রুহুল আমিন বাবু, বাগেরহাট : অবৈধভাবে আওয়ামী শাসকগোষ্ঠীর একদল দুর্বৃত্ত ভয়ভীতি প্রদর্শন ও অপকৌশলের মাধ্যমে বাগেরহাট জেলার মোড়েলগঞ্জ উপজেলার ১১নং বহরবুনিয়া ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের বড় ঘের দখল করে রেখেছিল।
৫ আগস্ট শেখ হাসিনার পতনের পর দখলদাররা ঘের ফেলে রেখে পালিয়ে যায়। কয়েকদিন ধরে আওয়ামী লীগ নেতা হাসিব খান ও নাসির সরদার পূর্বের ন্যায় ঘেরটি দখল করে নেওয়ার অপচেষ্টা শুরু করেছে। যে কারণে প্রকৃত মালিকরা অনেকটা আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন।
এই অবস্থায় মোড়েলগঞ্জ উপজেলার নব্বইরশি বাসষ্ট্যান্ডের মুক্তিযোদ্ধা ভবনে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর অস্থায়ী ক্যাম্পে ক্যাপ্টেন বরাবর ১৩ আগস্ট পূর্ব বহরবুনিয়া হাওলাদারপাড়া একতা মৎস্য খামার (বড়ঘের নামে পরিচিত) রক্ষায় সহায়তার জন্য আবেদন করেন প্রকৃত মালিকরা।
ওই আবেদনে ঘেরের মালিকসহ ৬৩ জন স্বাক্ষর করেন। গণ আবেদনকারীদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছেন মো. এনছান হাওলাদার, মো. আব্দুল মালেক হাওলাদার, মো. মিজানুর রহমান, মো. মাহমুদুল হাসান, মো. মিজানুর রহমান, মো. রিয়াজুল ইসলাম প্রমুখ।
আবেদনে তারা বলেন, ব্যক্তিগত ও পৈত্রিক সম্পতিতে ২০০১ সালে সর্বপ্রথম ১০০নং বহরবুনিয়া মৌজায় হাওলাদার পাড়ায় (বড়ঘের নামে পরিচিত) মাস ঘের/ মাছ চাষ শুরু করি। মৎস ঘেরে জমির পরিমান প্রায় ১২০ একর। মৎস ঘের শুরু করার পরবর্তী বছর রাজনৈতিক পট পরিবর্তন হওয়ায় রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে আমাদের বাপ-দাদার জমির উপর মাছের ঘেরটি তৎকালীন ক্ষমতাসীন দল দখল করে নেয়। এরপর থেকে রাজনৈতিক দল পরিবর্তন হলে যে দল ক্ষমতায় থাকে সে দল ঘেরটি জোর করে ভোগ দখল করে।
প্রায় ২৩-২৪ বছর তারা ঘের পরিচালনা করার ফলে ঘেরে সর্বদা লবনাক্ত পানি ভরে রাখে। বীজতলা তৈরি করা, বীজ রোপণ করা যায় না। ফলে এ সকল জমিতে কোন ফসল /ধান উৎপাদন হয়না, সাধারন জনগণ বা জমির মালিকগন তাদের কাছে প্রায় ২ যুগ পর্যন্ত জিম্মি হয়ে আছে। জমিতে ফসল না ফলায় জমির মালিকগণ ভিক্ষুকে পরিণত হয়েছে। কথা বললে আমাদের বিভিন্ন প্রকার জান-মালের ক্ষয়ক্ষতি হামলা-মামলার শিকার হতে হয়। তাই সকল জমির মালিকগণ অত্যাচার সহ্য করে নিরব থাকছেন।
গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পদত্যাগ করার ফলে দখলদার বাহিনী পলায়ন করে। দখলমুক্ত হলে আমরা জমির মালিকগণ মাছের ঘেরটি আমরা দখলে নিই।
উল্লেখ্য, ইতিপূর্বে দখলদার বাহিনী গ্রামের সাধারণ মানুষদের ভয়ভীতি দেখিয়ে ঘেরের হাড়ির ফরমে টাকার সংখ্যা লিখে স্বাক্ষর নিয়ে যায়। এখন সেই ভুয়া কাগজ দিয়ে বিভিন্ন সন্ত্রাসী লোকদের মাধমে ভয়ভীতি দেখিয়ে পুনরায় মাছের ঘেরটি দখল করতে চায়। তাতে আমরা জমির মালিকগণ নিরাপত্তা হীনতায় ভুগছি। জমির স্থানীয় প্রকৃত জমির মালিকগণ নির্বিঘ্নে মৎস্য ঘেরটি পরিচালনাসহ ধানচাষ করতে পারেন তার জন্য প্রশাসনিক সহযোগিতা কামনা করেছেন তারা।