এ এম আব্দুল ওয়াদুদ, শেরপুর: খেলাফত প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে, গণ আন্দোলন গড়ে তুলুন। ধর্ম-বর্ণ ভিন্নমত সবার জন্য খেলাফত এ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে এবং ছাত্র-জনতার বিপ্লবে সংঘটিত গণহত্যার বিচার ও নৈরাজ্যবাদের বিরুদ্ধে গণজাগরণ সৃষ্টির লক্ষ্যে শেরপুরে এক গণসমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার সকাল ১১ টায় শেরপুর শহরের পৌর ঈদগাহ মাঠে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস শেরপুর জেলা শাখার আয়োজনে ওই গণসমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন প্রধান অতিথি বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মাওলানা মুহাম্মদ মামুনুল হক।
এসময় তিনি বলেন, গত ৫ আগস্ট এদেশের মানুষের ভাষায় দ্বিতীয় স্বাধীনতা অর্জন করেছে। এই স্বাধীনতা অর্জন করতে গিয়ে এদেশের মানুষের অনেক ত্যাগ শিকার করতে হয়েছে। অনেক জুলুম নির্যাতন সহ্য করতে হয়েছে। বছরের পর বছর কারারুদ্ধ, গুম-খুনের শিকার হতে হয়েছে। অনেক মা তার সন্তানকে হারিয়েছে। একমাত্র বাংলাদেশের ইতিহাসে স্বৈরাচারি শেখ হাসিনার একদলীয় শাসন আমলে অনেক গণহত্যা সংঘটিত হয়েছে। এছাড়াও পিলখানায় ৫৭ জন সেনা হত্যা, শাপলা চত্বরে হেফাজতের নেতাকর্মী হত্যা, মিথ্যা মামলায় আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়াসহ অনেক কোরআন প্রেমীদের পাখির মতো হত্যা করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ সম্প্রীতির দেশ, এখানে হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান-মুসলমানসহ সকল ধর্মের মানুষ মিলেমিশে বসবাস করবে, তাদের সকল অধিকার ভোগ করবে। যার যার ধর্ম তারা নির্বিঘ্নে পালন করবে বাধা দেয়ার কোনো সুযোগ নেই। শেখ হাসিনার সময়ে সংখ্যালঘুদের উপর নির্যাতন করা হতো। এখন শেখ হাসিনা সরকার নাই, সংখ্যালঘুদের উপর নির্যাতনও নাই। সংখ্যালঘুদের নির্যাতনের পিছনে শেখ হাসিনা ও তার দোসরদের হাত ছিল। স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার সরকার ও তার দোসররা বাংলাদেশের রাষ্ট্রে পুনর্বাসিত করা হলে এ দেশের মানুষ তা মানবে না। বাংলাদেশে স্বাধীনতা অর্জিত হয়েছিল ইনশাআল্লাহ বলার মধ্যে দিয়ে। ইনশাআল্লাহ বলার মানে হল মহান আল্লাহ উপর আস্থা বিশ্বাস রাখার মধ্যে দিয়ে শুরু হয়েছিল বাংলাদেশের স্বাধীনতার সংগ্রাম। কিন্তু এ দেশে শেখ হাসিনা ইসলামকে বিতারিত করার পাঁয়তারা করেছিল। ছাত্রজনতা তা প্রত্যাখ্যান করেছে।
এছাড়াও তিনি আরও বলেন, সমকামীদের নিয়ে শিক্ষা কমিশন গঠন করা হয়েছে, ওই শিক্ষা কমিশনকে বাতিল করতে হবে। তা না হলে ওই শিক্ষা কমিশনের বিরুদ্ধে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তোলা হবে। কোরআন হাদিসের প্রতিনিধি শিক্ষা কমিশনে রাখতে হবে। সর্বজনগৃহীত শিক্ষা কমিশন গঠন করতে হবে। বাংলাদেশের কোনো আইনেই ইসলামবিরোধী কোনো ধারা মেনে নেয়া হবে না। আমরা ইসলামবিরোধী সকল কার্যক্রমের মোকাবেলা করতেছি। তিনি ইসলাম রক্ষায় ওয়ার্ড থেকে শুরু করে সর্বস্তরে খেলাফতের সাথে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান।
বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস শেরপুর জেলা শাখার সভাপতি মাওলানা শফিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের যুগ্ম-মহাসচিব মাওলানা জালাল উদ্দিন আহমদ, মাওলানা আতাউল্লাহ আমীন, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা আবুল হাসানাত জালালী, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের সহ-বাইতুল মাল সম্পাদক মাওলানা ফজলুর রহমান, বাংলাদেশ ছাত্রশিবিরের সাবেক সভাপতি রাশেদুল ইসলাম রাশেদ, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস শেরপুর জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক। এছাড়াও শেরপুর জেলার খেলাফত মজলিসের শতশত নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
গণসমাবেশ শেষে বিভিন্ন সময়ে আন্দোলনে এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহীদদের রূহের মাগফেরাত কামনাসহ আহতদের সুস্থতা দানে এবং দেশে শান্তি সমৃদ্ধি কামনায় মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়।