শুক্রবার, ৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ,২২শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

হত্যা মামলায় রিমান্ডে শাকিল-রূপা

যায়যায় কাল প্রতিবেদক : সরকার পতনের দাবিতে আন্দোলন চলাকালে ঢাকায় একটি হত্যার ঘটনায় করা মামলায় সাংবাদিক দম্পতি শাকিল আহমেদ ও ফারজানা রূপাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আবার পাঁচ দিনের রিমান্ডে পেয়েছে পুলিশ।

একই মামলায় রিমান্ডে পাঠানো হয়েছে আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আবদুস সোবহান মিয়া গোলাপকেও।

সোমবার ঢাকার মহানগর হাকিম মোশাররফ হোসেন শুনানি শেষে তিনজনকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের আদেশ দেন।

রোববার ঢাকার পশ্চিম নাখালপাড়া থেকে গোলাপকে ধরা হয়। এরপর তাকে ঢাকার আদাবর থানা এলাকায় পোশাক শ্রমিক মো. রুবেল হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়। এই মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে সোমবার তাকে ১০ দিনের রিমান্ডে পেতে আদালতে আবেদন করে পুলিশ। একই মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয় সাংবাদিক দম্পতিকে।

সরকার পতনের পর একাত্তর টেলিভিশনের হেড অব নিউজ পদ থেকে চাকরিচ্যুত শাকিল ও প্রিন্সিপাল করেসপন্ডেন্ট অ্যান্ড প্রেজেন্টার পদ থেকে চাকরিচ্যুত রূপা দেশের বাইরে যাওয়ার চেষ্টার সময় বিমানবন্দরে আটক হন।

২১ আগস্ট আটকের পরদিন দুই জনকে হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়। পরদিন তাদেরকে টঙ্গীর পোশাক শ্রমিক ফজলুল করিম হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে তোলা হয়। পুলিশের আবেদনে তাদেরকে চার দিনের রিমান্ডে পাঠান বিচারক।

সরকার পতনের দিন গত ৫ আগস্ট উত্তরায় জসিম উদ্দিন মোড়ের কাছে রাস্তায় গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন ফজলুল। এই রিমান্ড শেষে সাংবাদিক দম্পতিকে আদাবরে রুবেল হত্যা মামলাতেও গ্রেপ্তার দেখানো হয়।

সরকার পতনের দিন ৫ আগস্ট আদাবর থানা এলাকায় রুবেল গুলিবিদ্ধ হন। দুই দিন পর মারা যান হাসপাতালে। ২২ অগাস্ট এই ঘটনায় মামলা করেন তার বাবা রফিকুল ইসলাম।

মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান ও চিত্রনায়ক ফেরদৌস আহমেদসহ ১৫৬ জনের নাম উল্লেখ করা হয়। অজ্ঞাত আরও ৪০০ থেকে ৫০০ জনের কথাও বলা হয় মামলায়।

মামলায় বাদী লেখেন, গত ৫ আগস্ট বেলা ১১ টায় রুবেল আদাবর রিংরোডে একটি মিছিলে যোগ দেন। রিংরোডের মাথায় হক সাহেবের গ্যারেজের কাছে আসামিদের ‘প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ নির্দেশ, প্ররোচনা, সাহায্য, সহযোগিতা ও প্রত্যক্ষ মদদে’ পুলিশ ও আওয়ামী লীগের কর্মীরা গুলি করে।

গুলিবিদ্ধ রুবেলকে গ্রিনরোডের সেন্ট্রাল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে পাঠানো হয় সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে। সেখানে অপারেশন শেষে তাকে সিটি কেয়ার জেনারেল হাসপাতাল অ্যান্ড ডায়গনস্টিক সেন্টারের আইসিইউতে ভর্তি করা হয়। দুই দিন পর তিনি মারা যান।

আওয়ামী লীগ নেতাকে হেফাজতে নেওয়ার আবেদনটি করেন তদন্ত কর্মকর্তা আদাবর থানার পরিদর্শক মিন্টু চন্দ্র বণিক।

তিনি লেখেন, অর্থনৈতিক মদদদাতা, হুকুমদাতা, উসকানিদাতা ব্যক্তিদের নামসহ মামলার ঘটনার মূল রহস্য উদ্‌ঘাটন এবং মামলার ঘটনায় জড়িত অন্যান্য আসামিদের অবস্থান শনাক্ত করতে এই আসামিদের ব্যাপকভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করা প্রয়োজন।

গোলাপের আইনজীবী মোর্শেদ হোসেন শাহীন এবং অন্য একজন নারী আইনজীবী বলেন, এরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন না। এরা ঘটনার সঙ্গে কীভাবে যুক্ত তাও রিমান্ড আবেদন বা এজাহারে নেই।

তারা শুনানি করতে বারবার বাধা দিতে থাকেন বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা। তারা এক পর্যায়ে তারা বিচারককে প্রশ্ন করে উচ্চস্বরে বলতে থাকেন, আসামিপক্ষের বক্তব্য কেন এতক্ষণ শোনা হচ্ছে।

ফারজানা রূপা ও শাকিল আহমেদ সম্পর্কে বিএনপি সমর্থক আইনজীবী ওমর ফারুক ফারুকী বলেন, আসামিরা ‘খুনি, স্বৈরাচারের’ দোসর, হলুদ সাংবাদিকতা করেন।

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on tumblr
Tumblr
Share on telegram
Telegram

, , বিভাগের জনপ্রিয় সংবাদ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

যায়যায়কাল এর সর্বশেষ সংবাদ