মো. জিল্লুর রহমান, লাকসাম (কুমিল্লা): উপমহাদেশের একমাত্র মহিলা নবাব, নারী জাগরণের অগ্রদূত, একুশে পদকপ্রাপ্ত (মরণোত্তর) মহিয়সী নারী নবাব ফয়জুন্নেসা চৌধুরাণীর ১২১তম মৃত্যুবার্ষিকী পালন করা হয়েছে।
সোমবার লাকসাম উপজেলা প্রশাসন, নবাব ফয়জুন্নেছা সরকারি কলেজ এবং নবাব ফয়জুন্নেছা ও বদরুন্নেছা যুক্ত উচ্চ বিদ্যালয়ের উদ্যোগে উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে যথাযোগ্য মর্যাদায় এই মহীয়সী নারীর মৃত্যুবার্ষিকী পালিত হয়।
মৃত্যুবার্ষিকীতে আলোচন সভা, শোভাযাত্রা, কবরে পুষ্পস্তবক অর্পণ, ফাতেহা পাঠ ও বিশেষ দোয়া মুনাজাতসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করা হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন, লাকসাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবদুল হাই সিদ্দিকী।
এসময় উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার প্রসাদ কুমার ভাওয়াল, উপজেলা সমাজ সেবা কর্মকর্তা উপন্যাস চন্দ্র দাস, সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মোঃ শওকত আলী, নবাব ফয়েজুন্নেছা-বদরুন্নেছা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কামাল হোসেন হেলাল, নবাব ফয়েজুন্নেছা ফাউন্ডেশন সদস্য, সাংবাদিক কামাল উদ্দিন, লাকসাম সাংবাদিক ইউনিয়ন সাধারণ সম্পাদক আবদুর রহিম, সিনিয়র সাংবাদিক নূর উদ্দিন জালাল আজাদ, মোজাম্মেল হক আলম আফরাতুল করিম রিমু সহ নবাব ফয়েজুন্নেছা সরকারি কলেজে শিক্ষক শিক্ষার্থীবৃন্দ।
নবাব ফয়জুন্নেছা চৌধুরাণীর কর্মময় জীবনের বিভিন্ন দিক তুলে ধরে আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন, এই মহীয়সী নারী জমিদারি পরিচালনাসহ নানা ব্যস্ততার মাঝেও অসাধারণ সাহিত্যচর্চা করতেন। তার কাব্য সাধনার অমর সৃষ্টি ‘রূপজালাল’ তার সৃজনশীল কর্মকে আমাদের চিন্তন ও মননে লালন করতে হবে। সভায় বক্তারা, নবাব ফয়জুন্নেছা চৌধুরাণীর জীবনী প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরে পাঠ্যবইয়ে অন্তর্ভুক্ত এবং বাংলাদেশে নবাব ফয়জুন্নেছা দিবস পালনের জন্য বর্তমান সরকারের প্রতি দাবি জানান।
প্রসঙ্গত, ১৮৩৪ খ্রিষ্টাব্দে নবাব ফয়জুন্নেছা চৌধুরাণী লাকসামের পশ্চিমগাঁও জমিদার পরিবারে গ্রামে জন্ম গ্রহণ করেন। তার বাবার নাম ছিল জমিদার আহম্মদ আলী চৌধুরী। মায়ের নাম আরফান্নেছা চৌধুরী। বাবা-মা তাকে আদর করে ‘ফয়জুন’ নামে ডাকতেন। ফয়জুনের বয়স যখন ১০ বছর, তখন তার বাবা মারা যান। মায়ের সাথে চলছিল ফয়জুন্নেছার জীবন। কিছুকাল পর ১৮৫৫ খ্রিষ্টাব্দে মায়ের মৃত্যুর পর ফয়জুন্নেছা বাবার জমিদারির দায়িত্ব কাঁধে তুলে নেন। ১৯০৩ খ্রিষ্টাব্দের ২৩ সেপ্টেম্বর তিনি ইন্তেকাল করেন। পশ্চিমগাঁও নিজ বাড়ির পাশে তারই নির্মিত দশ গম্বুজ মসজিদের পাশে এই মহীয়সী নারী চিরনিদ্রায় শায়িত রয়েছেন।