যায়যায়কাল প্রতিবেদক : প্রায় ছয় বছর পরে দেশে ফিরেছেন দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমান।
আজ শুক্রবার সকালে তুরস্ক থেকে তিনি হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এসে পৌঁছান। এ সময় সহকর্মী ও শুভাকাঙ্ক্ষীরা তাকে অভ্যর্থনা জানান।
মাহমুদুর রহমান বলেন, ‘পরাজিত ফ্যাসিবাদ বিদেশে বসে তার বিদেশি প্রভু এবং বাংলাদেশের এজেন্টদের নিয়ে বিপ্লবকে নস্যাৎ করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে।’
উপস্থিত শুভাকাঙ্ক্ষীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আপনাদের কাছে আমার অনুরোধ, আপনাদের মধ্যে যেন কোনো অনৈক্য না আসে।’
তিনি জানান, বিগত আওয়ামী লীগ সরকার তার বিরুদ্ধে শতাধিক মামলা দায়ের করেছে।
‘আইনজীবী এখন পর্যন্ত ১০৭টি মামলার হিসাব আমাকে পাঠিয়েছে। আরও মামলা থাকতে পারে। সেই মামলার মধ্যে একটি উদ্ভট এবং বিচিত্র এক মামলায় আমাকে সাত বছরের সাজাও শুনিয়েছে সরকার,’ বলেন তিনি।
আমার দেশ সম্পাদক বলেন, ‘সেই মামলায় আমাদের বর্ষীয়ান সম্পাদক শফিক রেহমান সাহেবের সঙ্গে আমাকে জড়িয়েছে। শফিক ভাই খুব ভালো করেই জানেন যে, ওই মামলার সঙ্গে আমার বিন্দুমাত্র সম্পৃক্ততা নেই। তারপরও শেখ হাসিনা তার বিদ্বেষ চরিতার্থ করার জন্য আওয়ামী আদালত দিয়ে আমাকে সাত বছরের জেল দিয়েছে। এর বাইরেও আমার নামে গোটা পাঁচেক গ্রেপ্তারি পরোয়ানা অপেক্ষা করছে। আমার মায়ের অসুস্থতা এবং আমার সাজা ও গ্রেপ্তারি পরোয়ানা—এই পরিস্থিতি বিবেচনা করে আমি আজকে রাজনৈতিক বক্তব্য দেওয়া সমীচীন মনে করছি না।’
আগামীকাল পর্যন্ত হাসপাতালে মায়ের পাশে থাকতে চান জানিয়ে মাহমুদুর রহমান বলেন, ‘রোববার আমি নিম্ন আদালতে গিয়ে শেখ হাসিনার দেওয়া সাজা এবং গ্রেপ্তারি পরোয়ানার মোকাবিলা করব।’
আদালত থেকে তাকে কারাগারে যেতে হতে পারে এমন আশঙ্কা প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘সে রকম আশঙ্কায় আমি বিন্দুমাত্র বিচলিত নই। শেখ হাসিনার আমলে আমি পাঁচ বছর কারাগারে ছিলাম। এই আমলে পাঁচ মাস কারাগারে থাকতে আমার কোনো সমস্যা নাই। আমার বয়স হয়েছে, আমি বুড়ো হয়ে গেছি কিন্তু জেলে থাকার মতো মানসিক ও শারীরিক শক্তি এখনো আমার আছে।’
উপস্থিত শুভাকাঙ্ক্ষীদের উদ্দেশে তিনি আরও বলেন, ‘আপনারা এটা নিয়ে একদম বিচলিত হবেন না, উদ্বিগ্ন হবেন না। আইনকে তার রাস্তায় যেতে দিন, আমাকে আমার মতো করে লড়াই করতে দিন।’
তিনি আরও বলেন, ‘গত ১৬ বছর ধরে ফ্যাসিবাদী সরকারের বিরুদ্ধে আমি আমার মতো করে ব্যক্তিগত পর্যায় থেকে লড়াই করে গেছি। রাজনৈতিক দল বিএনপি-জামায়াত তাদের মতো করে লড়াই করেছে। আমি লড়াই করেছি আমার মতো করে, আমার দেশ পরিবারকে সঙ্গে নিয়ে।’