
মো. রমিজ আলী, সীতাকুণ্ড (চট্টগ্রাম): নৌপরিবহন উপদেষ্টা এম সাখাওয়াত হোসেন বলেছেন, মাত্র ১৬টি জাহাজভাঙা কারখানা গ্রিন সার্টিফিকেট (সনদ) নিয়েছে। বাকিগুলো এখনো নেয়নি। আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে যেসব জাহাজভাঙা কারখানা ম্যানুয়াল থেকে গ্রিন শিপইয়ার্ডে উন্নীত হবে না, সেগুলো বন্ধ করে দিতে হবে।
শনিবার দুপুর সোয়া ১২টার দিকে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের একটি জাহাজভাঙা কারখানা পরিদর্শনে এসে তিনি এ মন্তব্য করেন।
উপদেষ্টা সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘শিপব্রেকিং ইয়ার্ড যেভাবে চলে এসেছে, সেখান থেকে অনেক দূর এগিয়েছে। তবে দেখতে হবে কতগুলো কারখানা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে টিকে থাকার মতো রয়েছে। কারখানায় কী কী সমস্যা রয়েছে, সেটি নির্ধারণের জন্য মন্ত্রণালয় থেকে কমিটি করা হয়েছিল। ওই কমিটি প্রতিবেদন দিয়েছে। কারখানার খাতের সঙ্গে জড়িত শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গেও আমরা বৈঠক করব।’
উপদেষ্টা বলেন, ‘যখন সীতাকুণ্ডের মতো ছোট্ট একটি জায়গায় ১১৩টি শিপব্রেকিং ইয়ার্ড (জাহাজভাঙা কারখানা) হয়, তখন বিপদসংকুল হয়। এসব জাহাজভাঙা কারখানার কোনো জায়গায় স্থানান্তর করা যায় কি না, দেখতে হবে। ছোট ও মাঝারি সাইজের জাহাজ এসব কারখানায় আনা গেলেও বড় জাহাজ এখানে আনা যাবে না। এত দিন বিষয়টাতে নজর দেওয়া হয়নি। এখন নজর দেওয়ার বিষয়টি রয়েছে।’
জাহাজ আমদানিতে অতিরিক্ত ভ্যাট লাগবে এমন এক প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন,‘এনবিআরের চেয়ারম্যানের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা হয়েছে। নভেম্বরে এনবিআরের সঙ্গে একটি বৈঠক রয়েছে। সেখানে শিপব্রেকিং ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিনিধিদের আমন্ত্রণ করব। তারা সেখানে তাঁদের প্রস্তাব উত্থাপন করবেন। আমার যতটুকু সম্ভব সহযোগিতা করব।’
বেলা একটার দিকে নৌপরিবহন উপদেষ্টা কবির শিপ রিসাইক্লিং ফ্যাসিলিটিস নামে একটি জাহাজভাঙা কারখানা ঘুরে দেখেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন সীতাকুণ্ড উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ফখরুল ইসলাম, সীতাকুণ্ড সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার লাবিব আবদুল্লাহ, সীতাকুণ্ড মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মজিবুর রহমান, শিপ রিসাইক্লিং বোর্ডের ভারপ্রাপ্ত সচিব মো. নাজমুল, কারখানাটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ করিম উদ্দিন প্রমুখ।
কারখানা পরিদর্শনে শেষে ভারপ্রাপ্ত সচিব মো. নাজমুল বলেন, ‘কারখানাকে আবার লাল শ্রেণিভুক্ত করা হয়েছে। এ কারণে এখন আমাদের পদে পদে বাধা পেতে হয়। ব্যাংক থেকে সহজ ঋণ পেতে অসুবিধা হচ্ছে। ফলে দুই–তৃতীয়াংশ জাহাজভাঙা কারখানা গ্রিন করা যাচ্ছে না। পরিবেশের ছাড়পত্র পেতেই দুই মাসের মতো সময় লাগছে। অথচ একটি জাহাজ কাটার আগেই বিশাল অঙ্কের সুদ গুনতে হচ্ছে। এ ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকলে উদ্যোক্তারা গ্রিন শিপইয়ার্ড শিল্প থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে।’