
মিনহাজ আলী, শিবগঞ্জ (বগুড়া): বগুড়ার শিবগঞ্জে ভাতা কার্ড দেওয়ার নাম করে লাখ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে আব্দুল আলিম মন্ডল নামে এক দাপুটে যুবলীগ নেতার বিরুদ্ধে।
আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে দলীয় প্রভাব খাটিয়ে যে অন্যায় দুর্নীতি করেছেন, এখনো যেন তার ব্যতিক্রম নয়। তার দাপটে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে এলাকাবাসী। আব্দুল আলিম উপজেলার দেউলী ইউনিয়নের ভরিয়া পশ্চিম পাড়া গ্রামের মৃত মছির উদ্দিনের ছেলে। তিনি ৪নং ওয়ার্ডের যুবলীগের সভাপতি।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, যুবলীগ নেতা আব্দুল আলিম আওয়ামী লীগের শাসনামলে অসহায়, দরিদ্র পরিবারের কাছ থেকে বয়স্ক, বিধবা, পঙ্গু, মাতৃত্বকালীন ভাতা ও পারিবারিক রেশন কার্ড করে দেওয়ার কথা বলে ৮ থেকে ১০ হাজার করে টাকা নিয়েছেন। তিনি টাকা নিয়ে ভাতা কার্ড না করে দিয়ে ওই টাকা আত্মসাৎ করেছেন। টাকা চাইতে গেলে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ ও মারধরের হুমকি ধামকি দেন বলে অভিযোগ ভুক্তভোগীদের।
ভরিয়া পশ্চিম পাড়া গ্রামের মৃত মাহাবুলের স্ত্রী পেয়ারা বেগম(৬০) নামে এক ভুক্তভোগী জানান, বিশ বছর আগে আমার স্বামী মারা যান। তারপর পরিবারে আয় রোজগার করার মত কেউ না থাকায় সংসারে অভাব অনাটন পড়ে যায়। এক ছেলে ও এক মেয়েকে নিয়ে অনেক কষ্ট করে সংসার চালাই। এমতাবস্থায় যুবলীগের সভাপতি আলিম বিধবা ভাতার কার্ড করে দেয়ার জন্য ৭ হাজার টাকা নেন। তিন বছর আগে হাসিনা সরকার থাকতে আলিম এই টাকা নিয়েছেন একটা বিধবা কার্ড করে দেয়ার কথা বলে। এখনো কার্ড করে দেননি, টাকাও ফেরত দেননি। টাকার কথা বললে বিভিন্ন টালবাহানা করেন। আবার বলেন যে, এখন তো আওয়ামীলীগ সরকার নাই। সরকার আবার আসুক তারপর কার্ড করে দিবো।
একই এলাকার মৃত হেদায়েতুল ইসলামের স্ত্রী হাওয়া বেগম(৫৫) জানান, আব্দুল আলিম বিধবা ভাতার কার্ড করে দেয়ার কথা বলে তিন বছর আগে আমার থেকে টাকা নিয়েছেন। পরে আর কার্ড করে দেয়নি। সেই টাকা ফেরত চাইতে গেলে নানা টালবাহানা দেখিয়ে দিনের পর দিন ঘুরাচ্ছেন। আবার বলেন যে, টাকা নেয়ার কোনো প্রমাণ নাই। টাকা দিতে পারবো না। কিভাবে আদায় করবেন করিয়েন।
এই ভুক্তভোগী আরও জানান, সম্প্রতি একদিন রাস্তায় আলিমের সাথে দেখা হলে আমি তাকে টাকার কথা বলি। তখন তিনি আমাক মারার জন্য তেড়ে আসেন এবং ধাক্কা দিয়ে রাস্তার ওপর ফেলে দেন।
যুবলীগের সভাপতি আব্দুল আলিমের বিরুদ্ধে এমন আরও অভিযোগ করেন ওই এলাকার মৃত মোবারক গাছুর ছেলে আব্দুল হাই গাছু(৭২) ও মৃত কাবেজ উদ্দিনের ছেলে বাবলু প্রামাণিক(৭০)।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত আব্দুল আলিম বলেন, যেহেতু সরকার পরিবর্তন হইছে কার্ড আর করে দিতে পারবো না। এক সপ্তাহের মধ্যে তাদের টাকা ফেরত দেবো।
শিবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জিয়াউর রহমান জানান, এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।