
সাতক্ষীরা প্রতিনিধি: সাতক্ষীরার বিনেরপোতা বিসিক শিল্প নগরীতে ইটের গুঁড়া দিয়ে ভেজাল সার তৈরির অভিযোগে একটি গুদামঘর সিলগালা করেছে জেলা প্রশাসন।
বুধবার (১০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ও জেলা পুলিশের ডিবির যৌথ অভিযানে এ ঘটনা ধরা পড়ে। পরে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. তাজুল ইসলাম মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে প্রতিষ্ঠানটির মালিক রফিকুল ইসলামকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করেন।
অভিযানকালে দেখা যায়, সাইনবোর্ডবিহীন কারখানায় দুই নারী শ্রমিক বিভিন্ন কৃষি ও মৎস্য পণ্যের প্যাকেটজাতকরণ করছিলেন। সেখানে ইটের গুঁড়া সার তৈরির কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছিল বলে অভিযোগ ওঠে।
কারখানায় কর্মরত শ্রমিক ইন্দোরানী মণ্ডল বলেন, “আমরা বাইরে থেকে মাল এনে শুধু প্যাকেট করি। সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত কাজ করি। দিনে ৪০০ টাকা মজুরি পাই। ইটের গুঁড়া কেন আনা হয়েছে তা আমরা জানি না। মানুষ সন্দেহ করছে বলে কষ্ট হচ্ছে। আমাদের কাজ শুধু প্যাকেট করা, বেতন পেলেই আমরা খুশি।”
সাতক্ষীরা সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মনির হোসেন জানান, “এখানে আমরা ইটের গুঁড়া সার হিসেবে প্যাকেটজাতের প্রমাণ পেয়েছি। কোনো বৈধ লাইসেন্স বা কাগজপত্রও নেই। মালিককে ডাকা হলেও তিনি আসেননি। কৃষকদের সঙ্গে এভাবে প্রতারণা করা মারাত্মক অপরাধ।”
জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. তাজুল ইসলাম বলেন, “গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে আমরা ভেজালের প্রমাণ পাই। তাই সার ব্যবস্থাপনা আইন ২০০৬ অনুযায়ী মালিককে জরিমানা করা হয়েছে এবং প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। জব্দ মালামাল বিসিক কর্তৃপক্ষের জিম্মায় রাখা হয়েছে।”
তবে এই ঘটনায় বিসিক কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। শিল্প নগরীর ভেতরে দীর্ঘদিন ধরে এমন ভেজাল কর্মকাণ্ড চললেও স্থানীয় বিসিক কর্মকর্তারা কিছুই জানেন না বলে দাবি করেছেন অনেকে। নগরীর ভেতরে অবৈধ কারখানা পরিচালনার বিষয়টি তাদের নজরে না আসা কতটা গ্রহণযোগ্য—এ নিয়েও জনমনে সমালোচনা দেখা দিয়েছে।
এ ঘটনায় স্থানীয় কৃষকদের মধ্যে উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়েছে। প্রশাসন বলছে, কৃষকদের সচেতন থাকতে হবে—সার কেনার সময় অবশ্যই প্যাকেট ও উৎস যাচাই করে নিতে হবে, যাতে ভেজাল সার কিনে ক্ষতির মুখে না পড়েন।