শনিবার, ১৪ই আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ,২৮শে জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

মাদ্রাসা প্রধানের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির বহু অভিযোগ

লাকসামে মাদ্রাসারছাত্রীর রহস্যজনক মৃত্যু

মো. জিল্লুর রহমান, লাকসাম (কুমিল্লা): কুমিল্লার লাকসামে ইক্বরা মহিলা মাদ্রাসার ৭ম শ্রেণির ছাত্রী ছামিয়া আক্তার (১২) নামের এক শিক্ষার্থীর রহস্যজনক মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়। বৃহস্পতিবার গভীর রাতে লাকসাম পৌরসভা সংলগ্ন এলাকায় অবস্থিত কামাল টাওয়ারে এ ঘটনা ঘটে।

পার্শ্ববর্তী নাঙ্গলকোট উপজেলার নাওগোদা গ্রামের প্রবাসী মিজানুর রহমানের মেয়ে মাত্র ১ মাস ২দিন আগে এই মাদ্রাসার ৭ম শ্রেণিতে ভর্তি হওয়ার পর থেকে আবাসিকে থাকে মৃত ছামিয়া। মৃত্যুর পর লাকসাম থানায় ছামিয়ার মামা নাছির উদ্দিন বাদী হয়ে একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করেন।

লাকসাম ইক্বরা মহিলা মাদ্রাসার আবাসিকে থেকে ৭ শ্রেণিতে লেখাপড়া করেন ছামিয়া। পবিত্র ঈদুল ফিতরের ছুটি শেষে পরিবারের সদস্যরা তাকে মাদ্রাসায় দিয়ে যায়। আবাসিকে থাকতে ছামিয়া অপরগতা জানালেও কেউ শোনেনি তার কথা। বৃহস্পতিবার গভীর রাতে মাদ্রাসার ৫ম তলার জানালার গ্রিলের ফাঁক দিয়ে নিচে পড়ে যায় শিক্ষার্থী ছামিয়া। (রহস্য-১) এবং তার শরীরের এক অংশ থেঁতলে যায়। প্রশ্ন? ৬ ইঞ্চি জানালার সামান্য গ্রিলের ফাঁক দিয়ে কি করে একটি মানুষ একপাশ থেকে অপর পাশে যাইতে পারে? আর জানালার ফাঁক ও তেমন বেশি না। জানালার এই ফাঁকা জায়গাটি কি মাদ্রাসার প্রধান দেখেন নাই? এতটুকু ফাঁক দিয়ে যদি একটা ১২ বছরের মানুষ এক পাশ থেকে অপর পাশে যাইতে পারে, তাহলে তিনি এটি বন্ধ করেন নাই কেন?

জেনে রাখা ভালোঃ এই মাদ্রাসার প্রধান জামাল উদ্দিন, (জামাল হুজুর) সে নিজেও নারী কেলেঙ্কারির সাথে জড়িত। ২০২৪ সালে লাকসাম স্টেডিয়াম সংলগ্ন খান্দানি মার্কেটে জনৈক এক নারীর সাথে অবৈধ মেলামেশা করতে গিয়ে হাতেনাতে ধরা পড়েন। পরে ওই লোকদেরকে হাতের মোবাইল ও ৫০ হাজার টাকা দিয়ে ইজ্জৎ ভিক্ষা চেয়ে মাদ্রাসায় ফিরে আসেন। এর আগেও একাধিক নারীর সাথে অবৈধ মেলামেশার কথা প্রায় সময় জানাজানি হলেও টাকার বিনিময়ে এবং স্থানীয় নেতাদের সে সবসময় হাত করে ন্যাক্কারজনক ঘটনা ধামাচাপা দিতেন।

এর আগে একটা ছাত্রীকে মেরে রান্না করা ডালের মধ্যে ফেলে মেরে ফেলার অভিযোগও উঠে এই জামাল হুজুরের বিরুদ্ধে। ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে মোটা অংকের টাকা দিয়ে ঘটনা ধামাচাপা দিয়ে ফেলেন।

৭ম শ্রেণিতে পড়ুয়া ১২ বছরের ছামিয়া ৫ম তলা থেকে পড়ার পর তাকে প্রথমে আমেনা মেডিকেল নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার পরামর্শ দিলে তাকে ঢাকার পপুলার হাসপাতালে নিলে শুক্রবার দুপুরে ছামিয়াকে মৃত ঘোষণা করেন।

খবর পেয়ে কুমিল্লা জেলা পুলিশের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার ও লাকসাম-মনোহরগঞ্জ সার্কেল সোমেন মজুমদার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং মাদ্রাসা প্রধান জামাল হুজুরকে জিজ্ঞাবাদের জন্য থানায় নিয়ে যাওয়ার নির্দেশ প্রদান করেন। এইদিকে এই মৃত্যুকে ঘিরে, স্থানীয়দের মাঝে ব্যাপক আলোচনা, সমালোচনা ও উত্তেজনা বিরাজ করতে দেখা যায়।

লাকসাম থানা পুলিশের ওসি (তদন্ত) আনোয়ার হোসেন, ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন।

Facebook
Twitter
LinkedIn
WhatsApp
Tumblr
Telegram

, বিভাগের জনপ্রিয় সংবাদ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *