মঙ্গলবার, ২৮শে মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ,১১ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

পীরগঞ্জে ব্যবসায়ীদের ফাঁসানোর অভিযোগ পুলিশের বিরুদ্ধে, মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ

মিফতাহুল ইসলাম, পীরগঞ্জ (রংপুর): রংপুরের পীরগঞ্জে কাঁচামাল আড়তদার ব্যবসায়ীদের আড়তে অভিযান চালিয়ে নগদ ৯৯ হাজার ৭’শ টাকা, ৬টি মোবাইল কেড়ে নিয়ে মারপিটের পর থানায় নিয়ে জুয়া মামলায় ফাঁসানোর অভিযোগ উঠেছে থানা পুলিশের বিরুদ্ধে।

এ ঘটনায় ব্যবসায়ী ও এলাকাবাসীরা জড়িত পুলিশ সদস্যদের শাস্তি সহ মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে মানববন্ধনের পর মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন।

মঙ্গলবার দুপুরে রংপুর-ঢাকা মহাসড়কের কলাবাগান (শুকানচৌকি) বাজারে মানববন্ধন শেষে মহাসড়কের এক দিকে যান চলাচল বন্ধ করে দিয়ে বিক্ষোভ করে।

এতে বক্তব্য রাখেন ভুক্তভোগি ব্যবসায়ী রাশেদুল ইসলাম, আবু তাহের, নালো মিয়া, স্থানীয় বাসিন্দা একরামুল হক, দেলোয়ারা বেগমসহ আরো অনেকে।

ভুক্তভোগী ব্যবসায়ীরা জানান, গত শুক্রবার পীরগঞ্জ থানা পুলিশের এসআই মশিউর ও এএসআই জুয়েল রানাসহ কয়েকজন পুলিশ সদস্য দিবাগত রাত দেড়টার দিকে ব্যবসায়ী রাশেদুল ও সাজু’র আড়তে প্রবেশ করে। সে সময়ে পিঁয়াজ ও মুখী কচুর বীজ লোড আনলোডে সেখানে ৭জন ব্যবসায়ী অবস্থান করছিল। পুলিশ সেখানে প্রবেশ করেই তল্লাশি চালায় এবং যার কাছে যা কিছু আছে দিয়ে দিতে বলে। এ সময় জোরপুর্বক আড়তদার রাশেদুল ইসলামের ১০৫০০, বাক্সে থাকা ৮৫০০, সাজু মিয়ার ১২৩০০, ব্যবসায়ী আবু তাহেরের ১৫৪০০, মিলন মিয়ার ১৩৭০০, বিলু মিয়ার ১৭৩০০, রবিউল ইসলামের ৭০০০, নালো মিয়ার ১৫০০০ টাকাসহ ব্যবহৃত মোবাইলগুলো কেড়ে নেয় এবং এলোপাথারি মারপিট আরাম্ভ করে। এক সময়ে নালো মিয়া কৌশলে পালিয়ে যায় এবং অসুস্থ হলে হাসপাতালে চিকিৎসা গ্রহন করে। পরে ৬জনকে আটক করে থানায় নিয়ে আসা হয় এবং জুয়া (তাস) খেলার অপরাধে জুয়াড়ী হিসেবে আদালতে শনিবার পাঠানো হয়। মামলায় জব্দ তালিকায় ৯৮৭০ টাকা উল্লেখ থাকলেও কেড়ে নেয়া অবশিষ্ট ৮৯৮৩০ টাকা ও মোবাইল ফেরত দেয়া হয়নি।

স্থানীয়রা জানান, ইদানিং পুলিশ বিভিন্ন ভাবে মানুষকে হয়রানি করছে। এলাকায় মাদকে ছড়াছড়ি, অথচ মাদক কারবারিদের গ্রেফতার না করে সেবন কারীদের মাঝে মধ্য গ্রেফতার করে থানায় নেয়ার পথে টাকার বিনিময়ে মাঝপথে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। রাশেদুল সহ ভুক্তভোগিরা এলাকার প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী, তাদের জুয়া মামলায় ফাঁসিয়ে টাকা মেরে দিয়েছে পুলিশ। দ্রæত মামলা প্রত্যাহার সহ কেড়ে নেয়া টাকা ফেরত সহ অন্যায়কারী পুলিশ সদস্যদের শাস্তির দাবী জানান। সড়ক অবরোধকালে মহাসড়কের এক পাশের্^ তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়।

এসআই মশিউর জানান, এলাকাবাসীর অভিযোগে জুয়া খেলার গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ওই ঘরে অভিযান পরিচালিত হয়। এখন তারা পুলিশের বিরুদ্ধে বানোয়াট, ভিত্তিহীন ও মিথ্যা তথ্য উপস্থাপন করছে।

এএসআই জুয়েল রানা জানান, তাস দিয়ে তারা জুয়া খেলা অবস্থায় হাতেনাতে গ্রেফতার হয়। ভিডিও ফুটেস সংরক্ষিত আছে। টাকার পরিমান যা ছিল তা জব্দ তালিকায় দেখানো হয়েছে। বাড়তি টাকার বিষয়টি সত্য নয়।

ওসি এমএ ফারুক জানান, জুয়া খেলার অপরাধে এসআই মশিউর ও এএসআই জুয়েল রানা এদের গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে আসে। জুয়া আইনে নিয়মিত মামলার পর তাদের আদালতে পাঠানো হয়। পুলিশ সদস্যরা কোন অপরাধ করলে দায়ভার নিবো না, বরং শাস্তির ব্যবস্থা করবো।

পুলিশ সুপার আবু সাইম জানান, জুয়া বর্তমানে সমাজে ছড়িয়ে পড়েছে, পুলিশ জুয়ার বিরুদ্ধে অপারেশন চালিয়েছে।

Facebook
Twitter
LinkedIn
WhatsApp
Tumblr
Telegram

, বিভাগের জনপ্রিয় সংবাদ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

যায়যায়কাল এর সর্বশেষ সংবাদ