মো. সাইফুল ইসলাম, নীলফামারী: নীলফামারীর সদর উপজেলার কচুকাটা ইউনিয়নের ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া চারালকাটা নদীর তীর থেকে অবৈধভাবে বালু কেটে বিক্রির অভিযোগ উঠেছে একটি চক্রের বিরুদ্ধে।
এতে হুমকির মুখে পড়েছে আশপাশের আবাদি জমি এবং মাটিবাহী ড্রাম ট্রাকে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে রাস্তা-ঘাট। ভেঙে পড়ছে নদীর ওপর নির্মিত সেতুর সংযোগ সড়কও।
গত ৫ আগস্ট হাসিনার সরকার পতনের পর বিএনপি-জামায়াতের নামে ওই বালু বিক্রির চক্রের কাছে চাঁদা আদায় করেছে দুর্বৃত্তরা। এর প্রতিবাদ জানিয়ে চাঁদা নেওয়া দুর্বৃত্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা ও নদীর বালু বিক্রি বন্ধ করে সেতুর সংযোগ দ্রুত সংস্কারের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মীরা।
স্থানীয় বিএনপির কর্মী আবু হানিফ বলেন, আসলে কে বা কারা আমাদের দলের নাম ভাঙিয়ে অপকর্ম করছে তার দায়ভার দল কখনো নিবে না। আর যাদের নামে অভিযোগ এসেছে তারা আমাদের দলের কেউ নন। তারা যদি বিএনপি দাবি করে খারাপ কাজ করে এর দায়ভার দল নিবে না। আমাদের জেলা ও উপজেলা কমিটি আছে তাদের সাথে পরামর্শ করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জামায়াতের কচুকাটা ইউনিয়নের সেক্রেটারি মানিক ইসলাম বলেন, আমাদের এখানে অবৈধ বালু নিয়ে যাওয়ার কারণে আমাদের বাজিতপাড়া ঘাটেরপাড়ের ব্রিজের মোকাম ভেঙে গেছে। এ জন্য আমরা এলাকাবাসী রাস্তা ও ব্রিজ রক্ষার জন্য দাঁড়িয়েছি।
তিনি আরও বলেন, ওই চক্রের সাথে জড়িত দুর্বৃত্তরা বিভিন্নভাবে হুমকি-ধমকি দিচ্ছে। এ বিষয়ে প্রশাসনের কাছে বিচার দাবি করেন তিনি।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারী উদার ইসলাম বলেন, ঘাটের পাড় এলাকায় এরা অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করছে। যার কারণে এই জায়গার কিছু অংশ ভেঙে গেছে। ও বাকি অংশ কয়েকদিনের মধ্যে পুরোটায় ভেঙে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এখানে যাদের নাম আসছে তারা সুবিধাবাদী দলের লোক বলে জানান। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কে জানানো হয়েছে। তিনি অতি দ্রুত বালু উত্তোলন বন্ধ করার আশ্বাস দিয়েছেন।
অভিযুক্ত লিমন ইসলাম বলেন, কিছু নামধারী জামায়াত-বিএনপির নেতা চাঁদা দাবি করতেছে। আমি শৈশব থেকে বিএনপি করি। নীলফামারীর এমন কোনো লিডার নেই, যারা আমাকে চিনে না। কলেজের সিনিয়র আহ্ববায়ক এবং পৌর আহ্ববায়ক ছিলেন বলে দাবিও করেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, গত ১৬ বছর থেকে দল ক্ষমতায় নেই তাই ব্যবসায় মনোযোগ দিয়েছি। ঘাটপাড়া থেকে বালু কিনছি সেখানে অনেক বিএনপির পরিচয় দিয়ে টাকা চায়। আমি বলছি আমি বিএনপি করি আপনাদের কেন টাকা দিবো। এ নিয়ে তাদের সাথে আমার বাক-বিতণ্ডা হয়েছে। আমি আর ওখান থেকে বালু নিব না।
জামায়াতের ইউনিয়ন পরিষদের আমির আব্দুল হাই বলেন, লিমন আগে দলে সক্রিয় ছিল। বর্তমানে দল থেকে বহিষ্কৃত আছে। তার বিরুদ্ধে যে অভিযোগগুলো পাওয়া গেছে তা খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বলেন, বিষয়টি ছাত্রদের মাধ্যমে জেনেছি। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান তিনি।