মঙ্গলবার, ২৫শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ,১০ই ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

, এর সর্বশেষ সংবাদ

আমরা এবার যদি ব্যর্থ হই, বাংলাদেশ কাশ্মীরে পরিণত হবে: আসিফ নজরুল

যায়যায়কাল প্রতিবেদক: কিছু মানুষ ভারতীয় স্ক্রিপ্ট (চিত্রনাট্য) বাংলাদেশে রূপায়িত করার কাজে নেমেছেন বলে মনে করেন অন্তর্বর্তী সরকারের আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল।

তার মতে, উদ্দেশ্যমূলক সমালোচনার নামে অন্তর্বর্তী সরকারকে শক্তিহীন করা, আন্দোলনকারীদের মধ্যে অনৈক্য নিয়ে আসা এবং দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা চলছে।

শনিবার সন্ধ্যায় জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘স্মৃতির মিনার: গণ-অভ্যুত্থান ২০২৪’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন অধ্যাপক আসিফ নজরুল। এই আলোচনা সভার আয়োজক বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা (বাসস)।

সভায় আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেন, ‘আমাদের কাজের সমালোচনা করবেন, সমস্যা নেই। কিন্তু যখন সম্পূর্ণ আজগুবি, মিথ্যা তথ্য দিয়ে ব্যক্তিগত চরিত্র হনন করা হয়, তখন মনে হয় সমালোচনাটি অস‍ৎ উদ্দেশ্যে করা। এই সরকারকে শক্তিহীন করা, আন্দোলনকারী মানুষের মধ্যে অনৈক্য নিয়ে আসা, দেশকে অস্থিতিশীল করা। পরাজিত শক্তির হাতে অস্ত্র তুলে দেওয়ার অভিপ্রায়ে এগুলো করা হয়। তখন মনে হয়, এই দেশকে ঘিরে আমাদের এক প্রতিবেশী দেশের স্ক্রিপ্ট আছে না—শেখ হাসিনা চলে গেলে আর কেউ দেশ চালাতে পারবে না অথবা দেশ উগ্রবাদীদের খপ্পরে পড়বে, তার (হাসিনা) কোনো বিকল্প নেই—এই ভারতীয় স্ক্রিপ্ট এখানে রূপায়িত করার কাজে নেমেছে কিছু মানুষ।’

গঠনমূলক পরামর্শ দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে আসিফ নজরুল বলেন, ‘যদি নিজেরা নিজেরা ঝগড়াঝাঁটি করে নিজেরা নিজেদের কুৎসা রটাই, চরিত্র হনন করি, মিথ্যা তথ্য দিই, তাহলে ছাত্র-জনতার আত্মবলিদানের প্রতি অশ্রদ্ধা জানানো হয়।’

নিজের বিরুদ্ধে মিথ্যা তথ্য দিয়ে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে উল্লেখ করে উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেন, কারও প্রতি অভিযোগ নেই, সবার প্রতি অনুরোধ, সত্য জানার চেষ্টা করেন। মিথ্যা, অত্যাচার, নিপীড়ন, দোষারোপ—এগুলো পরাজিত ফ্যাসিস্ট শক্তির অস্ত্র ছিল।

আন্দোলনে বিভিন্ন পর্যায়ের মানুষের অবদান ও অংশগ্রহণের কথা তুলে ধরে আইন উপদেষ্টা বলেন, ‘তারা আমাদের কি ভয়াবহ ফ্যাসিস্টদের হাত থেকে রেহাই দিয়েছে, আজকে ব্যর্থ হলে আমাদের কী অবস্থাটা হতো? এটি যেন আমরা মনে রাখি। আজকে যদি আবারও ব্যর্থ হই, তাহলে সেই অবস্থাই হবে। আমাদের কাছে ভয় লাগে আমরা এবার যদি ব্যর্থ হই, বাংলাদেশ কাশ্মীরে পরিণত হবে, কাশ্মীরের কাছাকাছি পরিণত হবে। আমরা যেন এই বিষয়টি মনে রাখি।’

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে বিভিন্ন গণমাধ্যমের অবদানের কথা উল্লেখ করেন অধ্যাপক আসিফ নজরুল। তিনি বলেন, ‘৫ আগস্টের আগে নাহিদ (তথ্য উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম), আসিফ মাহমুদ (স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া) তারা ফেসবুকে কোন পত্রিকার রিপোর্টকে সবচেয়ে বেশি কোট (উদ্ধৃত) করতেন? আপনারা খুলে দেখেন কোন পত্রিকা। এখন যদি একটি পত্রিকার বিরুদ্ধে উঠেপড়ে লাগি, আমি কি তার জুলাই-আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানে ভূমিকা দেখব না? গত ১৫ বছরের ভূমিকা দেখব না? অবশ্যই আমার প্রতিবাদের ভাষা থাকবে, অবশ্যই প্রতিবাদ করব। কোনো পত্রিকার কোনো কিছু পছন্দ না হলে অবশ্যই বলব, বস্তুনিষ্ঠভাবে বলব। কিন্তু তাকে তো আমি জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের শত্রু বানাতে পারি না।…চ্যালেঞ্জ করলাম, খুলে দেখেন, এই আন্দোলনে যারা বড় বড় নেতা ছিলেন, কোন পত্রিকার লেখা বেশি কোট করেছেন?’

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে জুলাই অভ্যুত্থানের বিভিন্ন ঘটনার প্রেক্ষাপট তুলে ধরেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। তখন তিনি আন্তর্জাতিক বার্তা সংস্থা এএফপির ঢাকা ব্যুরো প্রধান ছিলেন। ইন্টারনেট বন্ধ থাকার ওই সময়ে কীভাবে অন্য গণমাধ্যমকে তিনি সহায়তা করেছেন, সেই তথ্যও তুলে ধরেন।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাসসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাহবুব মোর্শেদ। বাসসের বিশেষ প্রতিনিধি দিদারুল আলমের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন লেখক রাখাল রাহা, গণ অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান, কবি ফেরদৌস আরা রুমী প্রমুখ।

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on tumblr
Tumblr
Share on telegram
Telegram

, বিভাগের জনপ্রিয় সংবাদ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

যায়যায়কাল এর সর্বশেষ সংবাদ