শুক্রবার, ১লা ফাল্গুন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ,১৪ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

সুন্দরগঞ্জে কৃষি জমিতে তৈরি হচ্ছে ইটভাটা

নুরুল ইসলাম, গাইবান্ধা: গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার রামজীবন ইউনিয়নের বাজারপাড়া কে কৈ কাঁশদহ গ্রামে চুন্নু মাস্টারের বিরুদ্ধে কৃষি জমিতে অবৈধভাবে ইটভাটা তৈরির অভিযোগ উঠেছে। পরিবেশ অধিদপ্তর, ইউএনও বা জেলা প্রশাসক বরাবর অভিযোগ করেও মিলছে না কোনো প্রতিকার।

জানা গেছে, কয়েক মাস ধরে গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার রামজীবন ইউনিয়নের কে কৈ গ্রামে জনবসতিপূর্ণ এলাকা আঞ্চলিক পাকা সড়কের সংরক্ষিত বনাঞ্চলের দুই কিলোমিটারের কাছের কৃষি জমিতে ওই ইটভাটা তৈরি করা হচ্ছে।

অভিযোগ উঠেছে যে, কোনো ধরনের আইনের তোয়াক্কা না করেই অবৈধভাবে ইটভাটা স্থাপনের কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন মেসার্স সোনালী ব্রিকস(এসবি) এর প্রোপাইটর আবু হেনা মো. শফিকুল ইসলাম চুন্নি মাস্টার।

সরেজমিনে দেখা যায়, ইট পোড়ানোর জন্য আইন অমান্য করে প্রায় কয়েক একর ফসলি জমির মাঝখানে ইট ভাটা তৈরি করছেন তিনি । এ জন্য আশপাশের বিভিন্ন জমি থেকে টপ সয়েল এনে বিশাল আকৃতির স্তূপ করে রাখা হয়েছে। শ্রমিকরা ইট ভাটা প্রস্তুত করতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। ইট ভাটার পার্শ্বে সংরক্ষিত বনাঞ্চল ও সড়কের দুই পাশে অসংখ্য গাছ-গাছালি রয়েছে।

এ ছাড়াও ভাটার সাথে এলজিইডির সড়ক রয়েছে। সরকারি আইন অমান্য করে ইটভাটা স্থাপন করা হচ্ছে বলে এলাকাবাসীর অভিযোগ।

স্থানীয়দের অভিযোগ, ইট ভাটার কারণে ফসলি জমি ও জীববৈচিত্র চরমভাবে হুমকির মুখে পড়বে। ইটভাটায় মাটি আনার কাজে চলাচলরত ডাম্পারের কারণে ধূলাবালি ওড়া এবং ফসলেরও ব্যাপক ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ইটভাটা মালিকের ছেলে ও তার লোকজন বলেন, আমরা ইটভাটা তৈরি করছি তাতে আপনার কি। ইটভাটাটির পাশে আরও একটি ইটভাটা রয়েছে।

তিনি আরও বলেন, পরিবেশ অধিদপ্তর রংপুর কার্যালয়ে ছাড়পত্র পাওয়ার জন্য আবেদনপত্র জমা দিয়েছি। তারা প্রাথমিক অনুমতি দিয়েছেন।

পরিবেশ অধিদপ্তরের রংপুর কার্যালয়ের উপ-পরিচালক ফরহাদ হোসেন বলেন, সরেজমিনে পরিদর্শন করে দেখবেন যে, ইটভাটার পরিবেশ ছাড়পত্র দিলে আশপাশের পরিবেশের ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে কি না। যদি থাকে তাহলে তিনি ওই ইটভাটার পরিবেশের ছাড়পত্র দেওয়ার সুপারিশ করবেন না। কিন্তু দীর্ঘদিন অতিবাহিত হলেও তিনি এ আর কোনো পদক্ষেপ না নেয়ায় তার ভূমিকা নিয়ে জনমনে প্রশ্ন উঠেছে।

ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন (নিয়ন্ত্রণ) আইন ২০১৩ইং এর ৫(১) ধারায় উল্লেখ রয়েছে, আপাতত বলবৎ অন্য আইনে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, কোন ব্যক্তি ইট প্রস্তুত করিবার উদ্দেশ্যে কৃষিজমি বা পাহাড় বা টিলা হইতে মাটি কাটিয়া বা সংগ্রহ করিয়া ইটের কাঁচামাল হিসাবে উহা ব্যবহার করিতে পারিবেন না। একই আইনের ৮এর (১) (ক) ধারায় আবাসিক, সংরক্ষিত বা বাণিজ্যিক এলাকা এবং (ঘ) ধারায় কৃষি জমিতে ইটভাটা স্থাপন নিষিদ্ধ রয়েছে।

Facebook
Twitter
LinkedIn
WhatsApp
Tumblr
Telegram

, বিভাগের জনপ্রিয় সংবাদ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

যায়যায়কাল এর সর্বশেষ সংবাদ