মো. মনজুর রহমান, নাটোর: নাটোরের লালপুরে শ্যালিকাকে ধর্ষণের দায়ে দুলাভাই মো. জাহেদুল ইসলাম ওরফে জারেদকে (৩২) যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করে ভিকটিমকে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
সোমবার বেলা ১১টার সময় নাটোর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ) মুহাম্মদ আব্দুর রহিম এ আদেশ দেন। এ সময় আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত জাহেদুল ইসলাম ওরফে জারেদ জেলার লালপুর উপজেলার আব্দুলপুর (পূর্ব পাড়া) গ্রামের মো. আব্দুল মজিত প্রামাণিকের ছেলে। আর ভিকটিম একই উপজেলার সুন্দরগাড়া গ্রামের মেয়ে।
নাটোর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাব্যুনালের স্পেশাল পাবলিক প্রসিকিউটর (বিশেষ পিপি) অ্যাডভোকেট মো. আনিসুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, ২০০৬ সালে জেলার আব্দুলপুর পূর্বপাড়া গ্রামের জাহেদুল ইসলাম ওরফে জারেদের সঙ্গে একই উপজেলার সুন্দরগাড়া গ্রামের জমসেদ আলীর বড় মেয়ে শাপলা খাতুনের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে শ্বশুরবাড়িতে আসার-যাওয়ার এক পর্যায়ে শ্যালিকা পপি খাতুনের (১৪) ওপর কুনজর পড়ে তার। এমনকি বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে শ্যালিকার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন দুলাভাই জাহেদুল ইসলাম। পাশাপাশি বিভিন্ন সময় অবৈধভাবে শারীরিক সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন তারা। পরবর্তীকালে ২০২১ সালের ১৫ মার্চ সকাল ১০টার সময় বাড়ির লোকজনের অনুপস্থিতিতে পপি খাতুনকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে অপহরণ করে কুষ্টিয়া এলাকায় জাহেদুল তার এক চাচাতো ভাইয়ের বাড়িতে নিয়ে যান। সেখানে পপির ইচ্ছার বিরুদ্ধে ধর্ষণ করেন দুলাভাই জাহেদুল ইসলাম। বিষয়টি জানাজানি হলে সেখান থেকে তাকে উদ্ধার করেন স্বজনরা।
পরে এ ঘটনায় ১৬ মার্চ ভিকটিমের বাবা জমসেদ আলী বাদী হয়ে লালপুর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে জামাতা মো. জাহেদুল ইসলামকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলাটি লালপুর থানার তৎকালীন পরিদর্শক (ইন্সপেক্টর) হীরেন্দ্রনাথ প্রামাণিক তদন্ত শেষে জাহেদুলকে অভিযুক্ত করে একই বছরের ২৯ মে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। ওই মামলার দীর্ঘ শুনানি ও সাক্ষ্য প্রমাণ শেষে বিচারক আজ এ রায় দেন। রায় শেষে দণ্ডপ্রাপ্ত জাহেদুল ইসলাম ওরফে জারেদকে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়।