শাহিন রেজা টিটু, নবীনগর: ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার ইব্রাহিমপুর গ্রামে ১২ বছর আগে খুন হওয়া প্রবাসী শফিকুল ইসলাম হত্যা মামলার যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি মোহাম্মদ জসিম উদ্দিনকে বিমানবন্দর এলাকা থেকে আটক করেছে নবীনগর থানা পুলিশ। মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন ইব্রাহিমপুর গ্রামের ইদ্রিস মিয়ার সন্তান।
নবীনগর থানা অফিসার ইনচার্জ মো. আব্দুর রাজ্জাকের নির্দেশনায় এসআই শামীম ও সঙ্গীয় ফোর্সদের সাথে নিয়ে শনিবার ভোরে ঢাকার বিমানবন্দর এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
সরেজমিনে ইব্রাহিমপুর বাঁশবাজার ইদ্রিস মিয়ার বাড়িতে গিয়ে জানা যায়, তিনি বহু বছর আগেই বাড়ি বিক্রি করে চলে গেছেন।
এ সময় এলাকার লোকজন জানায়, ২০১২ সালে সৌদি আরব প্রবাসী শফিকুল ইসলাম ছুটিতে দেশে আসেন। এরপর স্ত্রীর সহযোগিতায় বালিশ চাপা দিয়ে তাকে হত্যা করেন শফিকুলের সৎ ভাই ও তার স্ত্রীর পরকীয়া প্রেমিক জসিম উদ্দিন। এরপর পেটে অসুখ হয়ে শফিকুলের মৃত্যু হয়েছে বলে চালিয়ে দেন শফিকুলের স্ত্রী। এরপর মৃত শফিকুলের স্ত্রীর গতিবিধি সন্দেহ হয় স্বজনদের। শফিকুলের ৫ বছর বয়সী ছেলেকে জিজ্ঞাসা করলে তার ছেলে জানায়, বাবাকে তার মা পায়ে চেপে ধরে ও তার চাচা জসিম বুকে বসে মুখে বালিশ দিয়ে চাপা দিয়ে হত্যা করেন।
মৃত শফিকুলের বোন জোসনা জানান, শফিকুলের খালাতো ভাই রাজন বাদী হয়ে ২০১২ সালে ঘাতক জসিম ও তার পরকীয়া প্রেমিকা শফিকুলের স্ত্রীকে আসামি করে মামলা করেন নবীনগর থানায়। এরপর আদালতের নির্দেশে কবর থেকে লাশ উত্তোলন করে ময়নাতদন্তের পর বেড়িয়ে আসে হত্যাকাণ্ডের রহস্য। সে সময় শফিকুলের ঘাতক স্ত্রী গ্রেফতার হলেও জসিম উদ্দিন তার পরকীয়া প্রেমিকার সহযোগিতায় পালিয়ে যান সিঙ্গাপুরে। এরপর থেকে জসিম পলাতক ছিলেন। এ সময় উনারা জানান জসিম আটক হওয়ার খবরে আমরা আনন্দিত।
এ বিষয় এ মামলার বাদী জানান, এত বছর পর আসামি আটকের খবরে আমাদের মনে শান্তি ফিরে এসেছে। জসিম ও ঘাতক মহিলার কঠিন শাস্তির দাবি জানাই।
এ বিষয়ে নবীনগর থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, গোপন তথ্যের ভিত্তিতে এসআই শামীম এর নেতৃত্বে একটি টিম বিমানবন্দর এলাকায় গভীর রাতে অবস্থান করে জসিমকে আটক করার জন্য। শনিবার ভোরে তাকে আটক করা হয়। আইনশৃঙ্খলা রক্ষার্থে নবীনগর থানা পুলিশ সবসময় তৎপর রয়েছে।