
কালকিনি (মাদারীপুর) প্রতিনিধি: মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলার সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও সাবেক উপজেলা আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক মীর গোলাম ফারুকের বিরুদ্ধে ব্যবসায়ীর জমি দখলের চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে।
জোরপূর্বক জমি দখলের উদ্দেশ্যে রোববার রাতে সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যানের লোকজন ভুক্তভোগীর নির্মিত সীমানা প্রাচীর ভাংচুর ও তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা ও লুটপাট চালায় বলে অভিযোগ পাওয়া যায়।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী ঐ ব্যবসায়ী সোমবার কালকিনি থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। পাশাপাশি সাবেক আ.লীগ নেতা ও উপজেলা চেয়ারম্যানের শাস্তির দাবিতে এলাকাবাসী রাতে সাংবাদিক সম্মেলন ও মানববন্ধন করেছে।
সংবাদ সম্মেলন ও অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, কালকিনি উপজেলার পশ্চিম মিনাজদী গ্রামের ফল ব্যবসায়ী মহিউদ্দিন হাওলাদার ২০১৬ সালে গোপালপুর এলাকার মো. হাবিবুর রহমানের নিকট হতে কালকিনির ৪২ নং মজিদবাড়ী মৌজার এস.এ ৬৪ নং ও বিআরএস ১৪২ নং খতিয়ানের এস.এ ১৫৭ নং বিআরএস ১৭৮ নং দাগে ৬ শতাংশ জমি ক্রয় করে ভোগ দখল করে আসছিলেন।
তবে এর আগে ২০১৫ সালে উক্ত জমির নিয়ে মূল মালিকের সাথে সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মীর গোলাম ফারুকের দ্বন্দ্বের সৃষ্টি হলে তারা উভয়ে সমঝোতা করে নোটারী পাবলিকের মাধ্যমে একটি আপোষ বন্টন নামা করেন।সেখানে মীর ফারুক ঐ জমির উপরে তার আর কোন দাবী নাই উল্লেখ করলেও পরবর্তীতে মহিউদ্দিন হাওলাদার জমিটি ক্রয় করলে তার কাছ থেকে বিভিন্ন সময় নানাভাবে উক্ত জমি জোরপূর্ক দখলের চেষ্টা করে আসছিলেন।
এরই জের ধরে রবিবার রাতে সাবেক চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে প্রায় ৪০-৫০ জন ঐ ভুক্তভোগীর নির্মিত সীমানা প্রাচীর ভেঙ্গে ফেলে।এসময় তারা মহিউদ্দিনের ফলের আড়তে হামলা চালিয়ে কর্মচারীদের তিনটি মোবাইল ও আলমারী ভেঙ্গে নগদ ৫ লাখ টাকা লুট করে নিয়ে যায়। পরবর্তীতে ৯৯৯ এ কল দিলে কালকিনি থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়।
এ বিষয়ে সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা মীর গোলাম ফারুক, তার ভাই মীর সরোয়ার আলম, ছেলে আসহাবিল ইয়ামিন দীপ্ত ও ভাতিজা আজিজুল শরীফের নাম উল্লেখ করে ভুক্তভোগী ঐ ব্যবসায়ী কালকিনি থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী মহিউদ্দিন বলেন, আমার জমি দখলের জন্য দীর্ঘদিন যাবৎ মীর গোলাম ফারুক নানাভাবে আমাকে হুমকি দিয়ে আসছিলেন। তিনি মূলত এতদিন উপজেলা চেয়ারম্যান থাকায় তার বিরুদ্ধে কেউ মুখ খোলার সাহস পায়নি। তবে ক্ষমতা না থাকার পরও তিনি সহ তার লোকজন রোববার আমার সীমানা প্রাচীর ভেঙ্গে ফেলে এবং আমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে লুটপাট চালায়।আমি এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই।
এ বিষয়ে সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মীর গোলাম ফারুক মুঠোফোনে জানান, মহিউদ্দিন ১২ শতাংশ জমির মালিক।সে অন্যদিক দিয়ে জমি নিয়েছে।এখন অতিরিক্ত এ জমিটি দখলের চেষ্টা করতেছে। আমার সাথে মিমাংসা হয়েছে হাবিবুর রহমান নামে এক জনের সাথে। বাকি যা অভিযোগ তারা করেছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা। উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য মহিউদ্দিন এসব করাচ্ছে।
এ ব্যাপারে কালকিনি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) মুহাম্মদ হুমায়ূন কবীর জানান, উক্ত ঘটনার বিষয়ে সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।