মো. মাহফুজুর রহমান বিপ্লব, ফরিদপুর: ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলায় মাত্র ৩৫ টাকা চুরির অপরাধে মেয়েকে শ্বাসরোধে হত্যা করায় মো. হারুন শেখ (৩৭) নামে এক ব্যক্তিকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। একই সাথে ২০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে দুই মাস বিনাশ্রম কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে।
দণ্ডপ্রাপ্ত পিতা হারুন শেখ মধুখালী উপজেলার ভুষণা লক্ষ্মণদিয়া গ্রামের বাসিন্দা। সোমবার বিকেলে আসামির উপস্থিতিতে ফরিদপুরের অতিরিক্ত দায়রা জজ প্রথম আদালতের বিচারক অশোক কুমার দত্ত এ রায় ঘোষনা করেন। পুলিশ তাকে ফরিদপুর জেলা কারাগারে পাঠানো হয়।
আদালতের সরকারি কৌঁসুলি নওয়াব আলী মৃধা জানান, দন্ডিত হারুন শেখ দুটি বিবাহ করেন। তার প্রথম স্ত্রীর বড় সন্তান ১০ বছর বয়সী মেয়ে মাকসুদা আক্তার ওরফে হীরা তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল।
২০১৭ সালের ২৭ জুলাই মাকসুদা তার বাবা হারুনের পকেট থেকে ৩৫ টাকা চুরি করে স্কুলে যায়। ওইদিন দুপুরে হারুন মাঠ থেকে কাজ করে বাড়িতে এসে জামার পকেটে টাকা খুঁজে না পেয়ে মাকসুদা স্কুল থেকে আসার পর তার কাছে টাকা নেওয়ার কথা জানতে চাইলে মেয়ে অস্বীকার করে। ক্ষুব্ধ হারুন শেখ তাকে মারধর করলে জ্ঞান হারিয়ে ফেলে মাকসুদা। পরে হারুন মেয়ের গলায় ওড়না পেচিয়ে শ্বাসরোধে হত্যার পর লাশ ঘরের মাচায় রেখে দেয়। এ ঘটনা মাকসুদার ভাই আট বছরের শোয়ায়েব দেখে শোয়েব চিৎকার দিলে হারুন পালিয়ে যায়। পরে এলাকাবাসী মাকসুদাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় ওইদিনই মাকসুদার নানা মো. লিয়াকত শেখ বাদি হয়ে মধুখালী থানায় হারুন শেখকে একমাত্র আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মধুখালী থানার এসআই মো. মনিরুজ্জামান ২০১৭ সালের ২৭ ডিসেম্বর মাকসুদাকে হত্যার দায়ে বাবা হারুন শেখকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন। দীর্ঘ শুনানি এবং সাক্ষ্য ও প্রমাণ শেষে আদালত সোমবার এ রায় দেন।