
চিংথোয়াই অং মার্মা, থানচি (বান্দরবান) প্রতিনিধি: বাংলাদেশের স্বাধীনতা ৫৪ বছরে এসেই বান্দরবানের থানচিতে সামাজিক, রাজনৈতিক, শিক্ষা, স্বাস্থ্য থেকে শুরু করে যোগাযোগ ও অবকাঠামোগত বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডের ভূমিদানে অবদানসহ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন, এমন ১০জন মরণোত্তর গুণীজনদের সম্মাননা দিয়ে সর্বস্তরের মানুষের প্রশংসার ও ইতিহাসের স্থান অর্জন করে নিলেন থানচি প্রেসক্লাবের সকল সদস্যরা। সর্বপ্রথম মরণোত্তর গুণীজনদের সম্মাননা প্রদানে পাহাড়ের ইতিহাসের স্থান গড়ায় সাংবাদিকদের প্রাণস্পন্দনে সংগঠন প্রেসক্লাবের ইতিবাচক কার্যক্রমগুলো নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আলোচনা ও সমালোচনা চলছে।
পাহাড়ে ১০ মরণোত্তর গুণীজনদের সম্মাননা প্রাপ্তদের মধ্যে আছেন– ১৯৮১ সালে উপজেলা নামকরণে পরে উপজেলায় প্রথম চেয়ারম্যান হিসেবে থানচির আপামর জনতার ভোটে নির্বাচিত হন- চন্দনাইসের খাগরিয়া গ্রামের বাসিন্দা মো: ইউছুপ। ১৯৮৪ থেকে ৮৯ পর্যন্ত সরকারি বেসরকারি বিভিন্নদপ্তরে কর্মকর্তা কর্মচারী বাসস্থান’সহ অবকাঠামো নির্মান উন্নয়নের অগ্রনী ভূমিকা রেখেছিলেন। তিনি ২০০৫ইং সালে পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করেন।
হেডম্যান বয়ক ম্রোঃ, তিনি ১৯৭৮ সালে ৩৬০নং কোয়াইক্ষ্যং মৌজায় প্রধান হেডম্যান হিসেবে প্রতিনিধিত্ব শুরু করেছেন। ১৯৮১ হতে ১৯৯৬ পর্যন্ত থানচিতে উপজেলা পরিষদ, থানা, বিজিবি ক্যাম্প, হাসপাতাল, হাট বাজারসহ নানান সরকারি বেসরকারি দপ্তরের স্থাপনাগুলোতে জমিদান করে বিভিন্নভাবে উন্নয়নের ভূমিকা ও অসামান্য অবদানের উৎস্বর্গ করে কৃতিত্ব অর্জন করে তিনি ২০০৭ সালে বার্ধক্যজনিত রোগের মারা যান।
সাতকানিয়া বাজালিয়া নিবাসী মংওয়ে: (মাহাজন) থানচি সদর ইউনিয়নের দুইবারের ইউপি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলেন। তিনি পাকিস্তান সরকারের টগর উৎপাদি প্রাপ্ত হয়ে অন্যরকম সমাজপতি হিসেবে অসামান্য অবদান ভূষিত হন। একইভাবে সাতকানিয়া উপজেলা নিবাসী অনিল কুমার বিশ্বাস। তিনি থানচি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন, উষামং হেডম্যান কলেজের জমিদাতা, মংসুইথোয়াই হেডম্যান বলিপাড়া বাজার উচ্চ বিদ্যালয়ের জমিদাতা, শৈক্যউ চেয়ারম্যান নাইক্ষ্যং পাড়া স্কুলের জমিদাতা, ঞয়হ্রাণ মারমা নাইদারী পাড়া স্কুল নির্মাণের উদ্যোগ ও নামকরণ, অনাথ শিশুদের অনাথ আশ্রম প্রতিষ্ঠাতার ভদন্ত উঃ ওয়াইমিন্দা মহাথের, ও প্রেসক্লাব প্রতিষ্ঠাতার করে গেছেন থানচি উপজেলা কৃতিত্ব সন্তান সাংবাদিক চবাথুই মারমা।
একদিকে থানচি প্রেসক্লাবের সদস্যদের ভাষ্যমতে, বাংলাদেশের স্বাধীনতা ৫৩ বছরে পরে ২০২৫ সালে এসেই সম্প্রতি প্রেসক্লাবের আয়োজনে বিএনকেএস ও হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশনে সার্বিক-সহযোগিতায় উপজেলা মাল্টিপারপাস হলরুমে প্রেসক্লাবের কার্যকরি নতুন কমিটির অভিষেক অনুষ্ঠানে মাধ্যমে উপজেলার কৃতিত্ব সন্তানদের ১০জন মরণোত্তর গুণীজনদের সম্মাননা, ১০জন জীবিত গুণীজনদের সংবর্ধনা ও ১০জন অতিথিদের শুভেচ্ছা স্মারক ক্রেস প্রদান করা হয়েছে।
অন্যদিকে ওই অনুষ্ঠানে মাধ্যমেই বিভিন্ন দপ্তরের উন্নয়ন ও ভূমিদান অবদানের কৃতিত্ব ১০ মরণোত্তর গুণীজন সম্মাননা প্রাপ্তদের ছবিসহ তাদের অবদানের বিবরণগুলো লিখন মাল্টিপারপাস হলরুমে টাঙিয়ে রাখার দাবিদার রাখেন। মরণোত্তর ১০ গুণীজনদের নামে সরকারি বেসরকারি অবকাঠামো ভবন, রাস্তা-সড়ক, মোড়, অলিগলি, ভবনের তাদের নামকরণ এবং পর্যটনস্পটগুলোতে এলাকার ঐতিহ্যের নামকরণের পার্বত্য পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা প্রশাসক বরাবরে দুইটি স্মারক লিপিতে গণস্বাক্ষর করে তাদের প্রতিনিধিদের মাধ্যমে হস্তান্তর করেছেন– প্রেসক্লাবের সদস্যবৃন্দ ও থানচিবাসী।
থানচি প্রেসক্লাবের সভাপতি মংবোওয়াংচিং মারমা (অনুপম) জানান, উপজেলার বিভিন্ন দপ্তরের উন্নয়ন ও ভূমিদান অবদানের ১০জন মরণোত্তর গুণীজনদের সম্মাননা প্রদানে ফলে পাহাড়ে ইতিহাসের স্থান অর্জনের লাভ করেছে থানচি প্রেসক্লাব। মরণোত্তর গুণীজনদের সম্মাননা দিয়ে প্রেসক্লাবের কার্যকলাপের ইতিবাচক সূচনীয়তার ভুমিকা রাখতে পেরেছি। থানচিবাসীদের সকলে মুখেরই প্রেসক্লাবের উদ্যোগের সাধুবাদ জানিয়ে প্রশংসার করেছেন। প্রেসক্লাবের এমন উদ্যোগ ভবিষ্যৎতেও অব্যাহত থাকবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মোঃ রাকিব হাসান চৌধুরী বলেন, মাল্টিপারপাস হলরুমে ১০ মরণোত্তর গুণীজনদের বিবরণ লিখন ও ছবি টাঙানো প্রেসক্লাবের দাবিদার পুরনে জন্য অনুষ্ঠানের উপস্থিত জেলা পরিষদের সদস্য খামলাই ম্রোঃ, সদস্য উবাথোয়াই মারমাসহ গণমান্য ব্যক্তিবর্গের তাদের সহমত পোষন ও সম্মতিজ্ঞাপন করে সংশ্লিষ্টদের উর্ধ্বতম কর্তৃপক্ষকে অনুমোদনের জানানো হবে।