শুক্রবার, ২৯শে কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ,১৪ই নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

বোচাগঞ্জে মাদক ও চাঁদাবাজির ছড়াছড়ি: প্রশাসনের কার্যকর ভূমিকার দাবি

খান মোঃ আঃ মজিদ, দিনাজপুর: দিনাজপুরের বোচাগঞ্জ উপজেলা ও সেতাবগঞ্জ পৌরসভায় মাদক ও চাঁদাবাজির প্রকোপ দিন দিন বেড়েই চলেছে।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, প্রশাসনের তেমন কোনো কার্যকর পদক্ষেপ না থাকায় তরুণ প্রজন্ম আজ ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে আছে।

অভিযোগে জানা যায়, সেতাবগঞ্জ পৌরসভার ৯ নং ওয়ার্ডের কামারপাড়া মৌজার একটি আমবাগানে প্রায় ২৪ ঘণ্টা ধরে মাদকসেবীরা মাদক সেবন করে থাকে। এছাড়াও পৌরসভার হাজির মোড় সংলগ্ন বন-জঙ্গলে চলছে রমরমা মাদক ব্যবসা ও সেবন। এসব কারণে স্থানীয় অভিভাবকরা প্রতিনিয়ত লাঞ্ছনা ও নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন নিজেদের মাদকাসক্ত সন্তানদের হাতে।

১ নং ইউপি নাফানগর বড়সুলতানপুর অধীনে পুরাতন গুচ্ছগ্রাম আবাসন এলাকার জনপ্রতিনিধি পরিচয় দানকারী মীরা কাশ্মীরি হাজারো অপরাধের সাথে দীর্ঘদিন ধরে জড়িয়ে পড়েছে বলে ওই এলাকা সূত্রে জানা গেছে। স্বামী আঃ আলিম (পিতা মৃত হাফিজ উদ্দিন) ও বডিগার্ড আঃ মালেক ওরফে চৌধুরী (পিতা মৃত মছির উদ্দিন) সহ নাম না জানা আরও অনেকের সহযোগিতায় ওই জনপ্রতিনিধি পরিচয় দানকারী মীরা কাশ্মীরি মাদক ব্যবসায়ীদের সহযোগিতা করে। কেউ যদি পুলিশ হাতে ধরা পড়ে, তাদের ছাড়িয়ে আনার ব্যবস্থা করে দেয়। উঠন্ত বয়সী কিশোরী মেয়েদের দিয়ে দেহব্যবসা করানো, এমনকি স্বামীর ঘর থেকে বিবাহিত নারীদের সংসার ভেঙে এনে তাদের দিয়েও দেহব্যবসা চালানো—এগুলো তার নিয়মিত কাজ বলে অভিযোগ রয়েছে। পার্শ্ববর্তী এলাকায় নারী লোভীদের নিকট মোটা অংকের টাকার লোভে নারীদের বিক্রি করাও তার নেশার মতো অভ্যাসে পরিণত হয়েছে।

এছাড়া অভিযোগ রয়েছে, সরকারি অনুদানের বাড়ির মালামাল আত্মসাৎ করার ঘটনাতেও সে জড়িত। এখানেই শেষ নয়, থানা সূত্রে জানা গেছে, অটো চুরির অভিযোগও রয়েছে ওই জনপ্রতিনিধি পরিচয় দানকারী মীরা কাশ্মীরির বিরুদ্ধে। অথচ বোচাগঞ্জ থানা পুলিশ এখনো কোনো কার্যকর ভূমিকা পালন করছে না। এ কারণে এলাকাবাসীর মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে। সঠিক তদন্ত না হওয়ায় বছরের পর বছর এসব অপরাধ ধামাচাপা পড়ে আছে।

এলাকাবাসীর দাবি, বোচাগঞ্জ থানার ওসির জোরালো কোনো ভূমিকা দৃশ্যমান নয়। মাদক ব্যবসায়ীরা নির্বিঘ্নে তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।

বোচাগঞ্জ উপজেলায় রয়েছে মোট ৬টি ইউনিয়ন পরিষদ ও একটি পৌরসভা। প্রতিটি ইউনিয়ন ও পৌরসভায় ৯টি করে ওয়ার্ড রয়েছে।

১ নং নাফানগর ইউনিয়ন – ৯টি ওয়ার্ড

২ নং ইশানিয়া ইউনিয়ন – ৯টি ওয়ার্ড

৩ নং মোর্শিদহাট ইউনিয়ন – ৯টি ওয়ার্ড

৪ নং আটগাঁও ইউনিয়ন – ৯টি ওয়ার্ড

৫ নং ছাতইল ইউনিয়ন – ৯টি ওয়ার্ড

৬ নং রানগাঁও ইউনিয়ন – ৯টি ওয়ার্ড

সেতাবগঞ্জ পৌরসভা – ৯টি ওয়ার্ড

বোচাগঞ্জ উপজেলার সর্বস্তরে ৩৬৪ টি মাদক স্পট রয়েছে যা পুলিশে ধরাছোঁয়ার বাইরে।

স্থানীয়দের মতে, বোচাগঞ্জ থেকে মাদক নির্মূল করতে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের (ইউএনও) হস্তক্ষেপ একান্ত জরুরি। তাদের প্রত্যাশা, ইউএনও সরাসরি উদ্যোগ নিলে সমাজের তরুণ প্রজন্মকে মাদকের কবল থেকে রক্ষা করা সম্ভব হবে।

Facebook
Twitter
LinkedIn
WhatsApp
Tumblr
Telegram

, বিভাগের জনপ্রিয় সংবাদ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *