কাইয়ুম মাহমুদ : গ্রাম-বাংলার নানা উৎসব-পার্বনে এক সময় বিনোদনের খোরাক জুগিয়েছে লাঠি খেলা। কিন্তু প্রয়োজনীয় পৃষ্টপোষকতা আর নতুন খেলোয়ারের অভাবে দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে জনপ্রিয় খেলাটি।
গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য এই ঐতিহ্যবাহী লাঠি খেলা টিকিয়ে রাখতে নিজ উদ্যোগে এগিয়ে এসেছেন প্রবীণ লাঠিয়াল বদিউজ্জামান বদি। তারা তৈরি করছেন নতুন প্রজন্মের খেলোয়ার। যাদের মাঝে বাঙালির ঐতিহ্যবাহী এ খেলাটি টিকে থাকবে।
সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলার সলঙ্গা থানার হাটিকুমরুল ইউনিয়নের চড়িয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশে তার নিজ বাড়ীতে এ আয়োজন করেছেন বদিউজ্জামান।
তার সঙ্গে প্রশিক্ষক হিসেবে রয়েছেন-স্থানীয় প্রবীণ লাঠিয়াল ঝনটু, শরিফুল,নোমাজ,সেরাজুল সহ অনেকেই অনেক আগে থেকেই এরা সবাই লাঠি খেলায় মাঠ কাঁপানো খেলোয়ার ছিলেন।
সিরাজগঞ্জে বিভিন্ন উপজেলায় তারা দাপটের সঙ্গে এ খেলায় অংশ নিয়েছেন। কিন্তু বয়সের কারণে বর্তমান লাঠি খেলার মতো তাদের শারীরিক শক্তি ও সাহস নেই।
বদিউজ্জামান জানান, লাঠি খেলা গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী খেলা। কিন্তু দিন দিন খেলাটি হারিয়ে যাচ্ছে। এর একটি বড় কারণ নতুন খেলোয়ার সৃষ্টি না হওয়া। গ্রামীণ ঐতিহ্য টিকিয়ে রাখতেই কিছু পুরাতন খেলোয়ার ও কিছু নতুন খেলোয়ার তৈরির উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
ইতোমধ্যেই স্থানীয়ভাবে লাঠি খেলায় অংশ নিয়ে আমরা আমাদের যোগ্যতার প্রমাণ দিয়েছি।
পায়ে ঘুংগুর দিয়ে বাদ্যের তালে তালে প্রতিপক্ষের লাঠির আঘাত থেকে আত্মরক্ষার পাশাপাশি আক্রমণ করছিলেন তারা।
বদিউজ্জামানের বাড়ীতে হাটিকুমরুল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হেদায়েতুল আলম আলম রেজা ও হাটিকুমরুল ইউনিয়ন শ্রমিক লীগের সভাপতি আজিজুল বারি সুমন সহ খেলোয়ারদের দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে এ লাঠি খেলার আয়োজন করা হয়।
ঐতিহ্যবাহী এ খেলা দেখতে নানা বয়সী হাজারো মানুষ ভিড় জমায়। দর্শকরা নতুন লাঠিয়ালদের খেলা দেখে মুগ্ধ হন।
খেলা দেখতে আসা আজিজুল বাড়ী পলিন জানান, খুব ভাল লাগছে। আমাদের খেলা দেখে লোকে যখন হাতে তালি দেন তখন আরও ভালো লাগে।এই ঐতিহ্যবাহী লাঠি খেলা দেখতে পেরে প আমি নিজেকে গর্বিত মনে করছি।
এলাকাবাসী জানান, নতুন প্রজন্মের এ খেলোয়ারদের মাঝেই ঐতিহ্যবাহী লাঠি খেলা টিকে থাকবে বলে আমরা আশা করছি। আগামী দিনেও নানা উৎসব-পার্বণে আবারও গ্রামীণ জনপদে বিনোদন জোগাবে এ খেলায়াররা। দেশের প্রতিটি জেলাতেই এমনভাবে গ্রামীণ ঐতিহ্য রক্ষার উদ্যোগ নেয়া প্রয়োজন বলে মনে করেন স্থানীয়রা।