
বিশেষ প্রতিনিধি, সিরাজগঞ্জ: সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জে বিভিন্ন সহায়তার ভাতা কার্ড করে দেওয়ার নামে এক ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। এ বিষয়ে প্রতিকার চেয়ে ভুক্তভোগীরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বরাবরে একটি লিখিত অভিযোগ দাখিল করেছেন।
লিখিত অভিযোগে বলা হয়, বয়স্ক,বিধবা, প্রতিবন্ধী, টিসিবি, ভিজিডি ও ভিজিএফসহ বিভিন্ন সহায়তার নামে নগদ অর্থ হাতিয়ে নিতেন উপজেলার চান্দাইকোনা ইউনিয়ন পরিষদের ১,২,৩ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সংরক্ষিত আসনের মহিলা সদস্য নার্গিস বেগম। টাকা নেওয়ার পর কোনো প্রকার সহায়তা দেওয়া হয়নি পরিবারগুলোকে। এর আগেও বিভিন্ন সময়ে সরকারি কার্যক্রমে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ারও অভিযোগ রয়েছে ওই ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে।
দেবরাজপুর গ্রামের আবু বক্কার সিদ্দিক নামে এক বাসিন্দা বলেন, ইউপি সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে নার্গিস বেগম বিভিন্ন সময়ে গরিব অসহায় মানুষদের বিভিন্ন কার্ড দেওয়ার কথা বলে অর্থ আত্মসাত করেছেন। ভুক্তভোগীরা জানায়, মাতৃত্বভাতা, বয়স্কভাতা, বিধবাভাতা, ভিজিডি কার্ড ছাড়াও নানা সুবিধা পাইয়ে দেয়ার আশায় টাকা দিয়েছেন। কিন্তু বছরের পর বছর ধরে এসব সুবিধার কোনো কিছু কেউ পাননি, ফেরত পাননি টাকাও।
সরেজমিন গিয়ে জানা গেছে, বয়স্ক, বিধবা, প্রতিবন্ধী, মাতৃত্বকালীন ভাতা ও টিসিবি কার্ড করে দেওয়ার কথা বলে অসহায়, দরিদ্র পরিবারের অর্ধশতাধিক মানুষের কাছে তিন থেকে ছয় হাজার করে টাকা নিয়েছেন ঐ ইউপি সদস্য। ভাতা ও কার্ড না করে দিয়ে ওই অর্থ আত্মসাৎ করেছেন। টাকা চাইতে গেলে নানা তালবাহানা করেন তিনি। এমনকি ভয়ভীতি ও হুমকি দিচ্ছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে।
ভুক্তভোগী সালমা বেগম (৩৫) জানান, টিসিবির কার্ড করে দেওয়ার কথা বলে অফিস খরচ বাবদ তার কাছ থেকে এক হাজার টাকা নেন ইউপি সদস্য নার্গিস বেগম। মাস পার হলেও কার্ড করে দেননি। টাকা ফেরত চাইতে গেলে নানাভাবে হুমকি দেন। একই অভিযোগ করেছেন ওই ওয়ার্ডের রতনা বেগম ও জাহিদুল ইসলাম।
রুবিয়া বেগম নামে আরেক ভুক্তভোগী জানান, ভিজিডি কার্ড দেওয়ার নামে তার কাছ থেকে দফায় দফায় মোট ১০ হাজার টাকা নিলেও এখনো পর্যন্ত কোন কার্ড করে দেয় নাই। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগে মোট ৪০ জন ভুক্তভোগী যাদের কাছ থেকে সর্বনিম্ন ৫০০ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ১০ হাজার টাকা নেওয়ার বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে। ভুক্তভোগীদের দাবি অভিযুক্ত ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে সঠিক তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা।
অভিযুক্ত ইউপি সদস্য নার্গিস বেগম এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, পূর্ব বিরোধের জের ধরে তার বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ করা হয়েছে।
ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল হান্নান খান অনুপস্থিত থাকায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
ইউএনও মোহাম্মদ নাহিদ হাসান খান বলেন, ‘ইউপি সদস্যর বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে। প্রতিবেদন হাতে পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’