শনিবার, ১লা চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ,১৫ই মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

রায়গঞ্জে ১০ গ্রামের মানুষের ভরসা একটি নৌকা

Exif_JPEG_420

বিশেষ সংবাদদাতা, সিরাজগঞ্জ: সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জে ব্রহ্মগাছার চক মনোহন নাড়ী এলাকার ইছামতী নদীটি পাড় হয়ে প্রতিদিন যাতায়াত করেন অন্তত প্রায় ১০ গ্রামের হাজার হাজার লোকজন।

তাদের পারাপার করছে বর্ষায় একটিমাত্র খেয়া নৌকা আর শুস্ক মৌশুমে বাঁশের তৈরি সাকো। বৈরী আবহাওয়া কিংবা মাঝি অসুস্থ থাকলে বিপাকে পড়েন এ অঞ্চলের মানুষ। এলাকাবাসীর অভিযোগ, যুগ যুগ ধরে চলে আসা এ মানুষগুলোর দুর্ভোগে পাশে দাঁড়াননি কেউ। এ অবস্থায় দ্রুততম সময়ের মধ্যে নদীতে একটি সেতু নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন তারা।

উপজেলার ব্রহ্মগাছা ইউনিয়নের চক মহোনপুর এলাকা দিয়ে বয়ে চলেছে ইছামতী নদী। গ্রীষ্ম থেকে বসন্ত পুরো ১২ মাস এই নদীতে পানি থাকে। নদীটির পশ্চিম পাড়ে রয়েছে ব্রহ্মগাছা ইউনিয়ন ও রায়গঞ্জ উপজেলা সদর আর পূর্ব পাড়ে রয়েছে জেলা সদর উপজেলার বাকবাটি ইউনিয়ন।

দিনে হাজার হাজার মানুষকে নিত্যপ্রয়োজনীয় কাজে পাড় হতে হয় এই নদী।

এই এলাকার কৃষক ও শিক্ষার্থীরা নানা দূর্যোগ পেরিয়ে যাতায়াত করেন। নদীটি পাড় হওয়ার জন্য রয়েছে একটি মাত্র খেয়া নৌকা। সকাল ৮টা থেকে চলাচল শুরু হয়। চলে রাত ৯টা পর্যন্ত। অনেক সময় পারাপারের একমাত্র নৌকাটি ডুবে গিয়ে ভোগান্তির কারণ হচ্ছে মানুষের।

সরেজমিন দেখা যায়, নদীটি দিয়ে একটিমাত্র নৌকায় পাড় হচ্ছেন লোকজন। নৌকাটিতে ১৫ জনের বেশি উঠলেই ডুবুডুবু অবস্থা। তাই অতিরিক্ত ব্যক্তিদের নৌকা থেকে নামিয়ে দিয়ে অপর পাড়ের উদ্দেশ্যে ছুটছেন মাঝি। বাকিরা পারাপার হতে ওপার থেকে নৌকা আসা পর্যন্ত অপেক্ষা করছেন।

চক মোহন এলাকার বাসিন্দা ইয়ামিন শেখ। উচ্চ মাধ্যমিকের গণ্ডি পেরিয়ে তিনি এখন কলেজে পড়াশোনা করছেন। পড়াশোনার জন্য নদীটি পাড় হতে যে বিড়ম্বনা পোহাতে হয় তাকে, সেই তিক্ত অভিজ্ঞতার কথাগুলো বর্ণনা করছিলেন।

তিনি বলেন, ‘আমাদর পূর্বপাড়ের যে শিক্ষার্থীরা আছে তারা সবাই পড়াশোনার তাগিদে নদীর ওই পাড়ে যায়। মাঝেমধ্যে নদীতে যখন বেশি পানি থাকে, তখন ঢেউয়ের কারণে নৌকা ডুবে অনেকের বই-খাতা ভিজে যায়।

স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুস সালাম বলেন, ‘আমাদের পারাপারের জন্য মাত্র একটি নৌকা। যখন নৌকার মাঝি অসুস্থ থাকে কিংবা বাড়িতে চলে যায়, তখন আমাদের ভোগান্তির শেষ থাকে না। এখানে একটি সেতু হওয়া জরুরি।’এলাকাবাসীর ভোগান্তি অবসানে একটি সেতুর দাবি জানান খোদ খেয়াঘাটের মাঝি সন্তোষ চন্দ্র দাস। তিনি বলেন, ‘দীর্ঘ ৫০ বছর ধরে আমি এই ঘাটে লোকজন পারাপার করছি। তবে আমি যখন অসুস্থ হয়ে পড়ি, নৌকা বাইতে পারি না; তখন এই এলাকার লোকজনের ভীষণ কষ্ট হয়। ছোট ছোট বাচ্চারা ঠিকমতো স্কুল-মাদরাসায় যেতে পারে না। সংশ্লিষ্টদের কাছে অনুরোধ, এখানে একটি সেতু করা হোক।’

এ বিষয়ে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান গোলাম ছরওয়ার লিটম বলেন, এলাকাবাসীর স্বার্থে এখানে একটি সেতুর খুবই প্রয়োজন।’ ইছামতী নদীটি রায়গঞ্জ ও সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলাকে পৃথক করে দিয়েছে। এই দুই উপজেলার বসবারত মানুষের জীবনমান উন্নয়নের জন্য একটি ব্রীজ খুবই প্রয়োজন। আমি এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সবার সঙ্গে কথা বলব এবং জোর প্রচেষ্টা চালিয়ে যাব।রায়গঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ নাহিদ হাসান খান জানান, চক মোহনপুর ইছামতী নদীর উপর একটি ব্রিজ নির্মাণের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নজরে আনব।

Facebook
Twitter
LinkedIn
WhatsApp
Tumblr
Telegram

, বিভাগের জনপ্রিয় সংবাদ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *