
মো: রমিজ আলী, সীতাকুণ্ড: চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে মহাসড়কে গাড়ি পার্কিংকে কেন্দ্র করে গাড়ি চালকদের সঙ্গে কারখানার নিরাপত্তাকর্মীদের বিরোধের জেরে ঢাকা–চট্টগ্রাম হাইওয়ে মহাসড়কে দুই ঘণ্টা অবরোধ করেছেন চালকেরা। এতে অন্তত ৮ থেকে ১০ কিলোমিটারজুড়ে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়।
বুধবার সন্ধ্যা সাতটার দিকে উপজেলার বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়নের বাদামতলা এলাকায় ইস্পাহানি সামিট অ্যালায়েন্স টার্মিনালের সামনে এ ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে সীতাকুণ্ড থানা ও বারআউলিয়া হাইওয়ে পুলিশের সদস্যরা এবং বাঁশবাড়ীয়া ইউনিয়ন ছাত্র দলের স্থানীয় নেতা-কর্মিরা গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করেন। এ সময় মুমূর্ষু রোগী নিয়ে আটকে পড়া একটি অ্যাম্বুলেন্স চালককে মারধরের অভিযযোগ পাওয়া গেছে।
স্থানীয় বাসিন্দা সূত্রে জানা গেছে, বেলা তিনটার দিকে বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়নের চম্পা রোলিং মিলের প্রবেশপথে একটি কাভার্ড ভ্যান পার্কিং নিয়ে চালক ও কারখানার নিরাপত্তাকর্মীদের মধ্যে বাগ্বিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে চালককে মারধর করা হয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে। এরপর ওই চালক অন্য চালকদের একত্র করে সন্ধ্যা সাতটায় মহাসড়কে কাভার্ড ভ্যান আড়াআড়ি করে রেখে অবরোধ করেন। সাড়ে আটটার দিকে অবরোধকারীদের সরিয়ে দেওয়া হয়।
রাত পৌনে ৯:৩০টার দিকে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, থানা ও হাইওয়ে পুলিশের সদস্যরা এবং স্থানীয় ছাত্র দলের নেতারা যানজট নিরসনে কাজ করছেন। আন্দোলনকারী চালকেরা টার্মিনালের কনটেইনার ডিপোর ভেতরে অবস্থান করছিলেন। স্থানীয় বাসিন্দারা তখনো ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন। মহাসড়কে যানবাহনগুলো স্থবির হয়ে দাঁড়িয়ে ছিল।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, অবরোধ চলাকালে এক অ্যাম্বুলেন্স চালক মুমূর্ষু রোগী নিয়ে আটকে পড়েন। চালকদের কাছে সড়ক ছেড়ে দেওয়ার অনুরোধ জানালে তাঁকে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ ওঠে। বিষয়টি জানাজানি হলে স্থানীয় বাসিন্দারা ক্ষুব্ধ হয়ে চালকদের ধাওয়া দেন। পরে চালকেরা কনটেইনার ডিপোর ভেতরে আশ্রয় নেন এবং তাঁদের মধ্যে একজনকে ধরে আনা হলে তিনি মহাসড়কে দাঁড় করানো কাভার্ড ভ্যানগুলো সরিয়ে দেন।
স্থানীয় বাসিন্দা মো:নুর নবী বলেন, ‘মহাসড়কে ডাবল লাইনে গাড়ি পার্কিংয়ের কারণে চলাচলে দীর্ঘদিন ধরে ভোগান্তি হচ্ছিল। আজকের ঘটনা শুরু হয় বিকেলে রোলিং মিলের সামনে পার্কিং নিয়ে বিরোধের জেরে। পরে তা বড় আকার নেয়।’
ঘটনাস্থলে থাকা সীতাকুণ্ড সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার লাবিব আবদুল্লাহ বলেন, ‘চালকদের অভিযোগ শুনে আমরা সমাধানের আশ্বাস দিয়েছিলাম। কিন্তু তাঁরা তাৎক্ষণিক সমাধান না পেয়ে সড়ক অবরোধ করেন। এর মধ্যে এক অ্যাম্বুলেন্স চালককে মারধরের অভিযোগ আসে। পরে স্থানীয় লোকজন চালকদের ধাওয়া দিলে তাঁরা সরে যান। এখন যান চলাচল স্বাভাবিক করতে কাজ করছি।’