
আলমগীর হোসেন, কেশবপুর(যশোর) : যশোরের কেশবপুরে আখের ব্যাপক বাম্পার ফলন হওয়ায় কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে। তাদের মাঝে স্বাবলম্বী হওয়ার আশা জেগেছে।
কেশবপুর উপজেলায় বিভিন্ন এলাকায় লতারি জরা, ইশ্বরদী- ১৬ ও গ্যান্ডারি জাতের আখ চাষে বাম্পার ফলন হওয়ায় দিনে দিনে আখ চাষে ঝুঁকছেন কৃষকরা। প্রতি বছর এলাকায় বৃদ্ধি পাচ্ছে আখের আবাদ।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, এ বছর কেশবপুর উপজেলায় ৫০ হেক্টর জমিতে আখ চাষ করেছেন কৃষকরা।
উপজেলার ত্রিমোহিনী, মঙ্গলকোট, বসুন্দিয়া, বাদুড়িয়া, পাচঁপোতা, ঝিকরা, বড়েঙ্গা, রামকৃষ্ণপুর, পাচারই এলাকায় আখের চাষ হয়েছে বেশি।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, মঙ্গলকোট, সাগরদাঁড়ি ও ত্রিমোহিনী ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় আখ ক্ষেতে আখ পরিচর্যার কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন কৃষকরা। এই অঞ্চলের মাটি আখ চাষের উপযোগী হওয়ায় এখানকার কৃষকরা তাদের ভাগ্য বদলাতে ২০০০ সাল থেকে আখ চাষ শুরু করে আসছেন কৃষকরা। আখ চাষ করে অনেকেই এখন স্বাবলম্বী হয়েছেন। যে কারণে এই অঞ্চলের কৃষকরা আখ চাষের প্রতি উৎসাহী হয়ে উঠেছে।
আখ চাষ লাভজনক হওয়ায় বাদুড়িয়া, মঙ্গলকোট, পাঁচপোতা, বসুন্তিয়া, রামকৃষ্ণপুর, বড়েঙ্গা,পাঁচারই, কেদারপুর, সাগরদাঁড়ী, মোমিনপুর, ঝিকরা, বেগমপুর ত্রিমোহিনীসহ বিভিন্ন গ্রামে আখ চাষ করে থাকে স্থানীয় আখ চাষিরা তাদের নিজস্ব উদ্যোগে ২০০০ সাল থেকে যশোর-সাতক্ষীরা সড়কের বাদুড়ীয়া মোড় নামক স্থানে রাস্তার দুই পাশে আখের হাট বসিয়ে প্রাথমিকভাবে আখ বেচাকেনা করে আসছে।
প্রতিদিন কেশবপুর ছাড়াও যশোর, মাগুরা, ঝিনাইদাহ জেলাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে পাইকারি ব্যবসায়ীরা বাদুড়ীয়া হাটে এসে আখ ক্রয় করে নিয়ে যান। ভালো বাজার ব্যবস্থাপনা না থাকায় পাইকাররা এই সড়কের পাশে গাড়ি পার্কিং করে থাকে। যার ফলে যেকোনো সময় দুর্ঘটনা ঘটার সম্ভবনা রয়েছে। তাই আখ বিপনন ব্যবস্থা ভালো করতে সরকারি পৃষ্টপোষকতায় জায়গা বরাদ্ধের জোর দাবি জানিয়েছেন আখ চাষি ও ব্যবসায়ীরা।
মঙ্গলকোট ইউনিয়নের বসুন্দিয়া গ্রামের আখঁ চাষী রহমত আলী, আহম্মাদ আলী, হাফিজুর রহমান, নাজমুল হোসেন, ত্রিমোহিনী ইউনিয়নের চাঁদড়া গ্রামের ফারুক হোসেন, সোহাগ হোসেন জানান, তারা প্রতি বছর আখ চাষ করেন। আখ চাষে ব্যাপক লাভজনক হওয়ায় কৃষকরা এ আখ চাষে ঝুঁকে পড়েছেন। আখ ক্ষেতে সময় মতো কৃষকরা পরিচর্যাসহ বিভিন্ন রাসায়নিক সার ব্যবহার করার ফলে প্রতি বিঘা জমিতে আখ রোপণ থেকে শুরু করে কাটা পর্যন্ত ১ লাখ টাকা খরচ হয়। আর এ আখ বিক্রয় হয় ৩ থেকে সাড়ে ৩ লাখ টাকা।
মঙ্গলকোট গ্রামের বাসুদেব জানান, আমার দুই বিঘা জমিতে আখ চাষ করা হয়েছে। আখ রোপণের ৬ থেকে ৭ মাস পর আখ কাটা শুরু করেন আখ চাষিরা। এছাড়া আখ ক্ষেতে পেঁয়াজ রসুন, মরিচ, বেগুনসহ বিভিন্ন সবজির চাষ করা হয়ে থাকে।
এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি অফিসার মাহমুদা আক্তার বলেন, কেশবপুর উপজেলায় এ বছরে ৫০ হেক্টর জমিতে আখ চাষ হয়েছে। আখ চাষে স্বাবলম্বী হওয়ার আসায় ঝুঁকছেন কৃষকরা। আখ চাষে কৃষকরা লাভবান বলে তিনি আশাবাদী।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. তুহিন হোসেন বলেন, দক্ষিণ বঙ্গের একটি বৃহত্তম আখের হাট বসে কেশবপুরের বাদুড়িয়া মোড়ে। কিন্তু বাজারের জন্য নিদ্ধারিত জায়গা না থাকায় সড়কের দু’পাশে আখ রেখে বেচা-বিক্রি করে। যার ফলে দুর্ঘটনা আশঙ্কা বাড়ছে। মাঝে মাঝে যানজটের সৃষ্টি হয়। হাট কমিটির পক্ষ থেকে আবেদন পেলে আশপাশে খাসজমি থাকলে বাজার স্থানান্তরের ব্যবস্থা গ্রহণ করা যেতে পারে।