
মো. সেলিম উদ্দিন, চট্টগ্রাম: ‘আমি আ’লীগ নেতা, আমাদের কোনো দলিল লাগে না। আমাদের মুখের কথায় হচ্ছে দলিল।ফের জায়গায় আসলে লাশ ফেলে দিব। এভাবেই এক ব্যবসায়ীকে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে চট্টগ্রামের কর্ণফুলী উপজেলার চরলক্ষ্যা ইউনিয়ন পরিষদের ১নং ওয়ার্ডের ইউপি ও আওয়ামী লীগ নেতা জি এম আনু মিয়ার বিরুদ্ধে।
গত ২৮ অক্টোবর বিকালে কর্ণফুলী থানায় আওয়ামী লীগ নেতা জি এম আনু মিয়া ও তার দুই ভাইয়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন মো: নজরুল ইসলাম নামের এক ব্যবসায়ী।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, গত ০৫/০৬/২৪ ইং তারিখ বিকাল চারটার দিকে ভুক্তভোগী নজরুল ইসলাম শ্রমিকদের নিয়ে তার মালিকানাধীন জায়গায় কাজ করতে গেলে ১নং অভিযুক্ত আওয়ামী লীগ নেতা ও ইউপি সদস্য জি এম আনু মিয়া আমার শ্রমিকদের কাজে বাধা প্রধান করেন। এবং ২নং ও ৩নং অভিযুক্ত তার ভাইদের সাথে নিয়ে আমি এবং আমার শ্রমিকদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে অতর্কিত হামলা চালায়। এক পর্যায়ে আমাদের চিৎকার শুনে আশপাশের লোকজন ছুটে আসলে হামলাকারীরা এরপর জায়গায় আসলে আমাদের প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।
পরে আমি নিরুপায় হয়ে স্থানীয় ব্যক্তিবর্গের নিকট বিচার চাইতে গেলে অভিযুক্ত আনু মিয়া সকলের সামনে হামলার বিষয়ে অস্বীকার করে ৫লক্ষ্য টাকা চাঁদা দাবি করে,অন্যতায় আমাকে ও আমার পরিবার’কে প্রাণে মারার হুমকি প্রধান করেন।
অভিযোগ সূত্রে আরও জানা যায়, সবশেষ গত ১৫/০৪/২৪ ইং তারিখ সকাল ১০টার দিকে ভুক্তভোগী নজরুল ইসলাম ফের শ্রমিকদের নিয়ে তার মালিকানাধীন জায়গায় কাজ করতে গেলে ১নং অভিযুক্ত আনু মিয়া ওই জায়গায় তার অংশ রয়েছে বলে আবারও শ্রমিকদের কাজে বাধা প্রধান করেন। এবং ফের ৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। আমি টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে আমাকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে দিয়ে জায়গা জবর-দখল করে জোরপূর্বক বিক্রি করে দেওয়ার হুমকি দেন। অভিযুক্তকে আমি জায়গার কাগজপত্র দেখাইতে বললে আনু মিয়া সজোরে চিৎকার করে বলেন, ‘আমি আ’লীগ নেতা, আমাদের কোন দলিল লাগে না। আমাদের মুখের কথায় হচ্ছে দলিল। ফের জায়গায় আসলে লাশ ফেলে দিব।’ বলে জনসম্মুখে আমাকে প্রাণে মারার হুমকি দিয়ে যান।
এতে আমি নিরুপায় হয়ে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের কাছে বিচার দিলে চেয়ারম্যান একটি সালিশি কমিটি গঠন করে দেয়। এবং নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে দাবির স্বপক্ষে প্রমাণ তথা দলিলপত্র জমা দেওয়ার কথা বলেন। আমি জায়গার সকল কাগজপত্র জমা দিলেও অভিযুক্ত জি এম আনু মিয়া নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কোনো কাগজপত্র জমা দিতে পারেন নাই।
সবশেষ, ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মুখে শেখ হাসিনা তথা আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হলে অভিযুক্ত আওয়ামী লীগ নেতারা আত্মগোপনে চলে গেলেও থেমে নেই তাদের অপকর্ম, দখল বাণিজ্য ও চাঁদাবাজি। এখনো আগের মতোই সরব রয়েছে কর্ণফুলীর একাধিক আওয়ামী লীগ ও তার অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা।
নেতারা আত্মগোপনে থেকে তাদের পালিত দোসরদের মাধ্যমে বিভিন্ন জায়গায় এখনো জবর দখল, অবৈধ ব্যবসা-বাণিজ্য ও চাঁদাবাজির মত বিভিন্ন অপরাধ কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছেন বলে একাধিক সূত্রে উঠে এসেছে।