রবিবার, ১লা আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ,১৫ই জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

এর সর্বশেষ সংবাদ

দেশি ও বিদেশি পাখির অভয়ারণ্যে পরিনত হয়েছে খানসামার চেয়ারম্যান বাড়ী

মো. জসিম উদ্দিন, খানসামা (দিনাজপুর) প্রতিনিধি: দেশী ও বিদেশী পাখির অভয়ারণ্যে পরিনত হয়েছে উত্তরবঙ্গের দিনাজপুর জেলার খানসামা উপজেলার ৫নং ভাবকী ইউনিয়নের মালগাঁও গ্রামের চেয়ারম্যান বাড়ী।

পাখিদের কিচিরমিচির ডাকে ভোরে ঘুম ভাঙে ও চেয়ারম্যান বাড়ির লোকজনের। আর প্রতিদিন এসব পাখি দেখতে আসেন আশেপাশের এলাকার হাজার হাজার মানুষ।
জানা গেছে, ওই চেয়ারম্যান বাড়ির পাখিপ্রেমী মহুরম ছফি উদ্দিন মন্ডল ও হযরত আলী এবং ভাবকী ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মহুরম নজরুল হক শাহ্ প্রায় শতাধিক বছর ধরে গড়ে তুলেছেন পাখিদের নিরাপদ আশ্রয়স্থল।

স্থানীয় সূত্রে জানাগেছে, প্রায় শত বছরেরও অধিক সময় ধরে এই গ্রামের চেয়ারম্যান বাড়ির বাঁশ বাগানের বিভিন্ন গাছে বাসা বাঁধে দেশি-বিদেশি বিভিন্ন জাতের পাখি। জায়গাটি মনোরম সুন্দর ও প্রাকৃতিক পরিবেশ হওয়ায় গাছে গাছে গড়ে উঠেছে দেশি-বিদেশি পাখিদের অভয়ারণ্য। আর এসব পাখিরা গাছে ডিম থেকে প্রজনন করছে বাচ্চাও। থাকছে দলবেঁধে এক সঙ্গে।

এসব পাখির মধ্যে রয়েছে সাদাবক, আতচোরা, পানকৌড়ি, বাদুর ও হারগিলা। এসব পাখি দেখতে আসা মানুষরা যেমন খুশি তার চেয়ে বেশি খুশি চেয়ারম্যান বাড়ির লোকজন। সরকারের পৃষ্ঠপোষকতা পেলে এই গ্রামটি গুরুত্বপূর্ণ পাখির অভয়ারণ্য হিসেবে পরিণত হবে বলে জানান চেয়ারম্যান বাড়ির লোকজন।

পাখিদের এই অভয়ারণ্য কত দিন ধরে আছে জানতে চাইলে চেয়ারম্যান বাড়ির পাখিপ্রেমী জিকরুল হক শাহ্ জানান,আমার বাপ-দাদার আমল থেকে দীর্ঘ যুগ ধরে আমাদের এ বাড়িটি চারপাশ ঘিরে পাথিদের অভয়ারণ্য। প্রতি বছরই অতিথি পাখিমুখরিত থাকে বাড়ীর চারপাশ। এখানে দিনে রাতে সব সময়ই পাখিরা অবস্থান করে। প্রতি বছরে শীতকালে পাখিদের বিচরণ দেখা গেলেও এবার বসন্তের শুরুতে পাখিদের বিচরণ অনেক বেশি ছিলো এবং এখন পযন্ত অসংখ্য পাখি আছে।পাখিগুলো দেখতে খুবই ভালো লাগে তাদের। এরা দিন-রাত প্রায় সব সময় কিচিরমিচির করলেও তাদের কোনো সমস্যা হয় না। পাখির এই অভায়ারণ্য দেখতে ছুটে আসে পাখিপ্রেমীরা।

খানসামা উপজেলা পরিষদের তিনবারের নির্বাচিত ভাইস চেয়ারম্যান ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান এটিএম সুজাউদ্দিন শাহ্ লুহিন বলেন, প্রতি বছর জানুয়ারী শেষে এখানে বিভিন্ন প্রজাতির অতিথি পাখির আগমণ ঘটে এবং জুলাই এর শেষের দিকে চলে যায়। তবে এবার এখন পযন্ত অসংখ্য পাখি আছে। তিনি আরো বলেন, বাপ- দাদার আমল থেকে দেখে আসছি আমাদের বাড়ির চারপাশে আমাদের নিজস্ব গাছ ও বাঁশঝারে অতিথি ও দেশী পাখিদের অভয়ারণ্য গড়ে তোলা হয়েছে। এখানে ওই পাখিরা নিরাপদ আশ্রয় থাকে আর এই এলাকায় ভুলেও কেউ পাখি শিকারের কথা চিন্তা করে না। কিন্তু বিল বা জমিতে যখন পাখিরা খাবার আহরণে যায়, তখন দুষ্ট প্রকৃতির কিছু মানুষ পাখি শিকার করে। যদি এটা বন্ধ করা যায় তাহলে এখানে পাখিদের আগমণ আরো বাড়বে। তিনি আরো বলেন, পাখিগুলো সরকারিভাবে সংরক্ষণ করা হলে খানসামা উপজেলায় এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ পাখির অভয়ারণ্য গ্রাম হিসেবে গড়ে উঠবে।

ভাবকি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রবিউল আলম তুহিন বলেন, সরকারি উদ্যোগে পাখি সুরক্ষার ও সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা প্রয়োজন। এই গ্রামের চেয়ারম্যান বাড়িকে পাখিদের অভয়াশ্রম হিসেবে গড়ে তুলতে উদ্যোগ নেয়া উচিৎ। এতে করে পরিবেশের উপর ইতিবাচক প্রভাব পড়বে এবং এলাকার মানুষজন বিভিন্ন প্রজাতির পাখিকে দেখে আনন্দিত হবে।

এ বিষয়ে বিভাগীয় বন প্রধান বশির উল আলম মুঠোফোনে এই প্রতিনিধিকে জানান, আসলে এটাতো মেসেজ দেওয়ার বিষয়। অনেক সময় আমাদের কেউ জানায়নি যার কারণে সারা বাংলাদেশে আমাদের সংকট আছে। ঠিক আছে, আপনি অনেক ভালো একটা ইনফরমেশন দিয়েছেন আমি বিষয়টা নিজে তদারকি করে দেখবো।

Facebook
Twitter
LinkedIn
WhatsApp
Tumblr
Telegram

বিভাগের জনপ্রিয় সংবাদ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *