
গত ২০ মে উপকূলে আঘাত হানে সুপার সাইক্লোন আম্ফান। রাতারাতি সাতক্ষীরা,খুলনা, বাগেরহাটসহ উপকূলের লোকালয় পরিণত হয় জলাধারে। এখনো উপকূলের বহু পরিবার তাদের আপন নীড়ে ফিরতে পারেনি। সারা দেশে আম্ফানের এই ধ্বংসযজ্ঞের চিত্র তুলে ধরতে এবং বন্যার্ত মানুষের পাশে দাঁড়াতে চেঞ্জ মেকারস অ্যালিয়েন্স-সিএমএ আয়োজন করেছে “আম্ফানে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য ফটোগ্রাফি প্রতিযোগিতা ও প্রদর্শনী”। উক্ত ফটোগ্রাফি প্রতীযোগিতা ও প্রদর্শনীতে নিন্মোক্ত বিষয়ের উপর ছবি আহ্বান করা হয়।
১. আম্ফান সংক্রান্ত যেকোন ছবি।
২. আম্ফানে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা, মানুষ বা পশু পাখির ছবি।
৩. ক্ষতিগ্রস্ত মানুষকে সহায়তার ছবি।
৪. আম্ফানে নারী ও শিশুর ভোগান্তি।
৫. আম্ফানে প্রবীণদের অবস্থা।
৬. উপকূল স্বাস্থ্যে আম্ফানের প্রভাব।
ফটোগ্রাফি প্রতিযোগিতা ১৮ সেপ্টেম্বর থেকে ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হয়। প্রতিযোগিরা ভিন্ন ভিন্ন বিষয়ে মোট ২০০ টি ছবি জমা দেন। সেখান থেকে ৫ টি ছবিকে ১ম, ২য়, ৩য়, ৪র্থ, ৫ম বিজয়ী ঘোষণা করা হয়েছে। সেরা ২০ টি ছবি নিয়ে তৈরি হয়েছে সিএমএ এর ‘আম্ফান অ্যালবাম’।
১ম, ২য়, ৩য়, ৪র্থ এবং ৫ম স্থান অধিকারি পুরস্কার হিসেবে পাবেন প্রাইজ মানি। এছাড়া সেরা ২০ জন প্রতিযোগি পাবেন সার্টিফিকেট। এবং তাদের ছবি নিয়ে প্রকাশ করবে আম্ফান এ্যালবাম।
এই আয়োজনের প্রধান উদ্যোগতা চেঞ্জ মেকারস অ্যালিয়েন্সের প্রতিষ্ঠাতা জসীম উদ্দীন বলেন, আমাদের এই আয়োজনের প্রধান লক্ষ্যই ছিল সারাদেশে আম্ফানের ক্ষতিগ্রস্ততার চিত্র তুলে ধরা। অনলাইন প্রদর্শনীর পাশাপাশি আমরা করোনা পরবর্তীকালে এই ছবিগুলো নিয়ে প্রদর্শনীর আয়োজন করব ।
উল্লেখ্য, চেইঞ্জ মেকারস অ্যালিয়েন্সের এই আয়োজনে স্পন্সর হিসেবে আছেন উপকূলের স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন কোস্টাল ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন (সিডিএফ)। সহযোগি স্পন্সর হিসেবে সাথে আছেন জয় বাংলা ইয়ুথ এওয়ার্ড বিজয়ী সংগঠন প্যারেন্টস এজিং ফাউন্ডেশন (পিএএফ)। মিডিয়া পার্টনার হিসেবে যুক্ত আছে সময় টিভি, দৈনিক দেশ রূপান্তর, দৈনিক যায়যায়কাল এবং ফিল্মি টিভি
চেঞ্জ মেকারস অ্যালিয়েন্স একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। বিশ্ব পরিবর্তিত হোক সৃজনশীলতার ধারায় এ স্লোগানকে সামনে রেখে যাত্রা শুরু হয় এই সংগঠনের। যেটি শিশুদেরকে মানসম্মত শিক্ষা অর্জনে সহায়তা, নারীর ক্ষমতায়ন কমিউনিটি ডেভেলপমেন্ট এবং তরুণদের দক্ষতা উন্নয়নে অবদার রাখার ব্রতী নিয়ে প্রতিষ্ঠিত। সিএমএ বিশ্বাস করে সমাজের তরুণদের উদ্যোমতা এনং সৃজনশীল ভাবনাকে একত্রিত করে বাস্তবায়ন করতে পারলে এই সুন্দর পৃথিবীকে আরো সুন্দর করে তোলা সম্ভব।
সেরা ২০ টি ছবির বর্ণনাঃ
১। বেড়িবাঁধ মেরামতের কাজের মাঝেই নামাজ পড়ছেন কয়রার দোশালিয়ার মানুষেরা। স্থানঃ দোশালিয়া, কয়রা। ছবিঃ ইমামুল হক।
২। উপকূলীয় শিশুদের পথচলা। স্থানঃ উত্তর বেদকাশী, কয়রা। ছবিঃ এমএম সাইফুল ইসলাম।
৩। উপকূলে সুপার সাইক্লোন আম্ফান আঘাত হানার পর ২নং কয়রার দৃশ্য। স্থানঃ ২নং কয়রা, কয়রা, খুলনা। ছবি তুলেছেনঃ হাবিবুর রহমান।
৪। আম্ফানে ভেসে গেছে বসতভিটা। মাথা গোজার ঠাঁই নেই তাদের। অন্য কোথাও বাঁধবে ঘর। ভিটা বাড়ি ছেড়ে শেষ সম্বল যেটুকু আছে তাই নিয়ে গন্তব্যের পথে উপকূলের মানুষ। স্থানঃ । ছবি তুলেছেনঃ এমএন সাকিব ।
৫। আম্ফান আঘাত হানার পরদিন তোলা কপোতাক্ষ নদের ভাঙ্গনের দৃশ্য। ছবিঃ মনোদীপ সরকার।
৬। প্লাবিত বাড়ি। স্থানঃ ২ নং কয়রা,খুলনা । ছবিঃ এম বি নাঈম ।
৭। ঘূর্ণিঝড় পূর্ব প্রস্তুতি প্রস্তুতি কর্মসূচীর ২ জন সেচ্ছাসেবক। স্থানঃ সন্দীপ। ছবিঃ তানভীর মাহমুদ ।
৮। আম্ফানের ধ্বংসলীলায় সর্বহারা নিঃস্ব এক উপকূলীয় যোদ্ধা মা তার শিশু সন্তান এবং গবাদি পশুকে নিয়ে নিরাপদ আশ্রয়ে যাওয়ার এক অদম্য লড়াই। স্থানঃ কাটমারচর, উত্তর বেদকাশী, কয়রা। ছবিঃ ইমরান হোসাইন।
৯। ঘর ছেড়ে চলে যাওয়া নির্মম দৃশ্য। ছবি তোলার স্থানঃ কয়রা । ছবি তুলেছেনঃ নিতিশ সানা।
১০। সব কিছু হারানোর নিরব ব্যাথা। স্থানঃ । ছবিঃ নাজমুস সাকিব।
১১। রাতারাতি ভিটাবাড়ি হারানোর দুঃখ নিয়ে বসে আছেন ভাঙ্গা বেড়িবাঁধাএর অপর। স্থানঃ কয়রা, খুলনা। ছবিঃ অনিমেষ সানা।
১২। উপকূলের বসবাসের চিত্র। স্থানঃ কাটমারচর, উত্তর বেদকাশী, কয়রা। ছবিঃ এমএম সাইফুল ইসলাম।
১৩। প্রতিকূল পরিবেশের সাথে যুদ্ধ করেই টিকে থাকতে হয় তাদের। ছবি তুলেছেনঃ অনিমেষ সানা।
১৪। প্রথম আলো বন্ধুসভার বন্যার্তদের মাঝে ত্রান বিতরণের দৃশ্য। স্থানঃ ২ নং কয়রা, খুলনা। ছবিঃ হাবিবুর রহমান।
১৫। আম্পানে বাঁধ ভেঙ্গে লোনা পানি প্রবেশ করায়, মিঠা পানির মাছ পঁচে ভেসে আছে রাস্তার ধারে। স্থানঃ কয়রা উপজেলা। ছবি তুলেছেনঃ নিতিশ সানা।
১৬। আম্ফান পরবর্তী নোয়াখালীর গুচ্ছগ্রামের চিত্র। ছবি তুলেছেনঃ রোমানুল হক।
১৭। নোনা পানিতে ডুবে আছে লোকালয় তাই প্রতীক্ষা বিশুদ্ধ পানির জন্য। স্থানঃ সাতক্ষীরা। ছবিঃ এসকে ফারুক হোসাইন। স্থানঃ সাতক্ষীরা।
১৮। একজন উপকূলীয় যোদ্ধা। স্থানঃ গুড়িয়াবাড়ি, কয়রা। ছবিঃ এম এম সাইফুল ইসলাম।
আম্ফানে ক্ষতিগ্রস্ত গুচ্ছগ্রামের স্থিরচিত্র। নোয়াখালি।
১৯। ঘরে নেই খাবার পানি। তাই টিউবওয়েল থেকে পানি আনতে যাওয়া। কিন্তু টিউবওয়েল লোনা পানিতে ডুবে আছে। স্থানঃ কাটমারচর, উত্তর বেদকাশী, কয়রা।
ছবি তুলেছেনঃ ইমরান হোসাইন।
২০। পরিবারের সবাই চেষ্টা করছে শেষ সম্বলটুকু রক্ষার। স্থানঃ ২নং কয়রা, কয়রা, খুলনা । ছবিঃ এমএন সাকিব।