রবিবার, ২৬শে মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ,৯ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

ইঁদুরের গর্তের ধানে তাদের পিঠার স্বপ্ন

শাহদাৎ হোসেন লাল, স্টাফ রিপোর্টার: চলছে আমন ধানকাটার ভরা মৌসুম। কৃষক ব্যস্ত কাস্তের টানে মুঠি মুঠি ধানের গোছা কাটায়। এরই ফাঁকে কাঁধে কোদাল নিয়ে এ খেত ও খেতে ছুটে চলেছে শিশুর দল। ইঁদুরের গর্ত খুঁড়ে ধানের শিষ সংগ্রহ করতে ওদের এ ছোটাছুটি।

ইঁদুরের গর্ত কিংবা ঝরে পড়া ধান দেখলেই তাদের চোখে-মুখে ফুটে ওঠে সোনালি হাসি। ইঁদুরের নিয়ে যাওয়া ধান গর্ত খুঁড়ে বের করে আনে তারা। কুড়িয়ে নেয় মাঠে পড়ে থাকা ধানও। এসব ধানকুড়ানিদের অনেকেরই নেই নিজস্ব জমি-জিরেত। তাই তাদের পিঠা-পুলি তৈরির শখ-আহলাদ থাকে ইঁদুরের গর্তেই।

রোববার সরেজমিনে গিয়ে চাকিরপশার ইউনিয়নের খুলিয়াতারী গ্রামে দেখা যায়, সকালের রোদ কিছুটা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ধানের ক্ষেতে ভিড় করে ছোট ছোট শিশুর দল। ধান কাটার পরে নাড়ার সঙ্গে দুই-এক গোছা ধান থাকলে সেগুলো কুড়িয়ে নেয় ওরা। এ ছাড়াও গ্রামের হতদরিদ্র পরিবারের বউ-ঝিরা ধান কুড়িয়ে নিচ্ছেন। আমন ধান কাটার মৌসুমে অনেক শিশু-কিশোর স্কুলে না গিয়ে দিন পার করছে ফসলের মাঠে ইঁদুরের গর্তের ধান সংগ্রহে।

দেখা যায়, পরিত্যক্ত ক্ষেতে ধান কুড়াতে ব্যস্ত ছোট্ট শিশু মামুনের সারা গায়ে লেগে আছে কাদামাখা ছোপ ছোপ দাগ। একটু পাশেই দেখা যায় শিশু জনি, মিজান, হাসনা ও লিপি ইঁদুরের গর্ত থেকে ধান তোলার সর্বাত্মক চেষ্টা করছে।

এদের মধ্যে মিজান যায়যায়কালকে বলে, কৃষকরা মাঠ থেকে ধান কেটে নিয়ে যাওয়ার পর এমনিতেই অনেক ধানের ছড়া ধানক্ষেতে পড়ে থাকে। ওগুলো আমরা কুড়িয়ে নেই এবং ইঁদুরের গর্ত খুঁড়লেই পাওয়া যায় প্রচুর ধান।

স্কুলপড়ুয়া জনি (৮) বলেন, স্কুল থেকে এসে ইঁদুরের গর্ত খুঁড়ে ও কুড়িয়ে ধান সংগ্রহ করি। এগুলো বিক্রি করে মা-বাবা সংসারের কাজে লাগান। কখনো কখনো পিঠা তৈরি করেও খাই।

Facebook
Twitter
LinkedIn
WhatsApp
Tumblr
Telegram

, বিভাগের জনপ্রিয় সংবাদ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

যায়যায়কাল এর সর্বশেষ সংবাদ