
মনিরুল ইসলাম ডাবলু, নাটোর: নাটোরের নলডাঙ্গা উপজেলার খাজুরা দ্বি-মুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের এডহক কমিটি গঠন করায় সোমবার দুপুরে প্রধান শিক্ষককে বের করে দিয়ে কক্ষে নতুন একটি তালা লাগিয়ে দিয়েছে নিয়মিত কমিটির সভাপতি।
এসময় বিদ্যালয়ের রেজুলেশন বইসহ বিভিন্ন কাগজপত্র ছিনিয়ে নিয়ে যায় তারা।
এ ঘটনায় প্রধান শিক্ষক জাহাঙ্গির আলম থানায় লিখিত অভিযোগ দিলে বিকেলেই সেনা বাহিনীর সদস্যরা অভিযান চালিয়ে অভিযুক্ত বিদ্যালয়ের নিয়মিত কমিটির সভাপতি একই গ্রামের বাসিন্দা হযরত আলী, অভিভাবক সদস্য মোঃ রুস্তম আলী, রহিদুল ইসলাম ও মিজানুর রহমানকে খাজুরা থেকে আটক করে।
প্রত্যক্ষদর্শী, পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের ৫ আগস্টের পর সারা দেশের মতো এই বিদ্যালয়েও ছয় মাসের জন্য এডহক কমিটি গঠন করা হয়। পরবর্তিতে সরকার পূনার্ঙ্গ কমিটি গঠনের ঘোষণা দিলে নির্বাচনের মাধ্যমে ৫ডিসেম্বর নিয়মিত কমিটি গঠন করা হয়। গত ২৭ এপ্রিল সরকার আবারো মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের পূনার্ঙ্গ কমিটি বিলুপ্ত করে এডহক কমিটি গঠনের ঘোষণা দেয়। শিক্ষামন্ত্রণালয় ও রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের নির্দেশনা অনুযায়ী প্রধান শিক্ষক জাহাঙ্গীর হোসেন এডহক কমিটি গঠনের কার্যক্রম শুরু করেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে আগের কমিটির সভাপতি হযরত আলী, অভিভাবক সদস্য মো. রুস্তম আলী, রহিদুল ইসলাম, জিয়াউর রহমান, অহিদুর রহমান ও মিজানুর রহমান এবং জনৈক মাহমুদুর রহমান সোমবার দুপুরে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের কক্ষে গিয়ে জোর করে আলমারি খুলে বিদ্যালয়ের রেজুলেশন বই, নোটিশ বই ও বিদ্যালয়ে রাইটিং প্যাডসহ বিভিন্ন কাগজপত্র ছিনিয়ে নিয়ে প্রধান শিক্ষকের কক্ষে নতুন একটি তালা লাগিয়ে দিয়ে চলে যায়।
তাৎক্ষনিক প্রধান শিক্ষক বিষয়টি নলডাঙ্গা উপজেলা নিবার্হী অফিসার, শিক্ষা অফিসার ও থানা পুলিশকে জানান। পরে খবর পেয়ে বিকেলেই সেনা সদস্যরা অভিযান চালিয়ে অভিযুক্ত আগের কমিটির সভাপতিসহ চার সদস্যকে আটক করেছে।
আটককৃততের জিজ্ঞাসাবাদ শেষে নলডাঙ্গা থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হবে বলে জানা গেছে। বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক জাহাঙ্গীর হোসেন এসব ঘটনায় অভিযুক্ত ছয়জনের বিরুদ্ধে নলডাঙ্গা থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন।
সরকার কমিটি ভেঙ্গে দেয়ার পর থেকে তাই বিদ্যালয়ের সভাপতি ও সদস্য হওয়া নিয়ে স্থানীয় বিএনপির ২/৩ ভাগে বিভক্ত নেতাকর্মীদের দ্বন্দ্বের জের ধরে এ ঘটনা ঘটেছে বলে স্থানীয়রা নিশ্চিত করেছেন।
নলডাঙ্গা থানার ওসি রফিকুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তবে সেনা সদস্যদের হাতে আটক চারজন সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা পর্যন্ত থানায় হস্তান্তর হয়নি বলে জানান।