বৃহস্পতিবার, ১৪ই কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ,৩০শে অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

পুঠিয়ায় স্কুলছাত্রীকে অপহরণ: অদৃশ্য প্রভাব ও ওসির গড়িমসিতে পরিবারের উদ্বেগ

পুঠিয়া (রাজশাহী) প্রতিনিধি: রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলায় অষ্টম শ্রেণির এক স্কুলছাত্রীকে অপহরণের অভিযোগে ছয়জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও দুই-তিনজনকে আসামি করে থানায় মামলা করেছেন ভুক্তভোগী ছাত্রীর বাবা মিজানুর রহমান।

তবে মেয়ে অপহরণের চার দিন পার হয়ে গেলেও এখনও মেয়ের সন্ধান পাননি ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা।
সোমবার এজাহারে পুঠিয়া উপজেলার শিলমাড়িয়া ইউনিয়নের মোল্লাপাড়া এলাকার শরিফুল ইসলামের ছেলে মো. হৃদয়কে প্রধান আসামি করে শরিফুল ইসলাম, রোজিনা, সেলিম এবং সাতবাড়িয়া দিয়ারপাড়া এলাকার নোমান ও জগোপাড়া এলাকার এন্তাজ মন্ডলসহ আরও দুই-তিনজনকে সহযোগী আসামি হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।

এজাহারে বলা হয়, মিজানুর রহমানের মেয়ে উম্মে সামিহা পুঠিয়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী। ২৬ অক্টোবর বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে সে প্রতিদিনের মতো প্রাইভেট পড়ার উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে বের হয়।

পথিমধ্যে পুঠিয়া গ্রামের জিতেন্দ্র ধর নামের এক ব্যক্তির বাড়ির সামনে পৌঁছালে মামলায় উল্লেখিত ২ ও ৬ নং আসামির সহযোগিতায় প্রধান আসামি হৃদয় পূর্বপরিকল্পিতভাবে সামিহাকে জোরপূর্বক একটি মাইক্রোবাসে তুলে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যায় বলে অভিযোগ করা হয়েছে।

মিজানুর রহমান অভিযোগ করেন, প্রধান আসামি হৃদয় দীর্ঘদিন ধরে তার মেয়েকে প্রেমের প্রস্তাব ও নানা প্রলোভন দিয়ে হয়রানি করত। এছাড়াও প্রেমের প্রস্তাবে রাজি না হলে অপহরণ করারও হুমকি দিতো।
মেয়ের অভিযোগের বিষয়টি তিনি স্থানীয়ভাবে সমাধানের চেষ্টা করলেও হৃদয় তার অপকর্ম চালিয়ে যায়। অবশেষে রবিবার বিকালে আসামি তার মেয়েকে অপহরণ করে।

অপহরণের সময় ভুক্তভোগীর চিৎকারে আশেপাশের লোকজন ছুটে এলে আসামিরা দ্রুত মাইক্রোবাস চালিয়ে পালিয়ে যায় বলে এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে।
ঘটনাটি স্থানীয় বাসিন্দা সাহেরা বেগম, নাজমুন নাহার ও আহসান হোসেন প্রত্যক্ষ করেছেন বলেও এজাহারে উল্লেখ করেছেন মিজানুর রহমান।

উম্মে সামিহার পরিবারের সদস্যরা জানান, অনেক খোঁজাখুঁজি করেও মেয়েকে না পেয়ে তারা পরে থানায় এজাহার দাখিল করেন।

তবে তারা অভিযোগ করেছেন, পুঠিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কবির হোসেন বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখছেন না।

পরিবারের দাবি, ‘অদৃশ্য শক্তির প্রভাবে ওসির ভূমিকা শুরু থেকেই রহস্যজনক। চার দিন পার হলেও আমাদের মেয়ের কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি।’

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ওসির গড়িমসির কারণে মামলাটি বর্তমানে র‌্যাবের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। সামিহার পরিবারের আশা, দ্রুতই তাদের মেয়েকে তারা ফিরে পাবেন।

পুঠিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কবির হোসেন বলেন, “ঘটনার পরই মামলা গ্রহণ করা হয়েছে। আসামিদের গ্রেপ্তারের জন্য পুলিশ বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালাচ্ছে।”

তদন্তে গড়িমসি হচ্ছে কেন- এমন প্রশ্নের জবাবে ওসি কবির হোসেন বলেন, “মামলাটি গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে। তদন্তের স্বার্থে থানার পাশাপাশি মামলাটি র‍্যাবের কাছেও হস্তান্তর করা হয়েছে।”

দ্রুত সময়ের মধ্যেই আসামিদের আইনের আওতায় আনা হবে বলেও জানান ওসি।

Facebook
Twitter
LinkedIn
WhatsApp
Tumblr
Telegram

, বিভাগের জনপ্রিয় সংবাদ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

যায়যায়কাল এর সর্বশেষ সংবাদ