
মো. আখতার হোসেন হিরন, সলঙ্গা : ‘কথায় বলে মামা-ভাগ্নে যেখানে, আপদ নাই সেখানে।’ মামা প্রধান শিক্ষক আর ভাগিনা সভাপতি। দুজনই আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতা। তাই আওয়ামী লীগের রোষানলে পড়ে আজ একটি বিদ্যালয়ের শিক্ষার পরিবেশ ও গুণগত মান নষ্ট হচ্ছে।
ক্ষমতার অপব্যবহার করে প্রধান শিক্ষক ও সভাপতির বিরুদ্ধে প্রায় ৩০ লাখ টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগ উঠেছে।
উল্লাপাড়ার রামকৃষ্ণপুর ইউপির স্বনামধন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শলী বনানী উচ্চ বিদ্যালয়ে মামা আবু জাফর মাহবুব কামাল প্রধান শিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি তার আপন ভাগিনা জাহিদ। জাহিদ রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি। ক্ষমতার দাপটে নিয়ম বহির্ভূতভাবে পর পর ৪ বার ভাগিনা জাহিদকে সভাপতি করে তারা প্রতিষ্ঠানটি নিজেদের দখলে নেয়। কাউকে তোয়াক্কা না করে ২৫/৩০ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছেন বলে বিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মচারী ও শিক্ষার্থীরা দাবি করে উল্লাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর ইতিমধ্যেই লিখিত অভিযোগ দাখিল করেছেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবু জাফর ২০১০ সালে প্রতিষ্ঠানে যোগদান করেন। এরপর নিজ ভাগিনা জাহিদকে একাধারে ৪ বার ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি করে বিদ্যালয়ে অনিয়ম, দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি, স্বেচ্ছাচারিতা, কর্মে ফাঁকি, শিক্ষকদের সাথে দুর্ব্যবহার, প্রতিষ্ঠানের নামে বরাদ্দকৃত অর্থ/অনুদান আত্মসাৎ, বিদ্যালয়ে নিয়োগ বাণিজ্য, বিদ্যালয়ের ল্যাপটপ কুক্ষিগত করে সর্বমোট ৩০ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছেন। প্রতিকার চেয়ে সংশ্লিষ্ট দফতরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করলেও এখনও কোনো তদন্ত হচ্ছে না বলে অভিযোগকারীরা উদ্বিগ্ন।
গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর হতে অদ্যাবধি প্রধান শিক্ষক আবু জাফর বিনানুমতিতে অনুপস্থিত থেকে আত্মগোপনে আছেন।
সূত্রে আরও জানা যায়, সুচতুর প্রধান শিক্ষক জাফর শারিরীক অসুস্থতার মিথ্যা অজুহাত দেয়ার অপচেষ্টায় লিপ্ত আছেন। প্রধান শিক্ষক আবু জাফরের কারণে সুপরিচিত এ বিদ্যাপিঠে শিক্ষার পরিবেশ,পাঠদান ও ভাবমূর্তি দিন দিন নষ্ট হচ্ছে।
এ বিষয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার শামসুল হক জানান, শারিরীক অসুস্থতায় আমি নিজেই ছুটিতে আছি। অভিযোগ পেলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেয়া হবে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার আবু সালেহ হাসনাত জানান, সদ্য যোগদান করেছি। আমার কাছে অভিযোগ দিতে বলেন। অভিযোগ হাতে পেলে অবশ্যই তদন্ত সাপেক্ষে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।