
ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি: ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা পরিষদ নির্বাচনে জোর করে বিজয় ছিনিয়ে নেয়ার আশঙ্কা ব্যক্ত করেছেন স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী, সাবেক জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শফিকুল আলম এমএসসি।
আওয়ামী লীগ প্রার্থী আল মামুন সরকারের এই অবৈধ তৎপরতার বিষয়টি এখন ওপেন সিক্রেট বলে শনিবার ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেস ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করেন তিনি। বলেন- দলীয় প্রভাব খাটিয়ে জোর করে কেন্দ্র দখল এবং ভোটারদের ভয়-ভীতি দেখিয়ে তার নিশ্চিত বিজয়কে ছিনিয়ে নেয়ার পাঁয়তারা করছেন আল মামুন সরকার। সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য তিনি নির্বাচন কমিশনের পাশাপাশি সাংবাদিকদের সহযোগিতা কামনা করেন ।
শফিকুল আলম অভিযোগ করেন, আল মামুন সরকার আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হয়ে প্রকাশ্যে গ্রুপিং সৃষ্টি করে দলে বিভক্তি তৈরি করেছেন। আমি ২০১৭ সালে জেলা পরিষদে জনপ্রতিনিধিদের ভোটে নির্বাচিত প্রথম চেয়ারম্যান। কিন্তু আমাকে বিদ্রোহী প্রার্থীর তকমা দিয়ে দলীয় পদ-পদবি থেকে শুরু করে সকল রাজনৈতিক কর্মকা- থেকে বঞ্চিত করেছেন মামুন। শুধু তাই নয়, ২১শে ফেব্রুয়ারি আর্ন্তজাতিক মাতৃভাষা দিবস, ২৬শে মার্চ মহান স্বাধীনতা দিবস, ১৫ই আগস্ট জাতীয় শোক দিবসে দলীয় অনুষ্ঠানে আমাকে লাঞ্ছিত করেও তিনি ক্ষান্ত হননি, ২০১৯ সালের ১৬ই ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবসে জেলা পরিষদে আয়োজিত মুক্তিযোদ্ধা সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে হামলা করান তার সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে। এসময় জাতির পিতা এবং প্রধানমন্ত্রীর ছবি সম্বলিত ব্যানার ও পোস্টার ভুলুন্ঠিত করা হয়। এই ঘটনার পর উল্টো আমার বিরুদ্ধে আইসিটি আইনে মামলা করেন তিনি। তার পরিকল্পিত হামলার শিকার হয়েছেন আমার ছোট ভাই বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মো. শাহআলম।
আল মামুন সরকার বিগত উপজেলা পরিষদ ও ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে কোটি কোটি টাকার মনোনয়ন বাণিজ্যের মহানায়ক বলে অভিযোগ করেন শফিকুল আলম। এছাড়া ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভায় অটোরিকশা ও ইজিবাইকের অবৈধ লাইসেন্স প্রদানের মূল হোতা বলেও তাকে অভিযুক্ত করেন শফিকুল আলম।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ফলিত বিদ্যায় এমএসসি ডিগ্রীধারী শফিকুল আলম ছাত্রজীবনে বিশবিদ্যালয় হল শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি ছিলেন। পরবর্তীতে জেলা আওয়ামী লীগে ২০১৪ সাল পর্যন্ত সহ-সভাপতি পদে ছিলেন। রাজনীতির পাশাপাশি ব্যবসায় জড়িত শফিকুল একজন মুক্তিযোদ্ধাও।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মুক্তিযোদ্ধা লিয়াকত আলী সর্দার, ইউপি সদস্য মো: শাহিনুর হাবিব শামীম ও মো: কিবরিয়া, এলাই মিয়া ও শফিকুল আলমের ছোট ভাই শাহ আলম প্রমুখ।
তবে আল মামুন সরকার সাংবাদিক সম্মেলনে শফিকুল আলমের দেয়া বক্তব্যকে মিথ্যা, ভিত্তিহীন এবং মানহানিকর বলে দাবি করেন আল মামুন সরকার। স্থানীয় সংবাদপত্রগুলোতে পাঠানো প্রতিবাদে তিনি বলেন- জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান হিসেবে শফিকুল আলম বিগত ৫ বছর তার দায়িত্ব পালনে ব্যাপক দুর্নীতি ও অনিয়ম এবং অযোগ্যতা ও ব্যর্থতাকে ধামাচাপা দেয়ার অপচেষ্টা হিসেবে আমার বিরুদ্ধে চরম মানহানিকর বক্তব্য দিয়েছেন। এ ব্যাপারে শিগগিরই আমি আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।