বুধবার, ৪ঠা আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ,১৮ই জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

খুলনায় বিএনপির গণসমাবেশ

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী খুলনায় বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশের কর্মসূচি শুরু হয়েছে। আজ শনিবার দুপুর ২টায় খুলনার সোনালী ব্যাংক চত্বরে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। ইতোমধ্যে সমাবেশস্থলে আসতে শুরু করেছেন বিএনপি ও সমমনা সংগঠনগুলোর নেতাকর্মীরা।

শনিবার বেলা ১১ টা দিকে খুলনার সোনালী ব্যাংক চত্বরে জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মাধ্যমে বিএনপির এ গণসমাবেশের প্রাথমিক অনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। তবে গতকাল রাত থেকে সেখানে নেতাকর্মীরা এসে হাজির হয়েছেন।

জ্বালানি তেল, চাল, ডাল, তেলসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য বৃদ্ধি, ভোলায় নুরে আলম, আব্দুর রহিম, নারায়ণগঞ্জে শাওন, মুন্সীগঞ্জে শহিদুল ইসলাম শাওন এবং যশোরে আব্দুল আলিম নিহত হওয়ার প্রতিবাদ, বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি এবং দেশব্যাপী দলীয় নেতাকর্মীদের ওপর হামলা ও মামলার প্রতিবাদে এ সমাবেশের আয়োজন করেছে বিএনপি।

খুলনা মহানগর বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য মিজানুর রহমান মিল্টন বলেন, রাত থেকে দলে দলে নেতাকর্মীরা এসে সমাবেশ হাজির হচ্ছেন। এখানে লক্ষাধিক নেতাকর্মীরা আসবেন। জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মাধ্যমে আমরা আজকের সমাবেশের প্রাথমিক কামসূচি শুরু করেছি। এর পর পরই স্থানীয় নেতার বক্তব্য শুরু করবেন। দুপুর দুইটার দিকে কেন্দ্রীয় নেতারা বক্তব্য দিবেন।

তিনি বলেন, আমাদের সমাবেশ উপলক্ষে বাস,লঞ্চ বন্ধ করে খুলনাকে বিচ্ছিন্ন করে রাখা হয়েছে। নানা বাধা উপেক্ষা করেও তবুও নেতাকর্মীরা আসছেন।

এদিকে বিএনপির সমাবেশ স্থলে পুলিশের উপস্থিত দেখা গেছে। খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ (কেএমপি) কমিশনার মাসুদুর রহমান ভুঁইয়া বলেন, সমাবেশে জন্য বিএনপিকে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা আমাদের পক্ষ থেকে দেয়া হচ্ছে।

খুলনায় দুই দিন ধরে চলমান পরিবহন ধর্মঘটের মধ্যে রাতেই বিভাগের বিভিন্ন জেলা থেকে বিএনপির গণসমাবেশস্থলে উপস্থিত হয়েছেন অনেক নেতা-কর্মী। রাতভর নগরীর ডাকবাংলো মোড় থেকে ফেরিঘাট পর্যন্ত সড়কে, ফুটপাতে শুয়ে, বসে, বক্তৃতা ও বিভিন্ন স্লোগানে স্লোগানে রাত পার করেছেন তারা।

আজ শনিবার সকাল থেকে বিভিন্ন জেলা ও উপজেলা থেকে দলে দলে নেতাকর্মীদের সমাবেশস্থলে আসতে দেখা গেছে। তাদের হাতে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের প্ল্যাকার্ড।

বিএনপির গণসমাবেশের আগে স্থানীয় নেতাদের পুলিশ হয়রানি করছে বলে অভিযোগ করেছেন দলটির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু। গত বৃহস্পতিবার দুপুরে খুলনা মহানগর বিএনপি কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন।

বিভাগীয় গণসমাবেশ বাস্তবায়ন কমিটির সমন্বয়ক শামসুজ্জামান বলেন, ‘বিএনপির কর্মসূচিকে বাধা দিতেই দুই দিনের পরিবহন ধর্মঘট ডাকা হয়েছে। নগরীর বিভিন্ন স্থানে প্রচার মাইকে হামলা হয়েছে। এ পর্যন্ত ছয়টি মাইক ভাঙচুর করা হয়েছে। দুইটি মাইক লুটে নেয়া হয়েছে। প্রচারণার কাজে অংশ নেয়া কর্মীদের ওপর হামলা হয়েছে। দলীয় নেতাকর্মীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে পুলিশ তল্লাশি চালাচ্ছে। নদী পথে ট্রলার বন্ধ করে জনসমাগম বাঁধাগ্রস্থ করার চেষ্টা হচ্ছে।’

এদিকে জেলা বাস-মিনিবাস মালিক সমিতির পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে বলা হয়েছে, মহাসড়কে তিন চাকার যানবাহন বন্ধ না হওয়ায় তারা এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

খুলনা জেলা বাস-মিনিবাস মালিক সমিতির এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, উচ্চ আদালতের নির্দেশ অমান্য করে মহাসড়কে দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে নসিমন, করিমন, মহেন্দ্র ও ইজিবাইক চলাচল করছে। ২০ অক্টোবরের মধ্যে প্রশাসন এগুলো বন্ধ না করলে আগামী ২১ ও ২২ অক্টোবর খুলনার সব রুটের বাস চলাচল বন্ধ থাকবে।

এ দিকে আমাদের আমাদের মোলাং (বাগেরহাট) প্রতিনিধি জানিয়েছেন, খুলনায় বিএনপির সমাবেশকে ঘিরে বাস ধর্মঘটে চরম বিপাকে পড়ছেন যাত্রীরা।

শনিবারও স্থায়ী বন্দর বাসস্ট্যান্ড থেকে ছেড়ে যায়নি কোনো বাস। বন্ধ রয়েছে ঢাকা-চট্টগ্রামের দুরপাল্লার বাসও। ফলে নিজ নিজ ব্যবস্থায় কিংবা ভেঙে ভেঙে সমাবেশে যাচ্ছেন নেতা-কর্মীরা। বাসস্ট্যান্ডে ভোর থেকেই অবস্থান নিয়েছে পুলিশ।

পরিবহন মালিক প্রতিনিধি ও শ্রমিকরা বলছেন, মালিক সমিতির নির্দেশে বাস বন্ধ রাখা হয়েছে। তাদের বক্তব্য, বিএনপির সমাবেশের নামে যদি নাশকতা ও ভাংচুর হয়, তাহলে দায় কার, সরকার তো দায় নেবে না।

তবে নসিমন, করিমন, টমটম, ইজিবাইক ও মাহেন্দ্র মহাসড়কে স্বাভাবিক চলাচল করছে। তারা বলছেন, তাদের চলাচলে নিষেধাজ্ঞা সেই, সে জন্য তারা যান চালাচ্ছেন।

যায়যায়কাল/২২অক্টো/দীপু

Facebook
Twitter
LinkedIn
WhatsApp
Tumblr
Telegram

, বিভাগের জনপ্রিয় সংবাদ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

যায়যায়কাল এর সর্বশেষ সংবাদ