
শাহ ইমরান, জেলা প্রতিনিধি, কুমিল্লা: কুমিল্লায় সিত্রাংয়ে একই পরিবারের নিহত তিনজনের বাড়িতে চলছে শোকের মাতম। শেষ বিদায়ের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে তিনটি খাটিয়া। নিহতদের শেষবারের মত একবার দেখতে নিহতদের বাড়িতে দূর দূরান্ত থেকে ভিড় করছেন শত শত মানুষ।
সোমবার (২৪ অক্টোবর) রাতে বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং এর প্রভাবে ঘরের ওপর গাছ পড়ে মারা যান একই পরিবারের তিনজন। নিহতরা হলেন, নাঙ্গলকোট উপজেলার হেসাখাল ইউনিয়নের খামারপাড়া গ্রামের আব্দুর রশিদের ছেলে নেজাম হোসেন, তার স্ত্রী শারমিন আক্তার সাথী এবং তাদের কন্যাশিশু নুসরাত জাহান লিজা।
বিষয়টি নিশ্চিত করেন নাঙ্গলকোট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফারুক হোসেন।
মঙ্গলবার সকালে নিহতদের স্বজনরা জানান, সোমবার রাতে খাবার খেয়ে ঘুমোতে গিয়েছিলেন মালেশিয়া থেকে ছুটিতে আসা নেজাম, তার স্ত্রী সাথী এবং কন্যাশিশু নুসরাত জাহান লিজা।
রাত ১০টার দিকে হঠাৎ ঘরের পাশের রেইনট্রি কড়ই গাছ উপড়ে পড়ে নেজামের ঘরের ওপর। এসময় ওই গাছের নিচে চাপা পড়ে প্রাণ হারান তিনজন।
এসময় বিকট শব্দ শুনে স্থানীয়রা এগিয়ে এলেও বহু চেষ্টা করেও গাছটি সরানো যায়নি। পরে করাত দিয়ে গাছটি কেটে নিহতদের উদ্ধার করে নাঙ্গলকোট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন।
আজ মঙ্গলবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, যে গাছের নিচে চাপা পড়ে প্রাণ হারিয়েছিলেন তিনজন সেই গাছটি এখনও পড়ে আছে খাটের ওপর। প্রচণ্ড ঝড়ের ফলে উপড়ে গিয়ে তিন কক্ষের টিনের ঘরে পড়লেও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে শুধু নিজামদের থাকার কক্ষটি। সেই কক্ষটিতে একপাশে পড়ে আছে কয়েকটি জামা, কক্ষটি চূর্ণ বিচূর্ণ আর নেই শুধু এই কক্ষে থাকা তিনজন জলজ্যান্ত মানুষ।
হেসাখাল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইকবাল বাহার মজুমদার বলেন, নিহত নেজাম ২২০০ বর্গফুটের একটি বিল্ডিং নির্মাণ করেছিলেন। আগামী শুক্রবার ওই বিল্ডিংয়ে ওঠার কথা ছিল তাদের। কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাসে সেই ঘরে ওঠার আগেই দুনিয়া ছাড়লেন প্রবাস ফেরত নিজাম তার স্ত্রী ও একমাত্র কন্যা। মঙ্গলবার বেলা ১১টায় তাদের জানাজা হয়ে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।