
কাজল দাস, রায়গঞ্জ: সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জে স্কুলব্যাগ নয়, শিশু খাদিজার কাঁধে সংসারের বোঝা শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হওয়ার পর এতিম শিশু খাদিজার পরিবার পেলো খাদ্য সামগ্রী, পোশাক ও নগদ অর্থ সহায়তা।
সোমবার ( ১০ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১১:৩০ ঘটিকায় রায়গঞ্জ পৌর সভার ক্ষুদ্র বাশুড়িয়া এলাকার এতিম মেয়ে খাদিজার পরিবারকে মানবিক কর্মী মামুন বিশ্বাসের মাধ্যমে পোশাক, খাদ্য সামগ্রী ও নগদ ২৫ হাজার অর্থ সহায়তা প্রদান করেন।
শিশু খাদিজা পৌর এলাকার মৃত আব্দুল খালেকের বড় মেয়ে ৩য় শেণির শিক্ষার্থী। চার বছর পূর্বে মারা গেছেন মেয়েটির বাবা। বিধবা মা লাকি বেগম (৩৫) ও ছোট বোনকে নিয়ে নিদারুণ কষ্টে খেয়ে না খেয়ে চলছিল তাদের সংগ্রামী জীবন। ছোট্র মেয়ে খাদিজা পড়াশোনার পাশাপাশি জরাজীর্ণ পলিথিনে ঘেরা একটি দোকানে ৪০০টাকার মাল বিক্রি করত।
অসহায় খাদিজা ও তার পরিবারের কষ্টের কথা জানিয়ে স্বেচ্ছাসেবী মানবিক কাজল দাস সিরাজগঞ্জের বিশিষ্ট মানবিক কর্মী মামুন বিশ্বাস কে অবগত করেন। সংবাদ ও ফেসবুক পোষ্ট দেখে, পরিবারটিকে সহায়তা করার জন্য এগিয়ে আসেন সিরাজগঞ্জের মানবিক কর্মী মামুন বিশ্বাস।
মামুন বিশ্বাস বলেন, ‘আমি খাদিজার পরিবারের কষ্টের কথা জানিয়ে একটি পোষ্ট করি। আমার সেই পোষ্ট দেখে, দেশ ও বিদেশ থেকে ৮২’হাজার ৫০০টাকার ব্যবস্থা হয়। সেই ৮২ হাজার টাকা দিয়ে পরিবারটিকে সাবলম্বী করার লক্ষ্যে একটি সেলাই মেশিন, ৫টি ছাগল, খাদ্য সামগ্রী, নতুন পোশাক তুলে দেওয়া হয়। অবশিষ্ট ২৫’হাজার টাকা খাদিজার মার হাতে প্রদান করেন তিনি।
এছাড়াও এতিম শিশু খাদিজা ও তার ছোট বোন সাদিয়ার পড়াশোনার খরচ বহন করার জন্য প্রতি মাসে নেদারল্যান্ড প্রবাসী একজন আপুর পক্ষ থেকে প্রতি মাসে ২,৫০০ টাকার ব্যবস্থা করেন স্বেচ্ছাসেবী মামুন বিশ্বাস।’
খাদিজার মা লাকী বেগম বলেন, ‘স্বামী মারার পর মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে। দুইটি কন্যা সন্তান নিয়ে কী করব, ভেবে পাচ্ছিলাম না। স্বামী সাথে নিজেও মরে যাওয়ার ইচ্ছা পোষন করি। পরে সন্তানদের ভবিষতের কথা চিন্তা করে সুতা বুনানো ও মানুষের বাড়ি কাজ করে কোনোমতে খেয়ে না খেয়ে দিন অতিবাহিত করতাম। আমার মেয়েকে আর দোকান চালাতে হবেনা। আপনারা আমার মেয়ের পড়াশোনার দায়িত্ব নিয়েছেন। প্রতি মাসে সংসার ও পড়াশোনার খরচ বহন করার জন্য ২৫০০টাকার ব্যবস্থা করেছেন।
সেলাই মেশিন, ৫টি ছাগল, খাদ্য সামগ্রী, মেয়েদের স্কুল ড্রেস, নতুন পোশাক, নগদ টাকা পেয়ে আমি খুব খুশি।যারা আমার পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছে তাদের জন্য দোয়া করি। আল্লাহ যেন তাদের ভালো করে।’