নিয়ে আসার জোর দাবি জানান তারা।
ভিডিওর সত্যতা জানতে মোস্তাফিজুর রহমানকে মুঠোফোনে একাধিক বার কল দিলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।