
মো. মাহফুজুর রহমান বিপ্লব, ফরিদপুর : ফরিদপুর সদর উপজেলার কৈজুরী ইউনিয়নে বিদ্যুৎতের মিটার থেকে অবৈধভাবে বিদ্যুৎ চুরি ধরিয়ে দেওয়ায় সাংবাদিকসহ তার পরিবারের লোকজন হামলা শিকার হয়েছেন।
আহত রবিউল হাসান রাজিব দৈনিক মুক্ত কন্ঠ ও মর্নিং গ্লোরি ফরিদপুর জেলা প্রতিনিধি হিসাবে কর্মরত রয়েছেন। এই বিষয়ে ফরিদপুর কোতায়ালি থানায় অভিযোগ দিয়েছেন সাংবাদিক রাজিব।
রাজিব বলেন, আমার বাড়ির পাশে জামাল মল্লিক গং দীর্ঘদিন যাবত ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক, অটোরিকশা ভ্যান চার্জ দেয়ার ব্যবসা করে আসছেন। তারা সেখানে প্রতিদিন ৪০/৫০ টি অটোরিকশা চার্জ দেন। অভিযোগ উঠে তারা মিটার কারসাজি করে বিদ্যুৎ বিল কম দিয়ে আসছেন। ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত হয়ে বিয়ষটি বিদ্যুত বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসনকে বিষয়টি অবহিত করি।
তিনি আরও বলেন, পরে বিদ্যুৎ বিভাগের লোকজন ঘটনাস্থলে এসেও ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত হন এবং অভিযুক্তদের অফিসে ডেকে নেন। সেখানে উপস্থিত বেশ কয়েকজন সাংবাদিক ছিলেন। অভিযুক্তরা গত ১ জুলাই বিদ্যুৎ অফিসে হাজির হয়ে মুচলেকা দিয়ে আসে।
অভিযুক্তকারীরা মুচলোকা দিয়ে বাড়ি আসার পরে থেকে বিভিন্নভাবে আমাকে হুমকি দামকি দিতে থাকে। এবং এলাকার বিভিন্ন লোকজনের কাছে সহ বিভিন্ন জায়গায় বলে চলছে তারা যা খুশি তাই করবে আমি বলার কে। কেন আমি প্রতিবাদ করলাম, এটাই আমার অপরাধ- বলেন রাজিব।
রাজিব আর ও জানান, গত ২ জুলাই আমার বাড়ির সামনে ইউপি সদস্য রাহাতুল হাসানের সাথে কথা বলছিলাম। এ সময় অতর্কিত অভিযুক্ত জামাল মল্লিক, রাজ্জাক মল্লিক, ইমরান মল্লিক, সাহিদ মল্লিক, সাকিব মল্লিক, নাছিমা বেগমসহ আরো ৫/৬ জন লাঠিসোটা নিয়ে আমার ওপর হামলা করে। এ সময় আমার স্ত্রী তানিয়া আক্তার এগিয়ে আসলে তাকেও মারপিট করে। শুধু তাই নয় আমার ৬ বছরের কন্যা রাফিয়া তাসনিম আমাকে বাবা বলে জড়িয়ে ধরে কান্নাকাটি করলে তাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়।
রাজিব বলেন, ঘটনার সময় ভিডিও করতে গেলে স্ত্রীর মোবাইল ছিনিয়ে নেয় হামলাকারীরা। পরে ইউপি সদস্য মোবাইল ফোন উদ্ধার করে ফেরত দেয়। আমার চিৎকারে আশেপাশের বাড়ির লোকজন বের হয়ে আসে। হামলাকারীদের হাত থেকে আমাকে উদ্ধার করে ফরিদপুর জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানেই প্রাথমিক চিকিৎসা নেই আমি।আমিসহ আমার পরিবার নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।
স্থানীয় ইউপি সদস্য রাহাতুল হাসান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, ঘটনা আমার উপস্থিতিতেই হয়েছে। জামাল মল্লিক আমার কাছে নালিশ দিয়েছিল যে সে বিল দেক বা না দেক, রাজিবের এইটা নিয়ে মাথা ব্যাথা কেন? তুমি এইটা দেখ নইলে রাজিবকে মারবো। তখন আমি বলছি, মারামারির দরকার নেই, আমি দেখতেছি। আমি তখন রাজিবকে বাড়ির সামনে ডেকে নিয়ে এই ব্যাপারে কথা বলতেছিলাম। ওই সময়েই জামাল মল্লিক, তার ছেলে ও শ্যালকরা মিলে ঘিরে ধরে ঘটনাটা ঘটায়।
ফরিদপুর কোতয়ালী থানার অফিসার ইনচার্জ হাসানুজ্জামান জানান, তারা অভিযোগ পেয়েছেন। এই ব্যাপারে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।