আতিকুর রহমান, কুড়িগ্রাম উত্তর : ব্রহ্মপুত্রের পর দুধকুমার ও ধরলার পানি বিপদসীমা অতিক্রম করায় কুড়িগ্রামের সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়ে পানিবন্দি হয়েছে আট উপজেলার ৪২ ইউনিয়নের লাখো মানুষ। প্লাবিত হওয়ায় ৩৮০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠদান ও পরীক্ষা স্থগিত করেছে শিক্ষা বিভাগ।
কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসনের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা শাখার প্রতিবেদন বলছে, শনিবার বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়ে জেলার আট উপজেলার ৫৩২ দশমিক ৩২ বর্গকিলোমিটার এলাকা প্লাবিত হয়েছে। সরকারি হিসাবে ৮৪ হাজার ২৫২ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।
শিক্ষা বিভাগ বলছে, বন্যায় জেলার ২৯০টি প্রাথমিক, ৭৯টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ৩৬টি মাদ্রাসা এবং ছয়টি কলেজ প্লাবিত হয়েছে। এর মধ্যে ২৬৫টি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও ছয়টি কলেজে পাঠদান বন্ধ রাখা হয়েছে। এ ছাড়া ৭৯টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও ৩৬টি মাদ্রাসায় চলমান ষাণ্মাসিক পরীক্ষা বন্ধ রাখা হয়েছে। আটটি মাধ্যমিক ও ৩২টি প্রাথমিক বিদ্যালয় আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে।
কুড়িগ্রাম জেলা শিক্ষা অফিসার শামসুল আলম বলেন, ‘শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পানি প্রবেশ করায় এবং আশ্রয়কেন্দ্র খোলার কারণে পাঠদান বন্ধ ও মাধ্যমিক পর্যায়ের বিদ্যালয়গুলোতে ষাণ্মাসিক পরীক্ষা স্থগিত রাখা হয়েছে। ওসব বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন পদ্ধতি পরবর্তীতে জানানো হবে।’
কুড়িগ্রাম জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নিয়ন্ত্রণ কক্ষ জানায়, ব্রহ্মপুত্রের সঙ্গে ধরলা ও দুধকুমার নদের পানিও বিপদসীমা অতিক্রম করেছে। শনিবার দিনভর ব্রহ্মপুত্রের পানি সামান্য কমলেও এখনও বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সন্ধ্যা ৬টায় এই নদের পানি চিলমারী পয়েন্টে বিপদসীমার ৭০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে, নুনখাওয়া পয়েন্টে ৫৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে এবং হাতিয়া পয়েন্টে ৬৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে বইছে। একই সময়ে ধরলার পানি বৃদ্ধি পেয়ে কুড়িগ্রাম সেতু পয়েন্টে বিপদসীমার ১৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে এবং দুধকুমার নদের পানি বৃদ্ধি পেয়ে পাটেশ্বরী পয়েন্টে বিপদসীমার ৪০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে।