
মো. আলমগীর হোসেন, মৌলভীবাজার: মৌলভীবাজার জেলা শ্রীমঙ্গল উপজেলায় কাগজপত্র সবকিছু ঠিক থাকার পরও নিজের বাড়িতে থাকতে পারছেন না ভূণবীর ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ড আঐ গ্রামের অসহায় রহিম মাস্টার। এ যেন এক ছবির গল্প।
এক ছেলে ঢাকায় ছোটখাট চাকরি করেন। তাই রহিম মাস্টার বৃদ্ধ বয়সে তার ছেলের সঙ্গে ঢাকা চলে যান। ঢাকা ব্যয়বহুল বাসার ভাড়া দিতে না পাড়ায় বাড়িতে চলে আসেন তিনি। কিন্তু বাড়িতে এসে দেখতে পান তার চলাচলের রাস্তা এবং বাড়ি দখল করে রেখেছেন ওয়ার্ড পর্যায়ের আওয়ামী লীগ নেতা সৈয়দ আলী এবং তার ছেলেরা।
স্থানীয় ইউপি সদস্যের সঙ্গে যোগাযোগ করলে জানান. সৈয়দ আলী উগ্র এবং জুলুমবাজ প্রকৃতির লোক। তার বিচার করা তার পক্ষে সম্ভব না।
রহিম মাস্টার বলেন, আগেও আমি যখন বাড়িতে ছিলাম। বাড়ির রাস্তা নিয়ে ঝামেলা হয়েছে। আমার স্ত্রীকে মারধর করে মাথা ফাটিয়ে দিয়েছে। যার মামলা থানায় চলমান। এখন আমি ঢাকা থেকে বাড়িতে আসছি আমার পরিবার নিয়ে। কিন্তু আমার বাড়িতে আমি ঢুকলেই গালমন্দ এবং মারতে আসে সৈয়দ আলী এবং তার পরিবার। তার ভয়ে আমি শ্রীমঙ্গল একটি বাসা ভাড়া নিয়ে থাকি। আমার এক ছেলে, তিন মেয়ে। আমার জন্য এবং আমার ছেলের জন্য খুব কষ্টকর হয়ে আছে।
এই বিষয়গুলো নিয়ে শ্রীমঙ্গল থানায় নতুন করে একটি অভিযোগ দায়ের করেন রহিম মাস্টার। তাতেও কোনো প্রকার লাভ হচ্ছে না বলে জানান তিনি।
ঘটনার অনুসন্ধান করতে গিয়ে জানা যায়, শ্রীমঙ্গল থানার এসআই সুব্রুতের সঙ্গে সৈয়দ আলীর পরিবারের ব্যক্তিগত সর্ম্পক থাকায় রহিম মাস্টারকে বলেন শ্রীমঙ্গল থানাপুলিশ তাদের কিছুই করতে পারবে না। এসআইকে দিয়ে নিয়মিত হুমকি প্রদান করেন তারা।
এ বিষয়ে এসআই শুভ্রত’র মোবাইলের ফোনে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, আমি হিন্দু মানুষ। আর সৈয়দ আলী বা তার পরিবার হলেন মুসলিম। তাদের সাথে আমার কোনো সর্ম্পক নাই। আমি তাদের চিনি না।
সরেজমিন বিষয়টি তদন্ত করতে যায়যায়কাল প্রতিবেদক তাদের বাড়িতে গেলে দেখা যায়, রহিম মাস্টারের জায়গার ৪ শতকের উপর একটি পাকা ঘর তৈরি করে নিয়েছেন সৈয়দ আলী এবং তার পরিবার। এসময় সৈয়দ আলীকে বাড়িতে পাওয়া যায়নি।
সৈয়দ আলীর ছেলে রুপম মিয়ার সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, রহিম মাস্টারের ভাই মৃত টুকু মিয়া ওরফে জসিম মিয়া এই জায়গা বিক্রির কথা বলে আমাদের কাছ থেকে টাকা নিয়েছেন। রহিম মাস্টার বলছেন ঢাকা থেকে আসলে তিনি জায়গার কাগজ করে দিবেন। এখন তিনি দিচ্ছেন না। তাই আমরা জায়গা দখল নিয়েছি। আমার টাকা ফিরিয়ে দিলে আমি জায়গা ফিরিয়ে দিব।
এই বিষয়টি সালিশের মাধ্যমে সমাধানের কথা বললে তিনি জানান, এখানকার মেম্বার, চেয়ারম্যানের ভালো না। তাদেরকে তিনি মানেন না। কোর্টে এ বিষয় নিয়ে মামলা আছে। তারা আদালতে বুঝবেন।
মামলার বিষয়ে জানতে রহিম মিয়া বক্তব্য বলেন, আমার স্ত্রীকে মারধর করে মাথা ফাটিয়েছিল এ বিষয় নিয়ে কোর্টে মামলা চলতেছে।
অথচ রহিম মাস্টারের নামে সকল কাগজপত্র থাকার পরও জায়গাটি দখল করে আছেন সৈয়দ আলী এবং তার পরিবার।
রহিম মাস্টার জানান, আওমী লীগের ওয়ার্ড পর্যায়ে নেতৃত্ব দেন সৈয়দ আলী। যার ফলে কাউকে তাদের চোখে পড়ে না।
বর্তমানে রহিম মাস্টার অসহায় হয়ে প্রশাসনের সহযোগিতার জন্য দরজায় দরজায় ঘুরছেন। উনার কাগজপত্র যদি সঠিক হয় তাহলে উনার জায়গা উনাকে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য বর্তমান সরকার ও স্থানীয় প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করছেন।