
মো. রমিজ আলী, সীতাকুণ্ড (চট্টগ্রাম): বিশ্ব রক্তদাতা দিবস উপলক্ষে দিশারী ব্লাড বন্ড ও দিশারী মিডিয়া সেল-এর আনুষ্ঠানিক আত্মপ্রকাশ ঘটে এক ব্যতিক্রমী মানবিক আয়োজনের মধ্য দিয়ে।
সীতাকুণ্ড সিকিউর সিটি প্রাঙ্গণে আয়োজন করা হয় রক্তের গ্রুপ নির্ণয় ও খাবার বিতরণ কর্মসূচি। যেখানে শতাধিক তরুণ-তরুণী স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করেন।
এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে দিশারী যুব ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ। সহযোগিতায় ছিল সীতাকুণ্ড এর কেয়ার হাসপাতাল।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন দিশারী যুব ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ-এর চেয়ারম্যান ও অতিরিক্ত জেলা পাবলিক প্রসিকিউটর লায়ন এডভোকেট মোঃ সরোয়ার হোসাইন লাভলু।
তিনি বলেন, আজকের দিনে আমরা শুধু দুটি ইউনিটের উদ্বোধন করছি না, বরং মানবতার সেবায় তরুণদের সক্রিয় অংশগ্রহণ নিশ্চিত করছি। আমাদের লক্ষ্য প্রতিটি মানুষের জন্য প্রয়োজনের সময় রক্ত নিশ্চিত করা এবং সমাজে সহানুভূতির সংস্কৃতি গড়ে তোলা।
অনুষ্ঠানে অতিথি সীতাকুণ্ড পৌর ব্যবসায়ী সমিতির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সালেহ্ আহমদ সলু বলেন, আজকের এই মানবিক আয়োজনে আমি গভীরভাবে অনুপ্রাণিত। দিশারী যুব ফাউন্ডেশন শুধু একটি সংগঠন নয়—এটি একটি স্বপ্নযাত্রা, যেখানে সমাজ ও মানুষের কল্যাণকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হয়।
অনুষ্ঠানে অতিথি সীতাকুণ্ড পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর ও ব্যবসায়িক সমিতির উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্য এ কে এম শামসুল আলম আজাদ বলেন, এ ধরনের সামাজিক উদ্যোগ যুব সমাজের জন্য অনুপ্রেরণার উৎস। দিশারীর এই পদক্ষেপ শুধু রক্তদানের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, এটি জনসচেতনতা বৃদ্ধির ক্ষেত্রেও দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।
ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ চট্টগ্রাম উত্তর জেলার সভাপতি মাওলানা তাওহীদুল হক চৌধুরী বলেন, সেবামূলক কর্মকাণ্ডে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকলের এগিয়ে আসা দরকার। দিশারী আজ মানবতার যে আলো জ্বালিয়েছে, তা অবশ্যই প্রসংশনীয়।
সীতাকুণ্ড প্রেসক্লাবের সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল্লাহ আর ফারুক বলেন, যারা গ্রুপ নির্ণয় করবেন তারা যেন গ্রুপ নির্ণয়ের কার্ডটি লেমিনেশন করে মানিব্যাগে সংরক্ষণ করেন। যদি কখনো দুর্ঘটনার শিকার হয় যেন তার এই কার্ডটির মাধ্যমে দ্রুত সময়ের মধ্যে তার শরীরে রক্ত দিতে পারে।
কেয়ার হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. শাফায়াত উল্লাহ বলেন, যে সমাজ রক্ত দিয়ে জীবন বাঁচাতে শিখে, সেই সমাজ কখনো পিছিয়ে পড়তে পারে না। দিশারীর এই আয়োজন আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে মানবিক মূল্যবোধে শিক্ষিত করে গড়ে তুলবে। কেয়ার হাসপাতাল সবসময় এই ধরনের উদ্যোগের পাশে থাকবে।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন কেয়ার হাসপাতালের চেয়ারম্যান ডা. মীর কাশেম মজুমদার, সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোতাহের হোসেন রানা, পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের স্বাস্থ্য পরিদর্শক মোঃ হারুনুর রশিদ।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন দিশারী যুব ফাউন্ডেশনের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ও দিশারী ব্লাড বন্ডের চিফ কো-অর্ডিনেটর লায়ন মোঃ নুর খান বলেন, রক্তদানের মাধ্যমে আমরা জীবন বাঁচাতে পারি। তাই শুধু দিবস নয়, বরং প্রতিদিনই এই সচেতনতা থাকা জরুরি। দিশারীর প্রতিটি ইউনিট সেই লক্ষ্যেই কাজ করছে।
অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন দিশারী ব্লাড বন্ডের সাধারণ সম্পাদক মোঃ ইকবাল হোসেন ইমন ও দিশারী মিডিয়া সেলের সাধারণ সম্পাদক মোঃ ফরহাদ হোসেন রিফাত।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন দিশারী যুব ফাউন্ডেশন বাংলাদেশের সহ-সভাপতি (প্রশাসন) প্রভাষক মোঃ নাজিমুজ্জামান রাশেদ, সাউথ এশিয়ান ক্রাইম ওয়াচ সীতাকুণ্ড উপজেলা সভাপতি মোঃ ওমর ফারুক, সোনার বাংলা করব মানবতা ফাউন্ডেশনের সভাপতি মোঃ কাউসার উদ্দিন, আলো মানবিক উন্নয়ন ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক মোঃ আবু সাদেক এবং “রক্তের সন্ধানে আমরা”–এর প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মোঃ রাজু।
দিশারী ব্লাড বন্ড ও মিডিয়া সেলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দদের মধ্যে ছিলেন সভাপতি মোঃ জিয়াউল হক আরিফ, সহ-সভাপতি মোহাম্মদ মহিদুল আলম আবির, কো-অর্ডিনেটর মুক্তার হোসেন সাইমন, দিশারী শিল্প তরঙ্গের সভাপতি মোঃ সোহেল উদ্দিন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোঃ জাহাঙ্গীর আলম বাবলু, দিশারী মিডিয়ার সভাপতি মোঃ শাহাদাত সালেহীন ও সমন্বয়ক মোঃ আব্দুল হালিম।
সকাল ১০:৩০টা থেকে দুপুর ১:৩০টা পর্যন্ত চলে রক্তের গ্রুপ নির্ণয় কার্যক্রম। এরপর অনুষ্ঠিত হয় আলোচনা সভা এবং অংশগ্রহণকারীদের মাঝে স্বাস্থ্যসম্মত খাবার বিতরণ। অনুষ্ঠান শেষে আয়োজকরা আশাবাদ ব্যক্ত করেন যে, দিশারী যুব ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ-এর এ মহতী উদ্যোগ ভবিষ্যতে আরও বৃহৎ পরিসরে ছড়িয়ে পড়বে এবং দেশের প্রতিটি অঞ্চলে মানবিক সচেতনতা ও সেবার বীজ বপন করবে।