জিয়াউল হক (খোকন), নিজেস্ব প্রতিবেদক: কুষ্টিয়া দেশের উত্তর পশ্চিম অঞ্চলের অন্যতম একটি জেলা। প্রাকৃতিক কোন দুর্যোগ না থাকায় কৃষির সফলতার মাধ্যমে অনেকটাই সমৃদ্ধ। বিগত বছরে জেলায় প্রচুর পরিমানে তামাক চাষ হতো এই কুষ্টিয়াতে। সাম্প্রতিক সময়ে কুষ্টিয়ার মিরপুরে রবি ফসলের চাষ উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে। যেখানে সরিষা, ভুট্টা, গমের আবাদ বাড়লেও কমেছে তামাক চাষ।
সবচেয়ে চেয়ে বড় বিষয় হচ্ছে গতবারের চেয়ে ১ হাজার হেক্টর জমিতে তামাক চাষ কমে এসেছে।উপজেলা জুড়ে ১৩ ধরনের রবি ফসল চাষ হচ্ছে ৬ হাজার ৪ শত ৬৯ হেক্টর জমিতে।
উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্য মতে, ২ হাজার ১৫ হেক্টর জমিতে ভুট্টা যা গত মৌসুমের থেকে ৫শ’হেক্টর বেশি,সরিষা ২ হাজার ১শ’৫৯ হেক্টর যা গত মৌসুমের থেকে ৬শ’ ৪৯ হেক্টর বেশি চাষ হয়েছে। তবে ১ হাজার ১শ’৫ হেক্টর জমিতে গমের চাষ হয়েছে যা গত মৌসুমের থেকে ১০০হেক্টর কম। এছাড়া আলু, রসুন, মরিচ, খেসারী, মটর, পেঁয়াজ, সূর্যমুখী, উল্লেখযোগ্য হারে চাষ হচ্ছে।
বিশেষ করে তামাক চাষের প্রতি চাষিদের আগ্রহ কমে গেছে। যার ফলে এবছর ৬ হাজার ৩শ ৫ হেক্টর জমিতে তামাক চাষ হয়েছে যা গত বছর ৭ হাজার ৩শ ৯৫ হেক্টর জমিতে চাষ হয়েছিল।
কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, রবি শস্য উৎপাদনে খরচ সবচেয়ে় কম এবং বর্তমান সময়ে গম, ভুট্টা, মসুর, সরিষা সহ সকল ফসলের দাম ভালো থাকায় আবাদ বৃদ্ধি পেয়েছে। অপরদিকে তামাক চাষ কমে যাওয়ার পেছনে সবচেয়ে বড় কারণ হচ্ছে রবি শস্যর দাম বৃদ্ধি।
কৃষি অফিস থেকে আরো জানা যায়, চলতি রবি মৌসুমে মিরপুর উপজেলার ৬ হাজার ৯৮০ জন কৃষকে প্রণোদনার আওতায় বীজ ও সার বিনা মূল্যে বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়া ১২০ জনকে প্রদর্শনী ক্ষেতের সহযোগিতা দেয়া হয়েছে।
এছাড়াও মিরপুর উপজেলাতে সরিষার আবাদ বৃদ্ধি পাওয়াতে মাঠে বসেছে ভ্রাম্যমান মৌ খামার। সরিষা ক্ষেতে মৌখামার বসার ফলে মৌমাছিরা খুব সহজেই ফুল থেকে মধু আহরণ করতে পারছে। খামারিরা যেমন মধু সংগ্রহ করছে, ঠিক সরিষা ফুলে পরাগায়নের মাধ্যমে অধিক ফসল উৎপাদিত হচ্ছে।
এই সরিষা থেকে কুষ্টিয়ার মিরপুরে মধু খামার স্থাপন করে সফল হয়েছেন মধু মামুন নামে এক ব্যক্তি। তার খামারে উৎপাদিত মধু দেশ পেরিয়ে বিদেশে যাচ্ছে। তার খামারে হয়েছে বেকার যুবকদের কর্মসংস্থান। এখন মাসে তিনি লাখ লাখ টাকা আয় করছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, সরকার আগামী তিন বছরে তেল জাতীয় ফসলের উৎপাদন চল্লিশ শতাংশ বাড়ানোর পরিকল্পনা করেছে। সেই লক্ষ্যে দেশের প্রতিটি জেলা উপজেলাতে কৃষি প্রণোদনা বৃদ্ধি পেযে়ছে।
মিরপুর উপজেলাতে ১ বছরে তেল জাতীয় ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা অর্জন হযে়ছে। তবে আমরা একটি আশার আলো দেখেছি। বাজারে রবি শস্যর দাম বৃদ্ধি পাওয়াতে ধীরে ধীরে উপজেলাতে তামাক চাষ কমছে। কৃষি ও কৃষকের উন্নয়নে মিরপুর উপজেলা কৃষি অফিস কাজ করে চলেছে।