বৃহস্পতিবার, ৮ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ,২২শে মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

, এর সর্বশেষ সংবাদ

ঢাবিতে হামলায় উসকানি দাতা ৭০ জন শিক্ষক

যায়যায়কাল প্রতিবেদক: কোটা সংস্কার আন্দোলনের মাঝামাঝি থেকে সরকার পতনের দিন পর্যন্ত বিভিন্ন হামলার ঘটনায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১২২ শিক্ষার্থীর সম্পৃক্ততা পেয়েছে ‘সত্যানুসন্ধান কমিটি’; সেইসঙ্গে হামলা উসকে দেওয়ার পেছনে বিশ্ববিদ্যালয়টির ৭০ শিক্ষকও রয়েছেন বলে কমিটির প্রতিবেদনে উঠে এসেছে।

সরকার পতনের পর ২০২৪ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সহিংসতার ঘটনা অনুসন্ধানে ওই কমিটি করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

এর সাড়ে পাঁচ মাস পর বৃহস্পতিবার অনুসন্ধান প্রতিবেদন উপাচার্য নিয়াজ আহমেদ খানের হাতে তুলে দেন কমিটির আহ্বায়ক, আইন অনুষদের সহযোগী অধ্যাপক মাহফুজুল হক সুপণ।

উপাচার্য কার্যালয়ের লাউঞ্জে প্রতিবেদন দেওয়ার পর সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ২০২৪ সালের ১৫ জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিকল্পিতভাবে হামলা হয়েছে। ওই সময় থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত হামলাকারীদের মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১২২ শিক্ষার্থীকে শনাক্ত করা গেছে। আর অন্তত ৭০ জন শিক্ষক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বিভিন্নভাবে হামলাকে উসকে দিয়েছেন।

তিনি বলেন, ১৫ জুলাইয়ের হামলা ছিল ‘পূর্বপরিকল্পিত’। সেখানে দুইটি পক্ষের একটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মল চত্বরে, আরেকটি ঢাকা মেডিকেল কলেজের জরুরি বিভাগের সামনে অবস্থান নেয়। হামলায় সরকারি বাঙলা কলেজ ও কবি নজরুল কলেজের শিক্ষার্থীও ছিল।

মেয়েদের ওপর হামলার ঘটনায় অন্য প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরাও ছিল বলে জানান কমিটির আহ্বায়ক।

তিনি বলেন, উপাচার্যের বাসভবনের সামনে মেয়েদের বাস থেকে নামিয়ে ধরে ধরে পেটানো হয়। মেয়েদের হাত ধরে রাখে, যা শ্লীলতাহানির পর্যায়ে পড়ে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টার, ঢাকা মেডিকেল কলেজের জরুরি বিভাগের ফটক ও বিভাগের ভেতরেও হামলা হয়েছে। ডাক্তারদের চিকিৎসা না দিতে বলা হয়েছে। সেসব ভিডিও তারা পেয়েছেন।

শিক্ষকদের সম্পৃক্ততার কথা তুলে ধরে মাহফুজুল হক বলেন, বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা প্রক্টরের কাছে এ ব্যাপারে অভিযোগ করেছে। সেগুলো তারা পেয়েছেন। আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ‘পাকিস্তানের দালাল’, ‘শিবিরকর্মী’ বা ‘ছাত্রদলকর্মী’ আখ্যা দিয়ে ওই শিক্ষকরা ফেইসবুকে পোস্ট করেন।

‘জড়িতদের’ ব্যাপারে তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় মামলা করতে পারে না। বিশ্ববিদ্যালয় কেবল অ্যাকাডেমিক ব্যবস্থা নিতে পারে। যারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নয়, তাদের ক্ষেত্রে ওই প্রতিষ্ঠান থেকে অ্যাকাডেমিক ব্যবস্থা নেওয়ার কথা তারা সুপারিশ করেছেন।

কোটা সংস্কার আন্দোলনের মধ্যে গত ১৫ জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের পিটিয়ে ছত্রভঙ্গ করে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে। সেদিন সাংবাদিকসহ শতাধিক আহত হন।

ওই ঘটনার পর থেকে সারাদেশে কোটা সংস্কার আন্দোলন তীব্রতা পায়। এরপর দেশের বিভিন্ন স্থানে সংঘাত, সহিংসতার ঘটনা ঘটতে থাকে। ব্যাপক প্রাণহানির মধ্য দিয়ে চলা আন্দোলন পর্যায়ক্রমে রূপ নেয় সরকার পতনের এক দফার আন্দোলনে।

একপর্যায়ে ছাত্র-জনতার তুমুল গণআন্দোলনে গত ৫ আগস্ট দেশ ছেড়ে পালিয়ে ভারতে যান শেখ হাসিনা। এরপর কিছু দিন পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে হামলার ঘটনাগুলো অনুসন্ধানে কমিটি করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

এ কমিটির প্রতিবেদন জমার সময় বিশ্ববিদ্যালয়টির উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) সায়মা হক বিদিশা, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, প্রক্টর সহযোগী অধ্যাপক সাইফুদ্দীন আহমেদ, উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ আলমোজাদ্দেদী আলফেসানী উপস্থিত ছিলেন।

Facebook
Twitter
LinkedIn
WhatsApp
Tumblr
Telegram

, বিভাগের জনপ্রিয় সংবাদ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

যায়যায়কাল এর সর্বশেষ সংবাদ