
মাহবুব হাসান টুটুল,গাংনী (মেহেরপুর): বাংলাদেশের সার্বভৌম সীমান্তে আরেকবার মানবিক বিপর্যয় ঘটিয়েছে ভারতের বিএসএফ। নারী ও শিশুসহ ১৯ জন বাংলাদেশি নাগরিককে পুশব্যাক করে বাংলাদেশে ঢুকিয়ে দিয়েছে তারা।
রবিবার ভোররাতে মেহেরপুরের মুজিবনগর উপজেলার সোনাপুর মাঝপাড়া সীমান্ত দিয়ে এই ঘটনা ঘটে।
সীমান্ত পার হয়ে কেদারগঞ্জ বাজার এলাকায় অবস্থানকালে মুজিবনগর থানা পুলিশ তাদের আটক করে থানায় নিয়ে যায়। পরে মুজিবনগর বিজিবি ক্যাম্পের সদস্যরাও ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন।
আটককৃতদের মধ্যে রয়েছে ৯ জন শিশু, ৫ জন নারী ও ৫ জন পুরুষ। আটক হওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে রয়েছেন কুড়িগ্রাম জেলার ভুরুঙ্গামারী থানার কাঠগিরি গ্রামের আব্দুল জলিলের মেয়ে মোমেনা খাতুন এবং তার তিন ছেলে মোজাম্মেল হক (২৩), মোস্তাক আহমেদ (১৯) ও কাবিল (১১)।
কুড়িগ্রাম জেলার নাগেশ্বরী থানার জয়মঙ্গল ১১ মাথা গ্রামের জালালউদ্দিনের ছেলে মইনুল ইসলাম, তার স্ত্রী কাঞ্চন বেগম এবং তাদের তিন সন্তান কারণ (১৪), রবিউল (৭) ও মরিয়ম (৪)। লালমনিরহাট জেলার সদর থানার চুঙ্গগাড়া গ্রামের মৃত গণেশ চন্দ্র পালের ছেলে নিতাই চন্দ্র পাল, তার স্ত্রী গীতা রানী পাল এবং তাদের তিন মেয়ে পার্বতী পাল (১৫), পূজা রানী পাল (৭) ও আরতী পাল (৩)। কুড়িগ্রাম জেলার ফুলবাড়ী থানার কুঠিচন্দ্রখানা গ্রামের খলিলের ছেলে আমিনুল ইসলাম, তার স্ত্রী পারুল এবং তাদের দুই মেয়ে আমেনা (৪) ও আরফিনা (১১ মাস)।
আটককৃতরা জানান, তারা সবাই বাংলাদেশের নাগরিক। বিভিন্ন সময়ে কাজের সন্ধানে অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশ করেন এবং ভারতের হরিয়ানা রাজ্যে বসবাস করছিলেন।
প্রায় ছয়-সাত দিন আগে ভারতের হরিয়ানার বিভিন্ন এলাকা থেকে তাদের আটক করে পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ জেলার বহরমপুর জেলে রাখা হয়। পরে রবিবার ভোরে মুজিবনগরের সোনাপুর মাঝপাড়া সীমান্ত দিয়ে তাদের বাংলাদেশের অভ্যন্তরে পুশব্যাক করে বিএসএফ। এরপর কোনো আইনি প্রক্রিয়া ছাড়াই সীমান্তে এনে ঠেলে দেওয়া হয়। এই ঘটনায় সীমান্ত নিরাপত্তা এবং মানবাধিকারের দিক থেকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে ভারত ।
এ বিষয়ে মুজিবনগর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মিজানুর রহমান জানান, আটককৃতরা কেদারগঞ্জ বাজারের বিআরটিসি কাউন্টারে অবস্থান করছিল। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তাদের আটক করে থানায় আনা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান তিনি।