বৃহস্পতিবার, ৮ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ,২২শে মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

, এর সর্বশেষ সংবাদ

ঢাকার শেওড়াপাড়ায় দুই বোনকে শিল–পাটা ও ছরিকাঘাতে হত্যা

যায়যায়কাল প্রতিবেদক: রাজধানীর শেওড়াপাড়ায় ছুরিকাঘাত করে ও শিল–পাটার আঘাতে দুই বোনকে হত্যা করা হয়েছে।

শুক্রবার রাত ১১টার দিকে পুলিশ তাদের লাশ উদ্ধার করেছে। নিহত দুই নারী হলেন মরিয়ম বেগম (৬০) ও তার ছোট বোন সুফিয়া বেগম (৫২)।

মিরপুর থানা–পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মরিয়ম বেগম সপরিবার পশ্চিম শেওড়াপাড়ায় একটি ভবনের দোতলায় থাকতেন। মরিয়মের ছোট বোন অবিবাহিত এবং তিনি তার সঙ্গেই থাকতেন। সকালে মরিয়মের একমাত্র সন্তান নুসরাত জাহান (বৃষ্টি) মা ও খালা সুফিয়াকে বাসায় রেখে গুলশানে নিজ কর্মস্থলে যান। তিনি সেখানে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন। মরিয়মের স্বামী কাজী আলাউদ্দিন বিশেষ কাজে সকালে বরিশালের বাবুগঞ্জ যান। তিনি বন বিভাগের সাবেক কর্মকর্তা।

রাত আটটার দিকে নুসরাত ফিরে দরজা নক করে বাসার ভেতর থেকে কোনো সাড়াশব্দ পাচ্ছিলেন না। পরে তার কাছে থাকা চাবি দিয়ে তালা খুলে তিনি ভেতরে ঢুকে মাকে রক্তাক্ত অবস্থায় ডাইনিং রুমের মেঝেতে এবং খালাকে একটি শোবার ঘরের মেঝেতে পড়ে থাকতে দেখেন। এ সময় তার চিৎকারে প্রতিবেশীরা ছুটে আসেন এবং তারা মিরপুর থানায় খবর দেন।

পরে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মিরপুর বিভাগের উপকমিশনার মোহাম্মদ মাকছুদের রহমান, মিরপুর অঞ্চলের সহকারী কমিশনার মিজানুর রহমান এবং মিরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাজ্জাদ রোমন ঘটনাস্থলে যান। রাত ১১টার পর পুলিশ লাশ দুটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠায়।

ওসি সাজ্জাদ রোমন বলেন, মরিয়ম ও সুফিয়ার মাথায় শিল–পাটার আঘাত এবং পেটে ছুরিকাঘাতের চিহ্ন রয়েছে। পুলিশ হত্যায় ব্যবহৃত রক্তমাখা ছুরি ও শিল–পাটা জব্দ করেছে। ওই বাসা থেকে টাকা, স্বর্ণালংকারসহ কোনো মালামাল খোয়া যায়নি। বাসার দরজা–জানালা ও গ্রিল অক্ষত। বাড়ির নিরাপত্তাকর্মী ঘটনা সম্পর্কে কিছু জানেন না বলে জানান। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, সকালের পর চেনাজানা লোকেরা ওই বাসায় ঢোকেন। হয়তো সন্ধ্যার দিকে দুই বোনকে খুন করে তারা পালিয়ে যান।

রাতে সরেজমিনে দেখা যায়, ৬৪৯ পশ্চিম শেওড়াপাড়ায় নার্গিস ভবনের সামনে মানুষের ভিড়। ভেতর থেকে দরজা লাগিয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মরদেহ উদ্ধারে কাজ করছিল। সেখানে গণমাধ্যমকর্মীদের ঢুকতে দেওয়া হয়নি।

স্থানীয় বাসিন্দা ওষুধ ব্যবসায়ী এইচ এম জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, পরিবারটি ১৫ বছর ধরে এই বাড়িতে ভাড়া থাকেন। রাত ৯টা ২০ মিনিটে মরিয়মের স্বামী আলাউদ্দিন তাকে ফোন করে বলেন, স্ত্রী, মেয়ে ও শ্যালিকার কোনো খোঁজ পাচ্ছেন না। তিনি যেন বাসায় গিয়ে তাদের সঙ্গে তাকে কথা বলিয়ে দেন। এ সময় তিনি বাসায় গিয়ে পুলিশ ও র‍্যাব দেখতে পান। রাতেই আলাউদ্দিন ঢাকার উদ্দেশে রওনা হয়েছেন বলে তাকে মুঠোফোনে জানিয়েছেন।

পুলিশের মিরপুর বিভাগের উপকমিশনার মাকছুদের রহমান বলেন, হত্যাকাণ্ডের কারণ তাৎক্ষণিক বুঝতে পারছেন না। মরিয়মের শোকার্ত মেয়ে এ বিষয়ে নিশ্চিত করে কিছু বলতে পারছেন না। বাড়ির ক্লোজড সার্কিট (সিসি) ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণ করে হত্যাকারীদের শনাক্তে কাজ চলছে।

Facebook
Twitter
LinkedIn
WhatsApp
Tumblr
Telegram

, বিভাগের জনপ্রিয় সংবাদ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

যায়যায়কাল এর সর্বশেষ সংবাদ