![](https://jaijaikal.com/wp-content/plugins/print-bangla-news/assest/img/print-news.png)
উত্তম দাস, খুলনা: নতুন বছরকে স্বাগত জানানোর প্রাক্কালে খুলনায় “ধ্রুব খুলনা,” “ক্লিন,” এবং “বাংলাদেশ ওয়ার্কিং গ্রুপ অন ইকোলজি অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (বিডব্লিউজিইডি)” এর একটি জোট সারা দেশের মানুষকে শতভাগ নবায়নযোগ্য জ্বালানি অর্জনের পথে সকল বাধা বিপত্তি দূর করতে এবং নতুন বছরে নবায়নযোগ্য জ্বালানি ব্যবহারে উৎসাহিত করতে ভিন্নধর্মী এই প্রচারাভিযান আয়োজন করা হয়।
বাংলাদেশে নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে রূপান্তরের পথে বহু বছর ধরে বিভিন্ন বাধা বিদ্যমান। এই বাধাগুলোর মধ্যে রয়েছে জটিল অনুমোদন প্রক্রিয়া, আর্থিক সীমাবদ্ধতা, অবকাঠামোগত দুর্বলতা এবং নীতিমালার ঘাটতি। খুলনার এই উদ্যোগ শুধু বাধাগুলো শনাক্ত করেই ক্ষান্ত হয়নি, বরং এগুলো সমাধানের জন্য নির্দিষ্ট দাবিও উত্থাপন করেছে।
এই প্রচারাভিযানে একটি সাধারণ কেন্দ্রীয় অনুমোদন প্রক্রিয়া ব্যবস্থা স্থাপনের দাবি জানানো হয়, যা নবায়নযোগ্য শক্তি প্রকল্পের অনুমোদন প্রক্রিয়াকে দ্রুত এবং সহজতর করবে। এই উদ্যোগটি ব্যবস্থাগত বিলম্ব দূর করে দ্রুত প্রকল্প বাস্তবায়নের সুযোগ তৈরি করবে। একই সঙ্গে, স্মার্ট গ্রিড এবং নেট এনার্জি মিটারিং (এনইএম) এর মাধ্যমে নবায়নযোগ্য শক্তি জাতীয় গ্রিডে আরও কার্যকরভাবে সংযুক্ত করার দাবী জানানো হয়।
জাতীয় বিদ্যুৎ বাজেটের অন্তত ২০% নবায়নযোগ্য জ্বালানির জন্য বরাদ্দের দাবি এই প্রচারণার অন্যতম প্রধান দাবী। এই বাজেট উন্নত প্রযুক্তি উন্নয়ন, গবেষণা, এবং টেকসই প্রকল্প বাস্তবায়নে নিশ্চিত ভূমিকা রাখবে।
অর্থায়ন সংকট দূর করার লক্ষ্যে দেশীয় বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর জন্য নবায়নযোগ্য শক্তিতে অন্তত ২৫% অর্থায়নের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণের দাবি জানানো হয়েছে। এই উদ্যোগ সোলার, উইন্ড এবং অন্যান্য টেকসই শক্তি প্রকল্পগুলোর জন্য প্রয়োজনীয় মূলধন সরবরাহ নিশ্চিত করবে। একই সঙ্গে, নবায়নযোগ্য শক্তি সরঞ্জামের উপর আমদানি শুল্ক এবং ট্যারিফ কমানোর দাবিও তোলা হয়েছে, যাতে এই প্রযুক্তি আরও সাশ্রয়ী এবং সহজলভ্য হয়।
এছাড়াও সকল নবায়নযোগ্য এবং জীবাশ্ম জ্বালানিভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রে “নো ইলেক্ট্রিসিটি নো পে” নীতি দ্রুত চালুর দাবী করা হয়। এই নীতি গ্রহণের ফলে ক্যাপাসিটি চার্জের বোঝা থেকে আমরা অচিরেই বেরিয়ে আসতে পারবো।
বিদ্যুৎ বিলিংয়ে ন্যায্যতার জন্য “বিদ্যুৎ না থাকলে বিল নয়” নীতি চালুর দাবিও অন্যতম। এই নীতি গ্রাহকদের সঠিক সেবার নিশ্চয়তা প্রদান করবে এবং সেবা প্রদানকারীদের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করবে।
ধ্রুব সংস্থা খুলনার নির্বাহী পরিচালক রেখা মারিয়া বৈরাগী বলেন, “এই প্রচারাভিযান খুলনাবাসী এবং বাংলাদেশের মানুষের জন্য একটি টেকসই, পরিবেশবান্ধব ভবিষ্যৎ গড়াতে প্রতিশ্রুতি বদ্ধ। জনগণ, নীতিনির্ধারক, এবং বিশেষজ্ঞদের একত্রিত করে এটি নবায়নযোগ্য জ্বালানির জন্য একটি ঐক্যবদ্ধ পদক্ষেপ।’
২০২৫ সালে, এই প্রচারণা শুধুমাত্র খুলনার নয়, পুরো বাংলাদেশের জন্য একটি নতুন দিনের সূচনা।